,

হবিগঞ্জে অধ্যক্ষ থেকে শ্রেণী শিক্ষক হলেন বিজিত কুমার

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অর্থ আত্মসাতের দায়ে অভিযুক্ত সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক বিজিত কুমার ভাট্টাচার্যকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। অধ্যক্ষের পদ থেকে সরিয়ে তাকে উক্ত পদে পদায়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কলেজ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব আবু কায়সার খান স্বাক্ষরিত এক পত্রে ৯ আগস্ট তাকে বদলি করা হয়। এর আগে গত বছরের ৫ এপ্রিল বিজিত ভট্টাচার্যকে হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজ থেকে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে বদলি করা হয়। বৃন্দাবন কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২ এপ্রিল এ কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন বিজিত কুমার ভট্টাচার্য। এরপর থেকেই তিনি বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন সময় কলেজের অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে তা আত্মসাৎ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি ধামাচাপা থাকলেও গতবছর তাকে বদলি করা হলে তা ধরা পড়ে। গত বছরের ৫ এপ্রিল তাকে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ পদে বদলি করা হয়। তার স্থলাভিষিক্ত করা হয় মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ বদরুজ্জামান চৌধুরীকে। কিন্তু নতুন অধ্যক্ষকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়েই তড়িঘড়ি করে উপাধ্যক্ষ শফিউল আলম চৌধুরীর কাছে দায়িত্ব দিয়ে চলে যান বিজিত কুমার। এদিকে নতুন অধ্যক্ষ বদরুজ্জামান চৌধুরী কলেজের দায়িত্ব গ্রহণের আগেই বিভিন্ন খাতের আয়-ব্যয়ের হিসাবে গোঁজামিল পান। তিনি একই বছরের ২১ মে একাডেমিক ও স্টাফ কাউন্সিলের সভা ডেকে বিষয়টি অবহিত করেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গণিত বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তু কমিটি ২০১৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসের আর্থিক আয়-ব্যয়ের হিসাব নিরীক্ষা করে রিপোর্ট দেয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩১টি খাতে ২ কোটি ৯৪ লাখ ১৮১ টাকা আদায় করা হয়। কিন্তু ব্যাংকে জমা ছিল মাত্র ১১ লাখ ১২ হাজার ৮১৩ টাকা। ওই সময়ের মধ্যে ১ কোটি ৬৫ লাখ ১২ হাজার ৯৫৭ টাকার লেনদেন হয়। এর মধ্যে ১ কোটি ১৮ লাখ ৪১১ টাকা ব্যাংক হিসেবে স্থিতি থাকার কথা থাকলেও তা ছিল না। ৩১টি খাতের মধ্যে সবগুলো খাতেই কোনো না কোনো অনিয়ম হয়েছে বলে মনে করে নিরীক্ষা কমিটি। ওই কমিটি ১ কোটি ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪১১ টাকার কোনো হদিস পায়নি। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক রসময় কীর্ত্তনীয়া, শিক্ষা পরিদর্শক এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম এবং সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক রাকিবুল হাসানের সমন্বয়ে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করে। গত বছরের ৮ ডিসেম্বরের ওই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদনে আদায় করা অর্থ ব্যাংকে জমা না দেয়া, আয়-ব্যয় হিসাবে গরমিল, প্রাথমিকভাবে ১ কোটি ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪১১ টাকা জমা না দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।


     এই বিভাগের আরো খবর