,

নবীগঞ্জে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জামশেদুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ : শিক্ষকদের নিকট থেকে মাসিক চাঁদা আদায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জামশেদুর রহমানের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিচালক, সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালক ও হবিগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন নবীগঞ্জ উপজেলার ৩৭নং কামারগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাহবুব আহমদ। মাহবুব আহমদ তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, নবীগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়টি এক প্রকারের ব্যবসায় রূপ নিয়েছে। মডেল টেস্ট ২০১৬ইং পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিতরণের সময় এবং মডেল টেস্ট পরীক্ষার কেন্দ্র পরিচালনার জন্য কেন্দ্র খরচের প্রাপ্য টাকা হইতে আমাকে কেন্দ্র সচিব হিসেবে উক্ত সহকারী শিক্ষা অফিসার ৯২ টাকা কম দিয়ে আমার নিকট উল্টো আরোও ৫০০ টাকা দাবী করেন। আমি ঐ টাকা দিবনা বলায় উনি তার অফিসে অনেক শিক্ষকের সামনে আমার সাথে দূর্ব্যবহার করেন এবং অপর সহকারী শিক্ষা অফিসার এর নিকট আরোও ৬০০ টাকা না দিলে ওই শিক্ষা অফিসার আমাকে দমক দিয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে একমাসের মধ্যে শাস্তিমূলক বদলি করার হুমকি দেন। তিনি আরও বলেন, টাকা না দিয়ে আমাকে বিদ্যালয়ে গিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করবেন। রাজনৈতিক নেতাদের সর্ম্পক ভাল থাকায় আমি এ বিষয়ে নিরুপায়। সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার উনার ক্লাস্টারের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পরিদর্শনের নামে সময়ে অসময়ে বিদ্যালয় পরিদর্শনের সময় অনুপস্থিতির হুমকি দিয়ে প্রত্যেক শিক্ষক হতে মাসিক ৫০০ টাকা করে আদায় করেন। না দিলে হয়রানি করার হুমকি দেন। যাহা তদন্তে প্রমানিত হবে। উনার দায়িত্বে থাকা ক্লাস্টারগুলোর বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে মাসিক চুক্তিভিত্তিক ১৫০০ টাকা করে দিলে বিদ্যালয়ে না এসেও বেতন ভাতা উত্তোলন করায় সহযোগিতা করেন । দীর্ঘ ৩/৪ বছর যাবৎ এই প্রথা চালু করেছেন যা এখনও চলমান। প্রশাসনের নেক নজর থাকা সত্তেও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ভাল সর্ম্পক থাকায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার এরকম দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন নিশ্চিন্তে। প্রতিটি সাবক্লাস্টারের সময়ে প্রশিক্ষন না দিয়ে ঘনিষ্ঠ শিক্ষকদের সাথে খোশ গল্প করে ১ ঘন্টা সময় কাটিয়ে ২৪০ টাকার মধ্যে ১৫০ টাকা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক মাস্টার রোলএ স্বাক্ষর আদায় করেন এবং অনুপস্থিত শিক্ষক/ বিভিন্ন ডেপুটেশন থাকা শিক্ষকদের ভাতা নিজে স্বাক্ষর করে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিস হতে টাকা উত্তোলন করেন। যাহা গোপনে উনার ক্লাস্টারের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষকদের সাথে গোপনে এবং শিক্ষকদের নিরাপত্তা বজায় রেখে তদন্ত করলে যাহা সত্য প্রমানিত হবে। গত জুন মাসে বিদ্যালয় ভিত্তিক সরকারী স্লিপ বরাদ্ধ ৪০০০০ টাকা হইতে উনার ক্লাস্টারের ৯৫/ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে স্লিপ প্রতিবেদন তৈরী করার নামে এবং পরিদর্শনে হয়রানি করার ভয়ভীতি দেখিয়ে ২০০০ টাকা করে আদায় করেন। স্লিপ প্রশিক্ষনের সময় আমি উনাকে বাধ্য হয়ে জিজ্ঞাস করলাম, আপনি যে ২০০০ টাকা করে আদায় করতেছেন এই বিষয়টি বর্তমান নবীগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির দায়িত্বশীল পদের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা জানেন কিনা, প্রতিউত্তরে উনি বলেন এক জন বিষয়টি জানেন। যাহা উনার ক্লাস্টারের সকল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সাথে উনাদের নিরাপত্তা বজায় রেখে গোপনে তদন্ত করলে যাহা সত্য বলে প্রমানিত হবে। ২০১৫/২০১৬ইং সনে বর্তমান উপজেলা শিক্ষা অফিসার শিক্ষকদের বদলী করার সময়ে উনার পারিবারিক ব্যস্ততা জনিত কারনে এবং শারীরিক অসুস্থাতার কারনে ১ মাসের ছুটিতে গেলে উক্ত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সিনিয়র হিসাবে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পান। তখন উনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এর বদলীর বিভিন্ন আইন কানুনের পরোয়া না করে উৎকোচ গ্রহনের মাধ্যমে বদলী এবং ডেপুটেশন করিয়ে দিয়ে নিজে আর্থিক ভাবে অবৈধ উপায়ে নিজের অর্থনৈতিক উন্নয় ঘটান। যাহা তদন্তে আসলে প্রমানিত হবে। অভিযোগের বিষয়গুলো অতিব গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে উক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে নবীগঞ্জ উপজেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মানউন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য সবিনয় নিবেদন জানিয়েছেন শিক্ষক মাহবুব আহমদ। উল্লেখ্য, ইতিপূর্বেও ওই সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।


     এই বিভাগের আরো খবর