,

হবিগঞ্জের উত্তর পূর্বাঞ্চলে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকা : ফসল ও মাছ উৎপাদন ব্যাহত

মোহাম্মদ আলী মমিন ॥ হবিগঞ্জ জেলার উত্তর পূর্বাঞ্চলের যত্রতত্র বিভিন্ন শিল্পকারখানা সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়া স্থাপনের প্রতিযোগিতার আলামত দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। এক্ষনি সরকার বেআইনি শিল্পকারখানা স্থাপনের বাস্তব প্রতিহত করার উদ্যোগ নেয়া না হলে একযুগের মধ্যেই শিল্প কারখানা থেকে নির্গত বর্জ্যরে প্রতিক্রিয়ায় বাহুবল, হবিগঞ্জ, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জের ফসলীয় জমি ও মাছ উৎপাদন মারাতœক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংখা দেখা দিয়েছে। এমনকি অর্ধযোগের মধ্যেই হবিগঞ্জের উত্তরাঞ্চলের নিম্ন ফসলী বোর আমন জমিতে ধান উৎপাদন যেমন স্থায়ী ভাবে নষ্ট হবে তেমনি খাল নালা বিলে প্রাকৃতিকভাবে মাছ উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে। প্রতিবছরই বর্ষার পানিতে নিষ্কৃত বর্জ্য ঐসব এলাকায় ছয়লাব হয়ে যাবে। অন্যদিকে আর্সেনিক যেভাবে মাটির নিচে ছড়ায় তেমনি ভাবে ঐসব এলাকার সুস্থ্য সকল ফিসারিও ক্ষতিগ্রস্থ হবে। মারাতœকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে শুরুতেই হবিগঞ্জ, নবীগঞ্জ ও বাহুবলের মধ্যবর্তী ঘুঙ্গিয়াজুরী হাওড়ের হাজার হাজার হেক্টর জমি ও পুকুরের ধান মাছ উৎপাদন। এদিকে ভৌগোলিক অবস্থার কারনে মৌলভীবাজারের মনো নদী ও হবিগঞ্জ কুশিয়ারা নদীর বাম তীর আজমিরীগঞ্জ পর্যন্ত এবং হবিগঞ্জ খোয়াই নদীর ডান তীর সুজাতপুর পর্যন্ত মধ্যবর্তী এলাকার সমস্ত পানি একমাত্র বানিয়াচঙ্গের রতœা নদী দিয়ে কিশোরগঞ্জের মেঘনা নদীতে পতিত ও প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া অন্য কোন দিকে ঐ সব অঞ্চলের পানি যাওয়ার বিকল্প নেই। বর্ষা এলে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের ঐসব এলাকা ভাসমান পানিতে একাকার হয়ে যায়। তাই সবাইকে দূরদর্শী ভাবনা নিয়ে বিষাক্ত বর্জ্য সৃষ্টি হয় বা নির্গত হয় এরূপ শিল্প কারখানা স্থাপনে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। নতুবা মরুভূমির ন্যায় এক সময় অনুৎপাদনশীল ভূমিতে রুপান্তরিত হবে হবিগঞ্জের উত্তর পূর্বাঞ্চল এলাকা। একসময় প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যয়ের কারনে মানুষের বসবাস অযোগ্য হওয়ার আশংকা অমূলক নয়। এ অঞ্চলের পরিবেশের নিশ্চিত বিপর্যয়ের বিষয়ে বিভিন্ন স্থরের জন প্রতিনিধি ও পরিবেশ বাদীরা জনগনকে সচেতনতা বাড়াতে মাঠে নামতে চাইলেও দূর্ভাবনায় পড়েছেন। কারণ ৫ হাজার টাকার জমির মালিক ব্যক্তিগত লাভবানের উদ্দেশ্যে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে বিনিয়োগকারী শিল্পপতিদের কাছে বিক্রি করতে পারছেন। আবার এলাকাবাসী বলবে শিল্প হলে কর্মসংস্থান হবে এ ভাবনা নিয়ে জনরোশ বা প্রকাশ্য প্রতিরোধ এর সম্মুখিন হওয়ার আশংখা। কৃষি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মুকুল চন্দ্র রায় বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য কলকারখানা অত্যবশ্যক। তবে শিল্প কারখানা থেকে বর্জ্য যথাযথ শোধন ও ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন যাতে আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ সহ জনসাস্থ্যের উপর বিরোপ প্রভাব ফেলতে না পারে। তবে আশার কথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় স্বার্থে ভূগর্ভস্থ পানির অপব্যবহার ও কৃষি জমি বিনষ্ট করে শিল্প কারখানা স্থাপনে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে জানা গেছে।


     এই বিভাগের আরো খবর