,

হবিগঞ্জে প্রাইভেট হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জ শহরের কোর্ট স্টেশন এলাকার হবিগঞ্জ হসপিটাল (প্রাঃ লিঃ) ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ডাক্তারের ঔষধ সেবনের পর নবজাতকের মায়ের শারিরীক অবস্থার অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নবজাতকের নানা বানিয়াচং উপজেলার দেওলগাঁও চৌধুরী বাড়ির আক্তারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি জানান, দুবাই প্রবাসি জামির আলীর স্ত্রী তার কন্যা ফৌজিয়া চৌধুরী (২৫) গত ১০ নভেম্বর বাড়িতে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে। যার নাম রাখা হয় ফারহান চৌধুরী। ১২ নভেম্বর তার নাতি ও কন্যা অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তিনি তাদেরকে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাদেরকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ সময় জরুরি বিভাগের সামন থেকে হবিগঞ্জ হসপিটাল (প্রাঃ লিঃ) এর নিয়োজিত দালাল আব্দুল খালেকের খপ্পরে পড়ে। সে অল্প টাকায় চিকিৎসার কথা বলে কৌশলে তাদেরকে সেখানে নিয়ে যায়। সেখানে ওই হসপিটালের নিজস্ব ডাক্তার দেবাশীষ দেব তাদেরকে দেখে বিভিন্ন টেষ্ট করাতে বলেন। তাদের কথা মতো ওই হসপিটালেই টেষ্ট করানো হয়। যার বিল বাবদ ধরা হয় ৬ হাজার টাকা। টাকা পরিশোধ করার পর রিপোর্ট দেখে তাদেরকে ২ টি প্রেসক্রিপশন দেয়া হয়। প্রেসক্রিপশন মতে ঔষধ সেবন করার পর তাদের অবস্থার আরো অবনতি হয়। এ সময় ডাক্তারের কাছে গেলে সংশ্লিষ্ঠ ডাক্তার জানান, ঔষধ সেবনের পর সব ঠিক হয়ে যাবে। ঔষধ সেবনের পর ফৌজিয়ার অবস্থার আরো অবনতি হলে গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় নিজেদের দোষ ঢাকতে তড়িগড়ি করে তাদেরকে ওই হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে দেয়া হয়। আক্তারুজ্জামান চৌধুরী তার অসুস্থ নাতি ও কন্যাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে রাস্তায় ফৌজিয়ার নবজাতকের মৃত্যু হয়। আক্তারুজ্জামান আরো অভিযোগ করেন তার নাতির মৃত্যুর পর লাশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে হসপিটাল কর্তৃপক্ষ তাকে বাড়াবাড়ি না করতে হুমকি প্রদর্শন করে। এদিকে তাদের ভুল চিকিৎসার কারণে ফৌজিয়া চৌধুরীকে আবারো বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। এদিকে ফৌজিয়া চৌধুরী ও তার শিশুপুত্রকে চিকিৎসা প্রদানকারী ডাক্তার দেবাশীষ দেবের সন্ধানে গেলে তাকে হসপিটালে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ হসপিটালের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম জানান, কোন ভুল চিকিৎসা দেয়া হয়নি। আমাদের হাসপাতালে শিশুটি মারা যায়নি। এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ দেবাশীষ দাস জানান, আমি হবিগঞ্জ হসপিটালে কোন রোগী দেখি না। দেবাশীষ নামের অন্য কেউ থাকতে পারে। উল্লেখ্য এর আগে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের দরিদ্র রিকশা চালক ছায়েদ আলী ওই হসপিটালের নিয়োজিত দালাল মানিক ও শহীদের প্ররোচনায় পড়ে ওই হসপিটালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তার দুই নবজাতকসহ স্ত্রীকে হারায়।


     এই বিভাগের আরো খবর