,

জেলা পরিষদ নির্বাচন : তফসিল ঘোষণা আজকালের মধ্যে

সময় ডেস্ক ॥ জেলা পরিষদ নির্বাচনের আর বাকি ৪৪ দিন। এখনও পর্যন্ত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। তাদের পরিকল্পনা রয়েছে আজকালকের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করার। নির্বাচনের ৪৫ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করার ইচ্ছে থাকলেও আইন মন্ত্রণালয় থেকে জেলা পরিষদ নির্বাচন সংক্রান্ত বিধি ও নির্বাচনের আচরণ বিধির খসড়া ভেটিং হয়ে ফেরত পেতে দেরি হওয়ার কারণে তারা তা চূড়ান্ত করে গেজেট আকারে প্রকাশ করতে পারেনি। আর তা না করতে পারার কারণে তফসিল ঘোষণা করতে সময় লেগে গেছে। এদিকে আইনমন্ত্রী বর্তমানে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি সংসদে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী। এই কারণে তার সঙ্গে আলোচনা করেই ও তার মতামত নিয়েই কমিশনকে কাজ করতে হচ্ছে। আইনমন্ত্রী বিদেশে অবস্থান করার কারণে আইন মন্ত্রণালয় ভেটিং হয়ে আসা বিধির কয়েকটি বিষয়ে কিছু কথা বলার প্রয়োজন হলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। আবার নির্বাচন ২৮ ডিসেম্বরে করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই বাধ্যবাধকতার কারণে তারা এখন অনেকটা সংকটে রয়েছেন। একজন কমিশনার বলেন, নির্বাচন কমিশনকে সিদ্ধান্তের জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হতে হচ্ছে। প্রকৃত পক্ষে হওয়া উচিত না। আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারলে এতোদিন তফসিল ঘোষণা করে দিতাম। ওই কমিশনার বলেন, ১৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা পরিষদ নির্বাচন। এই কারণে এই নির্বাচন করার জন্য আমাদেরকে অনেক কাজ করতে হচ্ছে। নতুন ধরনের একটি নির্বাচন। মনে হয় তেমন কোন কাজ নেই। কিন্তু অনেক কাজ। আমরা এখনও অনেক কাজ সম্পন্ন করতে পারিনি। সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে গেজেট করে দেওয়া। সেটা হলে অনেক কাজ এগোনো যেতো। কিন্তু তা যদি এখন আমরা এক দুই দিনের মধ্যে নাও পারি আমাদেরকে তফসিল ঘোষণা করে দিতে হবে। তফসিল ঘোষণা না করলে ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচন করা সমস্যা হবে না। এদিকে এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিতে চাইছে না। তাদের আশঙ্কা বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিলে তারা পরাজিত হবে। আর ভোটের নিয়মটাও করা হয়েছে একইভাবে। সরকারের লক্ষ্য ৬১টি জেলা সবটাতেই নিজেদের দলের লোক নির্বাচিত করানো। সেভাবে আইনেও সংশোধনী আনা হয়েছে। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ কেউ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। দলীয় প্রতীকে এই নির্বাচন হচ্ছে না। তাই দলীয় নেতা হলেও তার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিএনপির কেউ কেউ প্রার্থী হওয়ার জন্য এলাকায় নিজ উদ্যোগে জরিপ করছেন। বিএনপির কেমন ভোট আছে তার হিসাব নিচ্ছেন আর কোন কোন ভোটারের ভোট ম্যানেজ করতে পারবেন সেই হিসাব নিকাশও করছেন। তবে এই হিসাবে নেই সরকারি দলের প্রার্থীরা। তারা সব জেলাতেই বেশি ভোটের অধিকারী। সেই হিসাবে তারা এটা হিসাব করেছেন যে বিজয় তাদের হবে। আর বিএনপি নির্বাচনে না আসলে তাদের তেমন কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাই থাকবে না। প্রতিটি জেলায় স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের ভোটে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচিত হবেন। প্রত্যেক জেলায় ১৫ জন সাধারণ ও পাঁচজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নির্বাচিত হবেন। জেলা পরিষদের সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নির্বাচনের জন্য ওয়ার্ডের সীমানাও নির্ধারণ শেষ। জেলার আকার, ভোটার সংখ্যা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে ও বিবেচনা করে ভোটকেন্দ্র তৈরি করা হবে। একাধিক ভোট কেন্দ্র করা হবে। প্রত্যেক জেলার অন্তর্ভুক্ত সিটি করপোরেশনের (যদি থাকে) মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিল ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিল এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের নিয়ে এই নির্বাচকমন্ডলী হবে। অর্থাৎ সকল স্তরের জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কলেজ অব ইলেক্টোরাল গঠিত হবে। তারা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য নির্বাচিত করবেন। উপজেলা পরিষদে এখন ভাইস চেয়ারম্যান পদ যুক্ত হওয়ায় সংশোধিত জেলা পরিষদ আইনের খসড়ায় নির্বাচকমন্ডলীতে তাদের রাখা হয়েছে। জেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দুর্নীতি, নির্বাচনী অপরাধ করলে সাত বছরের সাজার বিধান রয়েছে মূল আইনে। আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদন্ড বা উভয় দন্ডের বিধান যোগ করা হয়েছে সংশোধিত আইনে। নির্বাহী ক্ষমতা চেয়ারম্যানের হাতেই থাকবে। তবে পরিষদ চাইলে এর সব বা যে কোনো নির্বাহী ক্ষমতা কোনো অস্থায়ী প্যানেল চেয়ারম্যান বা কোনো সদস্য অথবা সরকার অনুমোদিত কোনো উপযুক্ত কর্মকর্তাকে দিতে পারবে। চেয়ারম্যান না থাকলে এর সদস্য বা সরকারের কোনো মনোনীত কর্মকর্তা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। জেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের শপথের সময় পরিচিতির জন্য পিতা বা স্বামীর নামের সঙ্গে মায়ের নাম যোগ করার কথাও সংশোধিত আইনে রয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর