,

আজ ভয়াল ২৯ শে নভেম্বর চুনারুঘাটের ৩১ মুক্তিযোদ্ধাকে গুলি করে হত্যা করে পাক বাহিনী

এম.এ আউয়াল, চুনারুঘাট থেকে ॥ আজ ভয়াল ২৯শে নভেম্ভর। ৭১’র এদিনে চুনারুঘাট উপজেলায় পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত হয় ৩১ মুক্তিযোদ্ধা। আহত হয়েছিল শতাধিক। তাদের পরিবারের অনেকেই এখনও এই চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন। তখন ছিল বৈশাখ মাস। ১৩৭৮বাংলার ১৮ই বৈশাখ সকাল ১০টার দিকে চুনারুঘাট উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রামে হানাদেয় পাক হানাদার বাহিনী। বাড়ির কর্তা গোলক দেবনাথ সহ অনেকেই ছিল মাছ ধরায় ব্যাস্থ। পাক সেনারা হুংকার ছারে এই ধর কোন্ কোন্ হ্যায়- চল তুম লোগোকো মোকাম লে চলতে। তারা কাউকে অস্ত্র (২য় পৃষ্ঠায় দেখুন) দিয়ে আঘাত করে কাউকে অকত্য গালিগালাজ করে। পাক হানাদার বাহিনী এই বাড়ি থেকে ৯জনকে ধরে নিয়ে যায়। যাদেরকে ধরে নেয়া হয়েছিল তারা হলো বাড়ির কর্তা গোলক দেবনাথ, তার ৩ পুত্র শ্যাম সুন্দর দেবনাথ, প্রফুল্ল দেবনাথ ও গোপেন্দ্র দেবনাথ, তার কাকাত ভাই রামচরন দেবনাথ ও রাজেন্দ্র দেবনাথ, ভাতিজা মাখন দেবনাথ এবং নিকটতম আত্মীয় ঠাকুরধন দেবনাথ ও সুরেশ দেবনাথ। তাদেরকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর ক’দিন খোজ পাওয়া যায়নি। পরে সায়েস্তাগঞ্জের অদূরে হাদীপুরের কাছে একটি গর্তে ৯জনের লাশ পাওয়া যায়।ধারনা করা হয়েছিল ওই ৯জনকে পাক হানাদার বাহিনী নিদারুন অত্যাচারের পর গুলি করে হত্যা করছিল। একই দিন রানীগাঁও ইউনিয়নের কালেঙ্গা পাহাড়ি এলাকা থেকে মুক্তিবাহিনীর হাতে ২২জন পাক হানাদার বাহিনীর সদস্য নিহত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয় পাক হানাদার বাহিনী। তারা কালেঙ্গা এলাকার আব্দুল মান্নানকে ধরে নিয়ে গাছের সাথে বেধে গুলি করে হত্যা করে। এরপরই তারা শানখলা ইউনিয়নের লালচাঁন্দ চা বাগানে হামলা চালিয়ে ১১জনকে হত্যা করে। এখানে নিহত হয় লালুসাধু, দিপক বাউরি রাজকুমার গোয়ালা, অনু মিয়া, সুশীল বাউরি, মহদেব বাউরি, লেবু বাউরি, রাজেন্দ্র রায়, ও গৌর রায়, তাদেরকে ও শায়েস্তাগঞ্জ দেউন্দি সড়কের পাশে শ্মশানে নিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। স্বজন হারানোর সেই দুঃখসহ স্মৃতি আজও জগদ্দল পাথর হয়ে চেপে আছে সুশীলা রাণী দেবনাথও প্রজময়ী দেবনাথের বুকে। কি করে ভুলবেন তারা সেইদিনের কথা। যেদিন বিভিষীকাময় এক ঝড় তাদের সাজানো গুছানো সংসারকে নিমিয়ে তছনছ করে দিয়েছিল। গতকাল তাদের পরিবারের সাথে কথা বললে স্বপন দেবনাথ জানান স্বাধীনতার ৪৪বছর কাটলেও তাদের পরিবারের লোক জন সরকার থেকে বড় কোনো একটা অনুদান অথবা মুক্তিযোদ্ধার সংবর্ধনা বিজয় দিবস কিংবা স্বাধীনতা দিবসে সরকারি বিশেষ দিবস গুলিতে উপজেলা পর্যায়ে তাদের পরিবারের লোকজনকে দাওয়াত ও বা মূল্যায়ন দেওয়া হচ্ছে না। চুনারুঘাট মাধবপুর সংসদ সদস্য জনাব এ্যাডঃ মাহবুব আলী এমপির দৃষ্টি আকর্ষন করে শায়েস্তাগঞ্জের হাদীপুরে তাদের পরিবারের লোকজনের গণকবরকে স্মৃতিসৌধ নির্মান উপজেলা পর্যায়ে মূল্যায়ন করার দাবি জানান।


     এই বিভাগের আরো খবর