,

প্রেমিকের খোঁজে না’গঞ্জের ফরিদা পারভীন হবিগঞ্জে

জুয়েল চৌধুরী ॥ ফেসবুকের মাধ্যমে একমাস আগে আকাশের সাথে পরিচয় হয় নারায়নগঞ্জের ফরিদার। চ্যাটে কথাও হয় নিয়মিত। আর এতেই আকাশের প্রেমে দিওয়ানা হয়ে পড়ে সে। দিনে দিনে আকাশের কথার জাদুতে ভুলতে থাকে ফরিদা। ৩০ দিনের কোন একদিন আকাশ তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। আকাশের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতে পারেনি ফরিদা। এক পর্যায়ে আকাশ তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে দেখা করতে বলে। দিওয়ানা ফরিদা আকাশের ঠিকানা না জেনেই তার কথামতো গত শুক্রবার রাতে হবিগঞ্জে আসে। আকাশ তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল এলাকায় দেখা করতে বলে। ফেসবুক প্রেমিকা ফরিদা পারভীন নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার ঝালুকুটি গ্রামে আব্দুস সোবাহানের কন্যা ও স্থানীয় এক মাদ্াসার আরবী বিভাগের শিক্ষিকা। কথামতো শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ফরিদা বাসযোগে হবিগঞ্জ সদর থানার সামনে এসে নামে। এ সময় সে আকাশের মোবাইল ফোনে ফোন দিয়ে তাকে নিতে বলে। তখন আকাশ ফরিদাকে জানায়, সে হাসপাতালের ভেতর রয়েছে, কাউকে জিজ্ঞেস করে ফরিদা যেন হাসপাতাল এরিয়ায় যায়। আকাশের কথামতো ফরিদা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে যায়। কিন্তু ফেসবুক প্রেমিক আকাশকে জরুরি বিভাগের সামনে খুজেঁ পায়নি ফরিদা। মানসিকভাবে দুর্বল হতে থাকে সে। কয়েকবার আকাশকে মোবাইল ফোনে কল দেয়। আকাশ একবার হাসপাতালের পেছনে, আরেকবার অনন্তপুর এলাকায় ফরিদাকে যেতে বলে। এভাবে আকাশ ফরিদার সাথে রাত ১২টা পর্যন্ত চোর-পুলিশ খেলা খেলতে থাকে। এক পর্যায়ে রাত ১২টার কিছুক্ষণ পর কতিথ ফেসবুক প্রেমিক আকাশ তার মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। এতে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে ফরিদা। প্রতারিত হয়েছে বিষয়টি বুঝতে পেরে বাড়িতে ফিরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে। সিদ্ধান্ত অনুসারে রাতেই সে ঘুমের ট্যাবলেট সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় তাকে পড়ে থাকতে দেখে কর্মচারিরা হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়। গতকাল শনিবার সকালে তার জ্ঞান ফিরে আসে। এ সময় সে আবারো আত্মহত্যার উদ্যোগ নিলে কতিপয় যুবক এতে বাঁধা দেয় এবং কৌশলে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা হাসপাতালে ছুটে গেলে বখাটেরা সটকে পড়ে। বিষয়টি সাংবাদিকরা সদর থানার ওসি ইয়াসিনুল হককে জানালে তিনি পুলিশ পাঠিয়ে তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়ে যান। এ সময় ফরিদা সাংবাদিকদের তার প্রতারিত হওয়ার কাহিনী বর্ণনা করে। এ ব্যাপারে ওসি জানান, ফরিদার অভিভাবকদের খবর দেয়া হয়েছে। তারা এলে ফরিদাকে তাদের জিম্মায় দেয়া হবে। রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফরিদা থানা হেফাজতে ছিল।


     এই বিভাগের আরো খবর