,

বাহুবলে সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির সিলেটে মৃত্যু ॥ এটিএম নূরুল ইসলাম খেজুর

স্বাগতম…! সুস্বাগতম…!! গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নবীগঞ্জে আগমনকে নবীগঞ্জবাসী তথা হবিগঞ্জবাসী ও দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পরিবারের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি অভিনন্দন। নবীগঞ্জের মাটিতে আবি®কৃত প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস আবিষ্কার, উত্তোলন ও সবশেষে জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন আপনার সরকারের আমলে হওয়ায় নবীগঞ্জবাসী আপনাকে জানাচ্ছে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন। মনে পড়ে সেই ১৯৯৭ সালে বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার হয়েছিল আপনার সরকারের আমলেই। অক্সিডেন্টাল, ইউনোকল-এর হাতবদলের পর সব শেষ শেভরনের মাধ্যমে আপনার সরকারামলে প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদ জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালিত হচ্ছে। নবীগঞ্জবাসী এজন্য আপনাকে জানাচ্ছে শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন। আমরা স্বীকার করি বিবিয়ানায় পাওয়া খোদাতায়ালার দেয়া নিয়ামত দেশবাসী সকলের। আমরা সকলে মিলে গ্যাসের ব্যবহার করছি-করবো এটাই নিয়ম। তবে নবীগঞ্জবাসীর চাওয়া পাওয়া ওই গ্যাস ক্ষেত্রকে ঘিরে আপনার কাছে অনেক। আমরা মনে করি আমাদের হৃদয়ের চাহিদা বা দাবি আপনি অবশ্যই বুঝতে পারেন। অভিভাবকের কাছে শিশুর দাবি অনেকই থাকতে পারে এটা স্বাভাবিক। দেশের সরকার প্রধান হিসেবে নবীগঞ্জবাসীর ন্যায্য দাবি গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আপনি অবশ্যই পূরণ করবেন। নবীগঞ্জবাসী ঘরে ঘরে গ্যাসের দাবিতে দেশে-বিদেশে অবস্থানরত এখন সবাই সোচ্ছার। এ দাবির সাথে একমত পোষন করে আমরা বলবো ঘরে ঘরে সম্ভব না হলেও নবীগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণস্থান এবং অপেক্ষাকৃত জনবহুল এলাকা সমুহে গ্যাস সংযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের বিবিয়ানার গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে অল্পদিনের মধ্যে যা জাতীয় গ্রিডে সংযোজিত হবে। এখানেও আমরা বলবো ওই বিদ্যুতের সামান্য পরিমান ছিটেফোটে নবীগঞ্জবাসী যদি পান তাহলে সারা নবীগঞ্জ বিদ্যুতায়িত হতে পারে। তাছাড়া এখানকার গ্যাস কাজে লাগিয়ে আর যে যে উপায়ে গ্যাস ভিত্তিক প্রকল্প হাতে নেওয়া যায় সে ব্যবস্থা আপনার সরকার করবে এমনটা কামনা করছে নবীগঞ্জবাসী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা জানতে পেরেছি বিবিয়ানার গ্যাস দিয়ে এখানে সারকারখানাসহ বিভিন্ন শিল্প, কল-কারখানা গড়ে উঠবে। নবীগঞ্জের উত্তর-পূর্বাঞ্চল হবে একটি অর্থনৈতিক জোন। আমরা আশা করছি, আপনার সরকার দৃঢ়তার সাথে ওই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিবে অচীরেই। এতে নবীগঞ্জ তথা দেশের বেকারত্ব দূরিভূত হবে অনেকাংশে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নবীগঞ্জবাসী শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছে এখনো। এ উপজেলায় সরকারী কোন উচ্চ বিদ্যালয় বা কলেজ নেই। তাছাড়া হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় (বে-সরকারী ও কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়) এখনো জাতীয়করণ করা হয়নি। আপনার কাছে নবীগঞ্জবাসীর প্রত্যাশা নবীগঞ্জসহ হবিগঞ্জবাসীকে শিক্ষা ক্ষেত্রে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আপনার সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয়করন করবে। এছাড়া নবীগঞ্জবাসীর প্রাণের দাবী নবীগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, নবীগঞ্জ জে.