,

প্রধান শিক্ষক ঘুমিয়ে আর শিক্ষিকারা ব্যস্ত গল্পগুজবে ! চুনারুঘাটের শেখের গাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের রেষ্ট হাউজ : চলছে আনলিমিটেড খেলার ক্লাস

চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ চুনারুঘাট উপজেলার শেখের গাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় যেন শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের রেস্ট হাউজে পরিণত হয়েছে। কেউ আসেন ঘুমাতে আর কেউ আসেন, পাশের বাড়ীতে বান্ধবী, খালা, মামনীর সাথে গল্পগুজব করতে। এটা এক দুই দিনের ঘটনা নয় সারা মাস, বছর ধরে চলে আসছে রুটিন মাফিক। প্রতিদিন সকাল বেলা স্কুল ঘরের দরজা খুলে দিয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের হাজিরা নিয়েই উধাও হয়ে যান শিক্ষক ও শিক্ষিকারা। সেই দুপুর বেলা একবার তাদের দেখা মিলে আর বাকী সময় তারা থাকেন পাশের বাড়ীতে আড্ডায়। স্থানীয় সুত্রে জানায়, ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউনুস মিয়া স্কুলে আসেন দুপুর ১২টায়, আর এসেই হাজিরা বহিতে হাজিরা দিয়েই ছাত্র/ছাত্রীদের কে ঝগড়া জাটি, মারামারি না করার জন্য বারান্দায় দাড়িয়ে একটি বক্তব্য দেন। তারপর তিনি অফিসে ঢুকে দরজা লাগিয়ে নিশ্চিন্ত মনে ঘুমিয়ে পড়েন। এভাবেই দীর্ঘ দিন ধরে চলছে প্রধান শিক্ষকের স্কুল পরিচালনা। বাকী যে তিনজন শিক্ষিকা রয়েছেন তাদের মধ্যে একজন নিয়ম করে স্কুল খোলার জন্য আসেন, বাকীরা কোন দিন আসেন নতুবা সহপাঠি শিক্ষিকাকে চালিয়ে যাওয়ার জন্য মোবাইল ফোনে বলে দেন। স্কুলে না আসলেও তাদের হাজিরা খাতায় হাজিরা উঠছে ঠিক ঠাক। যে দুই একজন আসেন তারা স্কুলের পার্শ্ববর্তী বাড়ী গুলোতে তাদের বান্ধবী, খালা, মাসি ও মামানীর মত আত্মীয় রয়েছে তাদের বাড়ীতে গিয়ে গল্পগুজবে মাতিয়ে তুলেন। তরকারি বানিয়ে দেন আরো কত কি। আর ছাত্র/ছাত্রীরা কেউ বাড়ীতে চলে যায়, কেউবা আবার পাশের বাজারে দোকান গুলোতে গিয়ে আড্ডা মারে, চায়ের স্টলে বসে ভিডিও দেখে, আবার কেউ সারাদিন স্কুলের মাঠে আনলিমিটেড খেলা করতে থাকে। এব্যাপারে কারও কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। যে যার মত আসে আবার চলেও যায়। তাহেরা আক্তার নামে এক ছাত্রের অবিভাবক জানান, ওই স্কুলের শিক্ষিকা জর্ণা আক্তার, আয়েশা বেগম ও লিজা আক্তার, ছাত্র/ছাত্রীদের বাড়ী থেকে বড়ই, তেতুল, ও নানা ধরণের খাদ্যদ্রব্য নিয়ে আসার জন্য পাঠান। এতে ওই সমস্থ ছাত্র/ছাত্রীরা শিক্ষিকার জন্য বড়ই ও তেতুল আনতে প্রতিযোগিতা শুরু করে। বিষয়টি ওই এলাকার কিছু সচেতন মহলের লোক স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে মৌখিকভাবে একাধিকবার জানিয়েছেন, কিন্তু এতেও কোন ফল হয়নি। এ রকম স্কুল পরিচালনা ও শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে ওই স্কুল থেকে এ বছর স্থানীয় অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদেরকে বিভিন্ন একাডেমী ও ব্রাক স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। তারা বলেন এখানে লেখা পড়ার কোন পরিবেশ নেই। এখানে যারা পড়তে আসে তারা সবাই গরীবের সন্তান কিন্তু শিক্ষকরা ক্লাস না নেওয়ায় ওই স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে অভিভাবকরা। এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল ও অভিভাবকরা।


     এই বিভাগের আরো খবর