,

নবীগঞ্জের বাগাউড়া স্কুলের সহকারী শিক্ষক জাকারিয়ার নিবন্ধন সনদ ভূয়া : বহিস্কারের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পত্র প্রেরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার বাগাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূয়া নিবন্ধন সনদধারী শিক্ষক মোহাম্মদ জাকারিয়াকে বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বরখাস্ত করণের পত্র প্রেরণের ৩ মাসের মধ্যেও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি তা কার্যকর না করে উপরন্তু তার ৯ মাসের স্থগিত বেতন ভাতা দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে। এ ঘটনায় স্কুল ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকসহ এলাকায় নানা সমালোচনাসহ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ক্ষমতার জোর কার বেশী। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের না স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির। তবে ম্যানেজিং কমিটির অনৈতিক এ সিদ্ধান্তে সম্মত না হওয়ায় স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বরখাস্তসহ নানা হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এদিকে বাগাউড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক পিয়ার আলীকে বহিস্কার করলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ২ নং বড় ভাকৈর (পুর্ব) ইউনিয়নের বাগাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (অর্থনীতি) হিসেবে মোহাম্মদ জাকারিয়া বিগত ০১/০৭/২০১০ ইং তারিখে যোগদান করেন। পরবর্তীতে অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক পিয়ার আলী উক্ত শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র দেখে ভূয়া বলে সন্দেহ পোষন করেন। ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষ অক্টোবর-২০১৫ হতে তার বেতন ভাতাদি বন্ধ রাখেন। বিষয়টি যাচাই বাচাইর জন্য প্রধান শিক্ষক বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) বরাবরে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। কর্তৃপক্ষ যাচাই পূর্বক শিক্ষক মোহাম্মদ জাকারিয়ার রোল নং-১১০৩১১৫৭, রেজিঃ নং-০৫১০৭০০৯/২০০৬ইং সনদপত্রটি সঠিক নয় মর্মে প্রতিবেদন দেয়। উক্ত প্রদিবেদনের প্রেক্ষিতে বিগত ২০/০৩/২০১৬ইং তারিখে বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ১৮০০/৫ স্মারকে বাগাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাকারিয়ার ( ইনডেক্স-১০৪৯৫৯৭) এর নিবন্ধন সনদপত্র জাল প্রমানিত হওয়ায় তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রধান শিক্ষক বরাবরে পত্র প্রেরণ করেন। উক্ত পত্র প্রাপ্তির পর একাধিক ম্যানেজিংক কমিটির সভায় বিষয়টি উত্তাপন করলে কমিটির সভাপতি প্রভাবশালী সাজ্জাদুর রহমান এবং তার আখ্যাবহ কমিটির লোকজন তা আমলে নেয়নি। বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সচিব কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। এদিকে শিক্ষা অধিদপ্তরের পত্র পাওয়ার পরও ম্যানেজিং কমিটি উক্ত ভূয়া সনদধারী শিক্ষককে বরখাস্ত না করে গত ১৪ জুন কমিটির সদস্য সচিবকে বাদ দিয়ে এক জরুরী মিটিং ডেকে ম্যানেজিং কমিটি উক্ত শিক্ষক’র সরকারী বন্ধ থাকা বেতন ভাতাদি উত্তোলনের বিধি বহির্ভুতভাবে রেজুলিউশন করে প্রধান শিক্ষককে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এতে প্রধান শিক্ষক সায় না দিলে প্রভাবশালী কমিটির সভাপতি কমিটির বেশীর ভাগ সদস্যদের বিভিন্ন ভাবে প্রলোভনে এবং লোভনীয় অফার দিয়ে নিজের আয়ত্তে এনে প্রধান শিক্ষককে বরখাস্তসহ নানা হুমকী দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে উক্ত জাল সনদধারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে স্কুলের ছাত্র-অভিভাবক ও এলাকার জনপদ। এলাকাবাসী জাল সনদধারী শিক্ষক জাকারিয়াকে বরখাস্তসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে জোর দাবী জানিয়েছেন। এদিকে বাগাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পিয়ার আলীর সাথে অসাধারণ আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন নবীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। উক্ত সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুস সালাম ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রঞ্জন দাশ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলেন, ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষক পিয়ার আলীকে স্কুল থেকে বরখাস্ত করলে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর