,

হবিগঞ্জ শহরের শিল্পী শিল্পালয় থেকে স্বর্ণ কারিগরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

আব্দুল হামিদ ॥ হবিগঞ্জ শহরের পুরাতন হাসপাতাল সড়ক এলাকার শিল্পী শিল্পালয় থেকে মনোরঞ্জন সরকার (৩০) নামে এক স্বর্ণ কারিগরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ছোট ভাই সুরঞ্জন সরকার (২৫) কে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। মৃতের মা-বাবা লাশ না নেয়ায় মনোরঞ্জনের অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী অমৃত মল্লিক লাশ নিয়ে দাহ করেন। পুলিশ স্থানীয় ও মনোরঞ্জনের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই দোকানের মালিক পইল গ্রামের পানেশ বণিকের জুয়েলারী প্রতিষ্ঠানে মনোরঞ্জন দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছিল। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গহনা ডেলিভারীর জন্য বুধবার রাতে কাজ করার জন্য দোকানে থেকে যায়। মালিক পানেশ তাকে চাবি দিয়ে বাড়িতে চলে যান। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় পানেশ দোকানে এসে বন্ধ দেখতে পান। তখন মনোরঞ্জনকে ডাকতে শুরু করেন। কিন্তু কোন সাড়া শব্দ না পাওয়ায় স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে পুনরায় ডাকাডাকি করেন। এরপরও কোন শব্দ না পাওয়ায় ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দকে খবর দেয়া হয়। তারা ঘটনাস্থলে আসলে বিষয়টির সন্দেহের সৃষ্টি হলে সদর থানা পুলিশে খবর দিলে এসআই কৃষ্ণ মোহন দেবনাথের নেতৃত্বে একদল পুলিশ দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে ঘরে ফ্যানের সাথে মনোরঞ্জনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। এসময় ওই দোকানে শত শত মানুষ জড়ো হয়। দুই পাশের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ লাশ নামিয়ে সুরতহাল তৈরি করার সময় লাশের হাত ও পকেট থেকে ২টি চিঠি উদ্ধার করেন এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। পুলিশ জানায়, একটি চিঠিতে লেখা ছিল ‘মালিকের কাছে আমার কোন পাওনা নাই এবং মালিকের সম্পূর্ণ গহনা ঠিকঠাক রয়েছে, দোকানের সিন্ধুকে রয়েছে। হাতে থাকা চিঠিতে লেখা ছিল আমার মৃত্যুর পর স্ত্রী ও অনাগত সন্তানকে আমার পরিবার ভরণ পোষণ করিবে এবং আমার ভাগের সম্পত্তি তাদেরকে বুঝিয়ে দেবে। ভাইদের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এদিকে ঘটনার পর মনোরঞ্জনের ভাই স্বর্ণ কারিগর সুরঞ্জন থানায় আসলে আটক করে পুলিশ। মনোরঞ্জনসহ তারা ৪ ভাই ও দুই বোন। অন্য দুই ভাই সুব্রত শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের ছাত্র, অপর ভাই সমীরণ সরকার একই এলাকায় ব্যবসা করে। এদিকে মনোরঞ্জনের অন্তস্বত্তা স্ত্রী অমৃত মল্লিক জানায় পরিবারের সম্মতিক্রমে তাদের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর তাদের পরিবারের সাথে মনোমালিণ্য থাকায় চিরাকান্দি এলাকায় বাসা ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রী বসবাস করছিল। পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে মৃত মনোরঞ্জনের পিতা মোহন সরকার ও মা যশেদা রাণী সরকারকে খবর দিলে তারা এসে লাশ নিতে অনিহা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে পুলিশ বিপাকে পড়ে। অনেক নাটকের পর মনোরঞ্জনের স্ত্রীর জিম্মায় লাশ হস্তান্তর করা হয়। এব্যাপারে সদর থানার ওসি মোঃ নাজিম উদ্দিন জানান, দুটি চিঠি উদ্ধার করা হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার ভাইকে আটক করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ছাড়া এ মুর্হুতে কিছু বলা যাচ্ছে না। এসআই কৃষ্ণ মোহন জানান ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্ত্রীর জিম্মায় দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর