মতিউর রহমান মুন্না ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার ক্রাইমজোন হিসাবে খ্যাত দীঘলবাক ইউনিয়নের বোয়ালজুর গ্রামে ফের অশান্তির আগুন জ্বলছে। শাহনাজ নামের এক যুবকের গলা কাটা লাশ উদ্ধার নিয়ে নানা রহস্যের দানা বেধেছে। এনিয়ে এলাকায় রয়েছে নানা ধরনের মন্তব্য। কেউ বলছেন আধিপত্য বিস্তারের বলি, আবার অনেকের ধারনা ৩য় কোন পক্ষের হাত থাকতে পারে এ ঘটনায়। তবে ৩য় পক্ষ হলে সেটাও দু’গ্র“প থেকেই সৃষ্ঠি বলেও ধারনা অনেকের। অনুসন্ধানে জানা যায়, দীর্ঘদিন ২ যুগ ধরে ওই গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’দল লোকের মধ্যে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অগ্নিসংযোগ, খুনসহ একাধিক মামলা-মোকদ্দমার ঘটনা ঘটছে। ২০১৩ সালে মজিদ উল্লাকে হত্যার পর গ্রাম কিছুটা শান্ত হলেও গত সোমবার (৫ ডিসেম্বর) স্কুল ছাত্র শাহনাজ মিয়া (১৫)কে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের ঘটনায় ফের আলোচনায় আসে ক্রাইম জোন খ্যাত বোয়ালজুর গ্রামটি। এ ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে গ্রামে। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে নবীগঞ্জ উপজেলার ২ ইউনিয়নে ২ শিশুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় চলছে। এ হত্যাকান্ডের খবরে অনেকেই মন্তব্য করছেন ‘শান্তির জনপদ হিসেবে পরিচিত নবীগঞ্জ যেন এখন হত্যার জনপদ’। টক অব দ্যা নবীগঞ্জে পরিণত হয় সমগ্র উপজেলা। দুটি চাঞ্চলকর হত্যাকান্ড নিয়ে চায়ের দোকানসহ সর্বত্র একই আলোচনা। পূর্ব শত্র“তার জের ধরে গিয়াস উদ্দিনের লোকজন শাহনাজকে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করেছে বলে দাবী করছেন তার পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় বোয়ালজুর গ্রামে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিহত শাহনাজের মা ময়না বিবি জানান, রবিবার (০৪ ডিসেম্বর) রাত ১০ টার দিকে তার ছেলে শাহনাজকে ফুটবল খেলার পোষ্ঠার লাগানোর জন্য ঘর থেকে ডেকে নেয় একই গ্রামের তাদরে রিরোধী গ্র“প লিডার গিয়াস উদ্দিনের পুত্র জসিম আহমদ লিজু, সাজুসহ খেলার সহপাঠিরা। এর পর থেকে শাহনাজ আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। সারা রাতব্যাপি শাহনাজের পরিবারের লোকজন তাকে গ্রামের বিভিন্নস্থানসহ আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুজি করেন। এক পর্যায়ে সোমবার সকাল ৭ টার দিকে খবর পাওয়া যায় স্থানীয় জোয়ালভাঙ্গা হাওরে পড়ে আছে শাহনাজের গলা কাটা লাশ। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করে। ধারনা করা যাচ্ছে ঘাতকরা শাহনাজকে রাতের আধারে অন্য স্থানে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে জোয়াল ভাঙ্গা হাওরে ফেলে রাখে। তবে এখানে ৩য় কোন পক্ষের হাত আছে কিনা এনিয়েও থেমে নেই বির্তক। অনেকের ধারনা ৩য় কোন সিন্ডিকেট এর সাথে জড়িত। বিষয়টিকে আইনশৃংখলা বাহিনীকে খতিয়ে দেখার আহবান সতেচন মহলের। ক্রাইম জোন হিসেবে খ্যাত বোয়ালজুর গ্রাম যেন এখন মৃত্যুপুরী হিসেবে পরিণত হয়েছে এমন মন্তব্যও করছেন সচেতন মহল। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শাহনাজ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নবীগঞ্জ থানায় কোন মামলা বা কাউকে আটকের খবর পাওয়া যায়নি।