,

৬ ধাপে নির্বাচন : ২২ মার্চ ইউপি নির্বাচন শুরু

সময় ডেস্ক ॥ এ বছর ছয় ধাপে সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ৭৫২টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ২২ মার্চ। এর পর ৩১ মার্চ ৭১০টি, ২৩ এপ্রিল ৭১১টি, ৭ মে ৭২৮টি, ২৮ মে ৭১৪টি এবং ৪ জুন ৬৬০টি ইউপিতে ভোট হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ইউপি নির্বাচনের এসব তারিখ চূড়ান্ত করে স্থানীয় রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বিস্তারিত তফসিল ঘোষণার দায়িত্ব দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ইসি সচিবালয়ে সিইসির নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, জাবেদ আলী এবং ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলামও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসি শাহ নেওয়াজ। এইএসসি পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে পরীক্ষার ফাঁকে ফাঁকে এই তারিখ ঠিক করা হয়েছে। প্রথম দফার তফসিল কমিশন ঠিক করেছে। বাকিগুলো স্থানীয় পর্যায়ে ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, প্রথম দফায় ২২ মার্চের নির্বাচনে অংশ নিতে ২২ ফেব্র“য়ারির মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে। ২৩ ও ২৪ ফেব্র“য়ারি বাছাইয়ের পর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় রাখা হয়েছে ২ মার্চ। দলীয়ভাবে এবারই প্রথম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চেয়ারম্যান পদে নিবন্ধিত দলগুলো প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবে। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকছে। চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন দলীয়ভাবে হলেও সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদের ভোট হবে নির্দলীয়ভাবে। দেশের সাড়ে ৪ হাজার ইউপির মধ্যে মার্চ থেকে জুন সময়ে নির্বাচন উপযোগী রয়েছে ৪ হাজার ২৭৯টি। এর মধ্যে প্রথম পর্বে ৭৫২টি ইউনিয়ন পরিষদের তফসিল ঘোষণা করা হয় গতকাল। বাকি ইউনিয়ন পরিষদগুলোর ভোট এইচএসসি পরীক্ষার ফাঁকে ফাঁকে করার কথা রয়েছে। নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, সংশোধিত নির্বাচন বিধিমালা ও আচরণবিধি গত বুধবার গেজেট আকারে জারি করা হয়। এবার মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা ও টিআইএন নম্বর দেয়ার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি। বিধি অনুযায়ী প্রার্থীদের নির্ধারিত জামানত দিতে হবে। আচরণবিধি অনুযায়ী প্র্রতীক বরাদ্দের পরই প্র্রচার শুরু করতে পারবেন প্রার্থীরা। দশম সংসদ, উপজেলা, সিটি ও পৌর নির্বাচনের পর কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন ইসি এবার ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। দলীয়ভাবে পৌর নির্বাচন করার পর দলীয়ভাবে ইউপি নির্বাচন হচ্ছে। ইসি শাহ নেওয়াজ বলেন, আমরা সারা দেশের নির্বাচন উপযোগী ইউনিয়ন পরিষদে ৬ দফায় ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট দফার নির্বাচনের তফসিল দেয়াসহ যাবতীয় কার্যাবলি সম্পন্ন করবেন। নির্বাচন শান্তিপুর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে ইসি শাহ নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, গত পৌরসভা নির্বাচনে কিছু কিছু গাফিলতির ঘটনা ঘটেছিল, আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে আরো কঠোরভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণ করব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে বলতে চাই, কেউ গাফিলতি করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা। তিনি বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করেই নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেন তারা সুন্দরভাবেই নির্বাচন পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে। তাই কেউ গাফিলতি করলে বা কারো পক্ষে কাজ করার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবার সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভব। তবে এখন ভোটার তালিকায় ছবি রয়েছে। তাই কেউ ইচ্ছা করলেই অন্যজনের ভোট দিতে পারেন না। কেউ ব্যত্যয় করলে এবং আমাদের নজরে এলে চরম ব্যবস্থা নেব। নির্বাচনে গণমাধ্যম কার নিয়ন্ত্রণে থাকবে- প্রশাসন না ইসির এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্পষ্টভাবে বলতে চাই, গণমাধ্যম আমাদের খবর জানানোর চেষ্টা করে। তাই তারা কেন্দ্রে প্রবেশ করেই খবর দেবে। কিন্তু বেশিক্ষণ কেন্দ্রে অবস্থান করবে না। প্রসঙ্গত, এর আগে দেশে সবমিলিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়েছে ৮ বার। সর্বশেষ ২০১১ সালে ২৯ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল প্রথম দফায় প্রায় ৬০০ ইউপিতে ভোট হয়। দ্বিতীয় দফায় ৩১ মে থেকে ৫ জুলাই ৩ হাজার ৮০০ বেশি ইউপিতে নির্বাচন করা হয়।


     এই বিভাগের আরো খবর