,

অবশেষে বাগাউড়া হাইস্কুলের জাল সনদধারী শিক্ষক বকুল বরখাস্ত : শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আনন্দ উল্লাস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে নবীগঞ্জ উপজেলার বাগাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে জাল সনদধারী সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ জাকারিয়া হোসেন বকুল-কে বরখাস্ত করা হয়েছে। সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পত্র প্রেরণের ১৫ দিনের মাথায় মোহাম্মদ জাকারিয়া হোসেন বকুল (ইনডেক্স নং-১০৪৯৫৯৭) কে বরখাস্ত করা হয়। এ বিষয়ে হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশের পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কাশেম চৌধুরী গত রবিবার ২৮ জুলাই তারিখ দেখিয়ে বরখাস্ত করার ঘোষণা দেন। যা সিলেট শিক্ষা র্বোডকে অবহিত করার জন্য পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। এ খবরে স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আনন্দ উল্লাস দেখা দিলেও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাজ্জাদুর রহমানকে প্রত্যাহার এবং বরখাস্তকৃত শিক্ষক জাকারিয়া হোসেন বকুল কর্তৃক স্কুলের কাগজপত্র তছনছের বিচার ও অবৈধভাবে শিক্ষকতাকালে উত্তোলিত বেতন ভাতা সরকারী কোষাগারে ফেরৎ প্রদান এবং অন্যায়ভাবে সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক পিয়ার আলীকে স্ব পদে বহালের দাবী জানান। অন্যতায় তাদের আন্দোলন চলমান থাকবে বলেও ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। উল্লেখ্য, উপজেলার ২ নং বড় ভাকৈর (পুর্ব) ইউনিয়নের বাগাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (অর্থনীতি) হিসেবে মোহাম্মদ জাকারিয়া বিগত ০১/০৭/২০১০ ইং তারিখে যোগদান করেন। পরবর্তীতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পিয়ার আলী উক্ত শিক্ষকের শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র দেখে ভূয়া বলে সন্দেহ হয়। ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষ অক্টোবর-২০১৫ হতে তার বেতন ভাতাদি বন্ধ রাখেন। বিষয়টি যাচাই বাচাইর জন্য প্রধান শিক্ষক বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) বরাবরে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। কর্তৃপক্ষ যাচাই পূর্বক শিক্ষক মোহাম্মদ জাকারিয়ার রোল নং-১১০৩১১৫৭, রেজিঃ নং-০৫১০৭০০৯/২০০৬ইং সনদপত্রটি সঠিক নয় মর্মে প্রতিবেদন দেয়। উক্ত প্রদিবেদনের প্রেক্ষিতে বিগত ২০/০৩/২০১৬ইং তারিখে বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ১৮০০/৫ স্মারকে বাগাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাকারিয়ার (ইনডেক্স-১০৪৯৫৯৭) এর নিবন্ধন সনদপত্র জাল প্রমানিত হওয়ায় তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রধান শিক্ষক বরাবরে পত্র প্রেরণ করেন। উক্ত পত্র প্রাপ্তির পর একাধিক ম্যানেজিং কমিটির সভায় বিষয়টি উত্তাপন করলেও কমিটির সভাপতি প্রভাবশালী সাজ্জাদুর রহমান এবং তার আখ্যাবহ কমিটির লোকজন তা আমলে নেয়নি। বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সচিব কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। এদিকে শিক্ষা অধিদপ্তরের পত্র পাওয়ার পরও ম্যানেজিং কমিটি উক্ত ভূয়া সনদধারী শিক্ষককে বরখাস্ত না করে গত ১৪ জুন কমিটির সদস্য সচিবকে বাদ দিয়ে এক জরুরী মিটিং ডেকে ম্যানেজিং কমিটি উক্ত শিক্ষকের সরকারী বন্ধ থাকা বেতন ভাতাদি উত্তোলনের বিধি বহির্ভুতভাবে রেজুলিউশন করে প্রধান শিক্ষককে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এতে প্রধান শিক্ষক সায় না দিলে প্রভাবশালী কমিটির সভাপতি কমিটির বেশীর ভাগ সদস্যদের বিভিন্ন ভাবে প্রলোভনে এবং লোভনীয় অফার দিয়ে নিজের আয়ত্তে এনে প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে সিনিয়র শিক্ষক আবুল কাশেম চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে উক্ত জাল সনদধারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফুসে উঠে স্কুলের ছাত্র-অভিভাবক ও এলাকার জনপদ। এলাকাবাসী জাল সনদধারী শিক্ষক জাকারিয়াকে বরখাস্তসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে জোর দাবী জানিয়েছিলেন। এলাকাবাসীর দাবীর প্রেক্ষিতে সিলেট শিক্ষা র্বোড গত ১৩ জুলাই উক্ত জাল সনদধারী শিক্ষক জাকারিয়া হোসেন বকুলকে ৭ দিনের মধ্যে বরখাস্ত করে বোর্ডকে অবহিত করার নিদের্শ প্রদান করেন। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান তার চাচাতো ভাই শিক্ষক জাকারিয়া বকুলকে বাচাঁনোর জন্য নানা কোটচাল করেও ব্যর্থ হন। এ ব্যাপারে বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে পিছনের তারিখ দেখিয়ে ম্যানেজিং কমিটির পরামর্শে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাউবি/০১/২০১৬ (৭) স্মারকে র্বোড বরাবরে বরখাস্তের পত্র প্রেরণ করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর