,

আজ বাহুবলে ভোটযুদ্ধ : অস্তিত্ব সংকটে বিএনপি

শাহীন আহমেদ চৌধুরী ॥ বাহুবলে ৭টি ইউনিয়নের নির্বাচন আজ। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা চলবে ভোট গ্রহণ। ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে ভোটাররা। এবারই প্রথম ইউপি চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। তৃণমূলের সবচেয়ে বড় এই ভোটকে ঘিরে গ্রামীন জনপদে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। আছে শঙ্কাও। দলীয় আধিপত্যের এ নির্বাচনে নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় রয়েছেন ভোটাররা। তবে নির্বাচনকে সুষ্টু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে নির্বাচনী সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারা। এছাড়া বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও মাঠে রয়েছেন। নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের যান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। গতকাল বিকেলের মধ্যেই সব ভোট কেন্দ্রে ব্যালট বক্স, ব্যালট পেপার ও অমোচনীয় কালিসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বও বুঝে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার ও নিরাপত্তা কর্মীরা। বাহুবল উপজেলার মোট ৭টি ইউনিয়নে ৩৮জন চেয়ারম্যান, ৩শত ১১জন সাধারণ মেম্বার ও ৯২ জন সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার প্রার্থী রয়েছেন। বাহুবল উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থীদের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা রয়েছেন মূল প্রতিদ্বন্ধিতায়। এছাড়া একটি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টি সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। তিনটি ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থীরা কোন রকমে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঠিকে থাকলেও বিএনপি অস্তিত্ব সংকটে পড়তে পারে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। স্নানঘাট ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন ৫জন। এদের মধ্যে মুল লড়াইয়ে আছেন ফেরদৌস আলম (নৌকা), মোঃ মুদ্দত আলী এডভোকেট (ধানের শীষ), বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম (আনারস) ও সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ হরমুজ মিয়া (ঘোড়া)। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ১৩৪। পুটিজুরী ইউনিয়নে মুল প্রতিদ্বন্ধিতায় আছেন আওয়ামীলীগ প্রার্থী সামসুদ্দিন তারা মিয়া (নৌকা) ও বিএনপি’র বিদ্রোহী প্রার্থী ফরিদ উদ্দিন আখঞ্জী (চশমা)। এ ছাড়া আরও ৫জন চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ৫৮৪জন। সাতকাপন ইউনিয়নে মোঃ আয়াত আলী (নৌকা), শাহ্ আবদাল মিয়া (লাঙ্গল) ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রেজ্জাক (আনারস) এর মধ্যে লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া এ ইউনিয়নে আরও ২জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ মাসুক মিয়া ইতোমধ্যে জাপা প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন। এখানে মোট ভোট সংখ্যা ২০ হাজার ২৪২। বাহুবল ইউনিয়নে আজমল হোসেন চৌধুরী (নৌকা) ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিফজুর রহমান আবুবকর (আনারস) এর মাঝে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা আছে। এছাড়াও এ ইউনিয়নে আরও ৩জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ২১৭। লামাতাসী ইউনিয়নে ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চৌধুরী টেনু (নৌকা) ও সাবেক চেয়ারম্যান এম.এ মুসা (আনারস) এর মাঝে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে। এছাড়াও জাতীয় পার্টি মনোনীত আকম উস্তার মিয়া তালুকাদর সহ ওই ইউনিয়নে আরো ৩জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৮৮২। মিরপুর ইউনিয়নে মোঃ সাইফুদ্দিন (নৌকা), বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল (ধানের শীষ), মীর একেএম জমীলুন্নবী ফয়সল (ঘোড়া) ও মোঃ নূরুল হক আছকির (আনারস) এর মাঝে চতুর্মুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা। এছাড়া জাতীয় মনোনীত প্রার্থী ডাঃ সবুজ সহ আরও ৩ জন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ১৭ হাজার ৩৯০। ভাদেশ্বর চা-শ্রমিক অধ্যুষিত ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ২৯৭। এ ইউনিয়নে এক তৃতীয়াংশ ভোটার চা শ্রমিক। এ কারণে ইউনিয়নটিকে আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংক হিসেবে গন্য করা হয়। এ ভোট ব্যাংকে পূঁজি করে কামরুজ্জামান (নৌকা) সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন। এ হিসেবে এ ইউনিয়নে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামীলীগের সাথে জামায়াত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ বাহার (ঘোড়া) এর সাথে। এছাড়া মোঃ তাজুল ইসলাম চৌধুরী (আনারস) স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর