,

সমস্যার আরেক নাম হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল

আব্দুল হামিদ ॥ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে মান্ধাতা আমলের জরাজীর্ণ যন্ত্রপাতি দিয়ে চলছে রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ। রয়েছে পেট্রোলচালিত একটিমাত্র অ্যাম্বুলেন্স। সেটিও লক্কড়-ঝক্কড় হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় মালি, সুইপার, আয়া থাকলেও পরিচ্ছন্নতায় রয়েছে চরম গাফিলতি। শিশু ওয়ার্ড ছাড়া অন্য ওয়ার্ডে অক্সিজেনের সিলিন্ডার বিকল হয়ে আছে দীর্ঘদিন। এছাড়া সিট সমস্যা তো আছেই। রোগীর চাপে মেঝেতে রেখেও চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ফলে জেলার চিকিৎসা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত হবিগঞ্জ জেলার একমাত্র উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্র এ হাসপাতাল। এখানে রোগীর সিট রয়েছে মাত্র ১০০টি। অথচ এ হাসপাতালে প্রতিদিন রোগী ভর্তি হয় কয়েকশ। প্রায় সময়ই মেঝেতে রেখে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হয়। এতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে। হাসপাতালটিতে রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে যেসব যন্ত্রপাতি রয়েছে তার সবগুলোই মান্ধাতা আমলের এনালগ সিস্টেমের। ডিজিটাল যুগে এসব যন্ত্রপাতি দিয়েই কোনো রকমে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কার্যক্রম চালাতে হয়। এসব যন্ত্রপাতি দিয়ে এখন অনেক পরীক্ষারই রিপোর্ট ঠিকমতো দেয়া সম্ভব হয় না। গত ৬ মাস ধরেই কখনও বিকল, আবার কখনও সচল অবস্থায় পড়ে আছে ৩টির এক্সরে মেশিন। কয়েক বছর ধরেই ঠিকমতো কাজ করছে না আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনটিও। মেশিনগুলো বিকল থাকার কারণে রোগীরা সদর হাসপাতাল থেকে ভালো মানের চিকিৎসা নিতে পারছেন না। ফলে দিন দিন বাড়ছে মানুষের বিড়ম্বনা। শুধু তাই নয়, যে হাসপাতালটিতে প্রতিদিন কয়েকশ রোগী থাকে সেখানে তাদের সেবা দেয়ার জন্য রয়েছে মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স। সেটিও অনেক পুরনো। চলে পেট্রোলে। এতে খরচও পড়ে অনেক বেশি। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই মানুষ প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করছেন। এ জন্য হাসপাতালে রয়েছে দালালদেরও আনাগোনা। তারা কৌশলে মানুষকে এসব প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স নিতে উৎসাহিত করে। এমনকি রোগীদের হাসপাতালে ভর্তিসহ চিকিৎসায়ও নানা প্রতারণার আশ্রয় নেয়। অনেকে গ্রামগঞ্জ থেকে আসা রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে অর্থকড়ি হাতিয়ে পালিয়ে যায়। এতে প্রতিনিয়তই অসংখ্য মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এদিকে ১৫০ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিনই রোগী থাকে কয়েকশ। সিট সংকটের কারণে অধিকাংশ রোগীকে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দিতে হয়। এতে রীতিমতো হিমশিম খায় কর্তৃপক্ষ। অনেক সময় রোগী বা তাদের স্বজনদের ধমকও খেতে হয়। রোগীদের অভিযোগ, ডাক্তাররা ঠিকমতো রোগীদের দেখতে যান না। দিনে দুয়েকবার গেলেও হাঁটা-চলায় রোগী দেখে চলে যান। কখনও আবার সারা দিনে একবারও কেউ কেউ ডাক্তারের দেখা পান না। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওয়ার্ডগুলোতে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিকল হয়ে পড়ে আছে। এছাড়া ময়লা আর্বজনা স্তুপে পরিণত হয়েছে। রোগীরা অভিযোগ করেন গত কয়েকদিন ধরে ময়লা আর্বজনা পরিস্কার না করায় দুগর্ন্ধ ছড়াচ্ছে। এব্যাপারে তত্ত্বাধধায়ক ডাঃ নজীবুশ শহীদ জানান, বারবার কর্তৃপক্ষকে বলার পরও এব্যাপারে কোন প্রতিকার নেয়া হচ্ছে না।


     এই বিভাগের আরো খবর