,

নবীগঞ্জে তালাবদ্ধ ঘরে রহস্যজনক অগ্নিকান্ড ॥ ভস্মিভূত দেহ উদ্ধার ॥ আটক ৩, খুলেনি রহস্যের জট !

মতিউর রহমান মুন্না ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে একটি তালাবদ্ধ বসত ঘর থেকে আগুনে পুড়া অজ্ঞাতনামা দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। বসত ঘরে অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর থেকে পাশের বাড়ির গীতা রাণী দাশ নামের মানষিক ভারসাম্যহীন এক গৃহবধূকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয়দের ধারনা মৃত দেহটি গীতা রাণী দাশের হতে পারে। গতকাল রবিবার দুপুর ১ টার দিকে মৃত দেহটি উদ্ধার করে হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন- গীতা রাণী দাশের স্বামী লিটন দাশ, শ্বশুর বিমল দাশ, শাশুড়ী জবা রাণী দাশ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের বিমল দাশের পুত্র লিটন দাশের সাথে প্রায় ৩ বছর পূর্বে পার্শ্ববতী বানিয়াচং উপজেলার ঝিলোয়া গ্রামের প্রেমানন্দ চৌধুরীর কন্যা গীতা রাণী দাশের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক দিন পরই লিটন জানতে পারে তার বিবাহিত স্ত্রী মানষিকভাবে ভারসাম্যহীন। এ বিষয় নিয়ে উভয় পরিবারের লোকদের মধ্যে একাধিকবার শালিশ বৈঠক হয়। এভাবেই কেটে যায় ২বছর, এরপর তাদের ওরসে জন্ম নেয় একটি কন্যা সন্তানের। সেই শিশুর নাম রাখা হয় শ্রাবন্তী দাশ। মানষিক ভারসাম্যহীন স্ত্রীকে নিয়ে রীতিমত পরিবার না চলায় প্রায় এক বছর পূর্বে লিটন দাশ মৌলভীবাজার এলাকায় আরেকটি বিয়ে করেন। এরপর থেকেই মানষিক ভারসাম্যহীন স্ত্রী গীতা রাণী দাশ থাকতো বাড়ির সামনের একটি বাংলো ঘরে। গত শনিবার রাত প্রায় ৩টার দিকে হঠাৎ স্থানীয় লোকজন দেখতে পান লিটন দাশের পার্শবর্তী ইরেশ দেবনাথের তালাবদ্ধ ঘরে আগুন লেগেছে। লোকজন ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনার পূর্বেই সব কিছু পুড়ে ভস্মিভূত হয়ে যায়। তবে এসময় ইরেশ দেবনাথের বসত ঘরে কেউ ছিলনা। হঠাৎ করে কিভাবে কোন সূত্র ছাড়াই অগুন লাগলো এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়। এর পরে যে যার ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। পরের দিন সকালে অর্থাৎ গতকাল রবিবার সকাল ১০ টার দিকে মানষিক ভারসাম্যহীন গৃহবধু গীতা রাণী দাশ নিখোঁজ রয়েছে। এর কিছুক্ষন পর আগুনে পুড়া ঘরে দখা যায় মৃহ দেহের মতো কিছু একটা পরে আছে। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দিলে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল বাতেন খাঁনের নেতৃত্বে এসআই নজরুল ইসলাম সহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত দেহটি উদ্ধার করেন। তবে মৃত দেহটি সম্পূর্ন পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ায় পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি। এদিকে মানষিক ভারসাম্যহীন গৃহবধু গীতা রাণী দাশ নিঁেখাজ হওয়ায় স্থানীয় লোকজন ধারনা করছেন উদ্ধারকৃত আগুনে পুড়া মৃত দেহটি তারই। এঘটনায় সহন্দেহজনক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গীতা রাণী দাশের স্বামী লিটন দাশ, শ্বশুর বিমল দাশ, শাশুড়ী জবা রাণী দাশকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম। এব্যাপারে এসআই নজরুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ছাড়া এ মুর্হুতে কিছু বলা যাচ্ছে না। এদিকে লিটন দাশের ২য় স্ত্রী পলাতক থাকায় সন্দেহের তীর আরো ঘনীভূত হচ্ছে।


     এই বিভাগের আরো খবর