কে মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, নবীগঞ্জ হিরা মিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, নাদামপুর উচ্চ বিদ্যালয়, আউশকান্দি রশিদিয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজসহ এখনো রয়ে যাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহকে স্বল্পসময়ের মধ্যে জাতীয়করণের আওতায় নিয়ে এখানে শিক্ষার আলো সম্প্রসারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, অভিভাবকের কাছে সন্তানের চাওয়ার কোন শেষ নেই। নবীগঞ্জের হাওর, বিল, জলাশয় থেকে প্রতি বছর সরকার বিপুল পরিমানের রাজস্ব আয় করে থাকে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এখানকার বিল, জলাশয়সহ নদী গুলোর কোন সংস্কার হয়না। নবীগঞ্জবাসী হাওরে পর্যটন কেদ্র স্থাপনসহ এর উন্নয়নের দাবি আপনার কাছে রাখে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কুশিয়ারা নদী আমাদের নবীগঞ্জসহ পাশ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলার জন্য অত্যন্ত বিপদজনক। বর্ষায় কুশিয়ারা প্লাবিত হয়ে যেমন পাশ্ববর্তী গ্রাম গুলোর ঘর-বাড়ির নদী বক্ষে কেড়ে নেয় তেমনি ফসলেরও করে ব্যপক ক্ষতি। প্রমত্তা কুশিয়ারা নদীতে ইতিমধ্যে অনেক ঘর-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও মসজিদ হরিয়ে গেছে। কুশিয়ারা নদীর করালগ্রাস থেকে নবীগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলা সমূহকে রক্ষা করতে হলে উভয় পাড়ের বণ্যা প্রতিরক্ষা বাঁধটি মেরামতসহ কয়েকটি স্লুইচগেট স্থাপন করা অতীব প্রয়োজন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নবীগঞ্জের যোগায়োগ ব্যবস্থায় রয়েছে নানা সমস্যা। রাস্তাগুলোর দশা অত্যন্ত করুণ। নবীগঞ্জ- বানিয়াচঙ্গ- আজমিরীগঞ্জ সড়কের মাটি ভরাট ও ব্রিজ নির্মাণ করা গেলে বৃহত্তর মযমনসিংহের সাথে সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থায় দূরত্ব ও সময় কমে যাবে। একই সাথে নবীগঞ্জ-কাদিরগঞ্জ (বানিয়াচঙ্গ) সড়কের উন্নয়ন এবং কাদিরগঞ্জ বাজারের সন্নিকটে কুশিয়ারা নদীতে একটি ব্রিজ নির্মাণ করতে পারলে সুনামগঞ্জের সাথে ঢাকার দূরত্ব প্রায় ৫০/৬০ কিলোমিটার কমে আসবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই নবীগঞ্জ ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জের উদ্বোধনকালে আপনি তৎকালিন নবীগঞ্জের কৃতি সন্তান ও আর্ন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব অর্থমন্ত্রী শহীদ শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া’র সাথে ঢাকায় বসে টেলিসংলাপে বলেছিলেন “গোপালগঞ্জ ও হবিগঞ্জের মাঝে গঞ্জে গঞ্জে মিল আছে”। ওইদিনের টেলিসংলাপ নবীগঞ্জে বসে শোনেছিলাম। নবীগঞ্জ তথা হবিগঞ্জবাসী আপনার কাছে ওই কথার সমান সুবিধা নেওয়ার অধীর আগ্রহে বসে আছেন। পরিশেষে আমাদের না বলা অনেক অব্যক্ত কথা আপনার কাছে আমানত রেখে প্রত্যাশা করবো আপনি নবীগঞ্জ তথা হবিগঞ্জবাসীর প্রানের ন্যায্য দাবিগুলোর প্রতি দয়া করে মনোনিবেশ করবেন। সেই সাথে শহীদ অর্থমন্ত্রী শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া নির্মম ও গৃন্যতম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত প্রকৃত দুষিদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টন্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে এ দাবি আপনার কাছে রইলো। আল্লাহ আপনাকে দীর্ঘায়ু দিন।
লেখক ঃ দৈনিক খবর, যুগভেরী, প্রতিদিনের বাণী’র নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ও সভাপতি- নবীগঞ্জ প্রেসক্লাব।


     এই বিভাগের আরো খবর