,

বাহুবলে প্রতিপক্ষের হামলায় সাবেক সেনা সদস্য নিহত : খবর শুনে হৃদরোগে চাচার মৃত্যু

বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবলে পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় সাবেক সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার পরপরই নিহতের চাচাত চাচা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। হত্যাকান্ডের ঘটনায় দুই গৃহবধূকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শুক্রবার উপজেলার সাতকাপন ইউনিয়নের মহিষদুলং গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাতকাপন ইউনিয়নের মহিষদুলং গ্রামের মৃত হাজী সুনাফর উল্লার পুত্র সাবেক সেনা সদস্য মোজাম্মিল মিয়ার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি থানা একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় একই গ্রামের আজমল হোসেন কালাই মিয়ার ভাই মারাজ মিয়াকে। এ মামলা এবং একটি বিবদমান জমির গাছ নিয়ে কালাই মিয়ার গোষ্ঠীর সাথে মোজাম্মিল মিয়ার বিরোধ চলে আসছে। এ অবস্থায় গতকাল শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে মোজাম্মিল মিয়ার জমির পার্শ্ববর্তী ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পার্শ্বে ঘাস কাটতে যায় আজমল হোসেন কালাই মিয়া। খবর পেয়ে মোজাম্মিল মিয়া মহাসড়কের ওই স্থানে গিয়ে ঘাস কাটতে বাঁধা দেন। এ নিয়ে উভয়ের মাঝে বাক-বিতন্ডা হয়। এরপর মোজাম্মিল মিয়া দূরবর্তী একটি জমিতে চলে যান। কিছুক্ষণ পর কালাই মিয়া ও তার গোষ্ঠীর লোকজন মোজাম্মিল মিয়ার উপর হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। সাথে সাথে তাকে প্রথমে বাহুবল ও পরে হবিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বেলা ১১টার দিকে মোজাম্মিল মিয়া (৬০) মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর দুপুর ১টার দিকে নিহতের চাচাত চাচা মৃত ইমাম আলীর পুত্র বেনু মিয়া (৭০) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। গতকালই তার লাশ দাফন করা হয়েছে। এদিকে, শুক্রবার রাতে নিহত মোজাম্মিল মিয়ার লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে। তার দু’পুত্রের মাঝে এক পুত্র প্রবাসে কর্মরত আছে। পিতার মৃত্যুর খবর পেয়ে সে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। তার বাড়ি ফেরা সাপেক্ষে আজ শনিবার নিহত মোজাম্মিল মিয়ার জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হবে। খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে নিহতের স্বজনদের দেখতে যান হবিগঞ্জ-সিলেটের সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য এডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী। তাকে দেখে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়লে তিনি তাদের শান্তনা দেন। এ সময় নিহতের স্বজনরা দোষীদের ফাঁসির দাবি জানান। তাদের দাবীর প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে কেয়া চৌধুরী এমপি ঘটনাস্থল থেকে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র-এর সাথে কথা বলেন। অপরদিকে, মঙ্গলবার রাতে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কালাই মিয়ার স্ত্রী রুমা আক্তার (৩৫) ও আজিদ মিয়ার কন্যা আকলিমা (২২)কে আটক করা হয়েছে বলে তাদের পরিবারের লোকজন দাবি জানায়। বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, ফিকলের আঘাতে মোজাম্মিল মিয়া মারা যান। ঘটনার পরপর অভিযুক্ত পরে লোকজন গা-ঢাকা দিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।


     এই বিভাগের আরো খবর