,

নবীগঞ্জে আমন ধানের বাম্পার ফলন ॥ কৃষকের মুখে হাসি

মতিউর রহমান মুন্না ॥ নবীগঞ্জে আমনের বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকের ঘরে এখন সুখের হাওয়া বইছে। তারা আশা করছেন কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই তারা যেন ধান সময় মতো ঘরে তুলতে পারেন। উপজেলার সর্বত্র রোপা আমনের বাম্পার ফলন আশা করছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকুলে, রোগ বালাই ও পোকা-মাকড় দমন করায় ভালো ফলন হতে পারে। প্রতি বিঘায় ১৮ থেকে ২০ মন পর্যন্ত ধান উৎপাদন আশা করছেন তারা। বর্তমানে নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাওর মাঠে মাঠে সবুজ আর সোনালী ছোপ, বিকালে হালকা বাতাস, সকালে শিশির ভেজায় দূলছে রোপা আমন ধান। সেই সাথে দূলছে কৃষকের মন। খুশির আনন্দে ঢেউ আছড়ে পড়ছে মাঠে-গ্রামে। কৃষকদের চোখের কোণে খুশির ঝিলিক। দেখছে সোনালী স্বপ্ন। সচ্ছলতার সোপানে দ্রুত পাল্টে যাওয়ার আগমনী বার্তা সু সময়ের হাতছানি। দেশের কৃষকদের এগিয়ে নিতে কৃষিবান্ধব সরকারের সামগ্রীক সহযোগিতায় কৃষকরা উদ্বেলিত। কৃষকরা প্রচন্ড ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। তারা রোপা আমন ধানের মাঠের দিকে দৃষ্টি রাখছে দিনের বেশীরভাগ সময়। তবে এত খুশির মধ্যেও কৃষকদের মাঝে আতংক ও শংকা বিরাজ করছে। কারন গত বছর কৃষকেরা ধানের ন্যায্যমূল্য পায় নি। এক শ্রেণীর দালালরা খাদ্য কর্মকর্তার যোগসাজশে খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা লুটপাট করেছে বলে তারা জানায়। তাদের অভিযোগ প্রকৃত কৃষকেরা উপজেলা খাদ্য গুদামে মান সম্মত ধান নিয়ে গেলেও নানা অজুহাতে তাদের ধান রাখা হয়নি। কিন্তু দালালদের গুনগুত মান কম থাকা সত্ত্বেও তাদের ধান গুদাম কর্মকর্তা রেখেছেন। বিনিময়ে নিয়েছেন মোটা অংকের টাকা। তারা জানায়, আগামীতে এ কাজটি যেন না হয় তার জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তা হলে তারা ন্যায্য মূল্যে সরকারী গুদামে ধান বিক্রি করতে পারবে। এছাড়া আমন ধানের বাম্পার ফলন হলেও কৃষকরা পড়েছেন ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে মহা দুঃশ্চিন্তায়। শ্রমিক সংকটের কারণে অনেকে যথা সময়ে ধান গোলায় তোলতে পারবেন কি না এ নিয়ে চিন্তিত। এবার আমন ধানের ফলন ভাল হওয়ায় ধান চাষ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমনের এমন বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অধিদপ্তর। ইতিমধ্যে প্রতিটি মাঠে মাঠে ও হাওড়ে এখন কৃষকেরা আমন ধান কাটা ও মাড়াই কাজ শুরু করেছেন। গতকাল উপজেলার মখা, হউলাঘর, হাইল, জোয়ালভাঙ্গা, গুগগুজুরি, বেরী ও নবীগঞ্জ পুর্বের হাওর সহ বিভিন্ন হাওরে ঘুরে দেখা যায় শুধু আমন ধানের ক্ষেত। এ বছর ধানের ফলন বেশি হওয়ায় কৃষক/কৃষাণীর মুখে আনন্দ দেখা যায়। ধানের গোলা তৈরি করে নতুন ধান ঘরে তুলছেন সবাই। প্রতি ঘরে ঘরে চলছে নবান্নের নানা উৎসব। সকল হাওরে প্রায় ৯০ শতাংশ ধান পেকে গেছে। এবং রিতিমতো নতুন ধান কাটার ধুম পরেছে। বছরের শুরুতেই বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে বেশি বৃষ্টি হওয়ায় ধানের ফলন ভাল হয়েছে। নবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ দুলাল উদ্দিন জানান, উপজেলায় এ বছর ৯ হাজার ৬ শত ৫৩ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিলো। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ফলন ভাল হওয়ায় এবার ৯ হাজার ৮ শত ৮০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। এবার আশার চেয়ে ফলন অনেক ভাল হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর