,

১ মাস ১৩ দিন অতিবাহিত- বাহুবলে রফিক হত্যাকান্ডের তদন্তে নেই কোন অগ্রগতি

বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়ন যুবসংহতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম (৩২) হত্যাকান্ডের এক মাস ১৩ দিন পার হলেও এ ঘটনা তদন্তে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। কারা খুনি, কীভাবে খুন করা হয়েছে, কোথায় খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছে, কী কারণে খুন করা হয়েছে, এসব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর মেলেনি এখনো। অথচ ঘটনার পর সরকারের বিভিন্ন সংস্থা তদন্তে নেমেছিল। গত সোমবার রাতে এ ব্যাপারে কথা হয় মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা বাহুবল থানার উপ পুলিশ পরির্দশক দোলোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই ঠিক না, আমি মাত্র ৩ দিন হল দায়িত্ব নিয়েছি হন্য হয়ে বাকী আসামীগুলিকে খুজতেছি বিভিন্ন জায়গায়। তাদের কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মূল তথ্যটা বেরিয়ে আসত। তদন্ত চলছে। তেমন কিছু পাওয়া গেলে অবশ্যই জানানো হবে। আর তদন্তের জন্য অনেক কিছু মাথায় নিয়ে এগোনো হচ্ছে। একটু অপেক্ষা করুন, সব কিছুই বের হয়ে আসবে। তবে ঘটনাস্থল থেকে রফিকের পরনের রক্তমাখা গেঞ্জি-লুঙ্গি ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কুড়াল উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ঐ দিনই তার বাড়ির পাশের দুজনকে আটক করে পুলিশ। এদিকে দুই বারে ৬দিনের রিমান্ডে আনলেও কোন তথ্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। থানার একটি সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার পর ওই স্থানে পড়ে থাকা রফিকের হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কুড়ালে আঙ্গুলের ফিঙ্গার পাওয়া গেছে। পুলিশ রফিকের কললিষ্টে হাশিম ও কালামের মোবাইল নম্বরের কল রেকর্ড শোনা হয়। কিন্তু কোথাও ঘটনার ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যায়নি। খুনিরা ৫ জন কিলিং মিশনে অংশ নিলেও তিন এলাকার ২ জনকে বাহির থেকে কন্ট্রাকে আনা হয়েছে বলে পুলিশকে জানায়। এর মূল নেতৃত্বে আছেন এলাকার প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ। এ ঘটনায় সোমবার রাত পর্যন্ত আর কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি। অথচ অন্য সব মামলায় প্রধান বা সন্দেহভাজন আসামিকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে তথ্য আদায় করা হয়েছে। রফিকের ক্ষেত্রে তা করা যাচ্ছে না। কারণ জানা যাচ্ছে না। নিহতের সঙ্গে পাশের বাড়ির লোকজনের রাস্তা নিয়ে বিরোধ ছিল। সোমবার বিকেলে রফিকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিনটা বাচ্চা নিয়ে বারান্দায় দাড়িয়ে আছে রফিকের স্ত্রী তাছলিমা বেগম। কিছু প্রশ্ন করতে গেলেই তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন আমি কি আমার স্বামীর হত্যাকারীর বিচার পাব না। আমি তিন অবুঝ সন্তানদের কি জবাব দিব। নিহতের বৃদ্ধ মা ছেলের শোকে পাথর হয়ে বিছানায় আধমরা হয়ে আছেন। সংসার চলছে তার ছোট ছেলে মামলার বাদী মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা মনির জানান, আমি গত রাতে জয়েন করেছি, এ বিষয় নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। যত দ্রুত সম্ভব ক্লু উদঘাটন করা হবে। এ ব্যাপারে সচেষ্ট আছি। উল্লেখ্য, গত ২৮ ফেব্র“য়ারি দিবাগত রাতে ঘড় থেকে রফিককে ডেকে নিয়ে দুর্বৃত্তরা প্রথমে কুপিয়ে কুপিয়ে চার টুকরো করে খুন করে পার্শ্ববর্তী রেললাইনে লাশ ফেলে রাখে। এর প্রতিবাদে উপজেলার মিরপুরবাসী বিভিন্ন ব্যানারে মানববন্ধন প্রতিবাদ সভা শেষ পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। নিহত রফিক বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম জয়পুর গ্রামের মরহুম আব্দুর রহমানের ছেলে।


     এই বিভাগের আরো খবর