,

চাকরির ভয়ে মানসিক সমস্যা গোপন করেন পাইলটেরা!

সময় ডেস্ক ॥ বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক ফ্লাইটের কয়েক হাজার পাইলট বিষণœতায় আক্রান্ত। এদের কারও কারও মধ্যে রয়েছে আত্মঘাতী প্রবণতা। কিন্তু চাকরি হারানোর ভয়ে তাঁরা চিকিৎসা নেন না। নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। ২০১৫ সালে ফ্রান্সের আল্পস পর্বতমালায় জার্মান উইংসের বিমান বিধ্বস্ত হয়। মানসিকভাবে অসুস্থ ওই বিমানের কো-পাইলট ইচ্ছাকৃতভাবে বিমানটির ওই দুর্ঘটনা ঘটান। তিনিসহ মারা যান বিমানটি ১৪৯ জন আরোহী। ওই ঘটনার পর হার্ভার্ডের এই গবেষণাটি করা হয়। গত বছর তিন হাজার ২৭৮ জন পাইলটকে নিয়ে গবেষণাটি করা হয়। গবেষকেরা দেখেছেন, ওই পাইলটদের ৪২৬ জন (প্রায় ১৩ শতাংশ) বিষণœতায় ভুগছেন। জরিপ চলাকালীন সময়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে ৭৫ জন পাইলট আত্মঘাতী প্রবণতা বা আত্মহত্যার চিন্তা করেছেন। গত বুধবার এনভায়রনমেন্টাল হেলথে এই গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়। ওই সংখ্যা অনুযায়ী গবেষকদের ধারণা বিশ্বের প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার পাইলটের মধ্যে প্রায় ১৮ হাজার পাইলট মানসিক বিষণœতায় আক্রান্ত এবং প্রায় পাঁচ হাজার ৬০০ পাইলটের মধ্যে আত্মঘাতী প্রবণতা রয়েছে। বিশ্বের এক লাখ ৪০ হাজার পাইলটের মধ্যে অর্ধেকই যুক্তরাষ্ট্রে বিমান চালান। গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী গবেষক অ্যালেক্স উ এর মতে, বিষণœতায় আক্রান্ত হওয়ার খবর বের হলে এয়ারলাইনের সংশ্লিষ্ট পাইলটদের চাকরিচ্যুত করা হতে পারে। অ্যালেক্স উ এর উদ্ধৃতি দিয়ে বোস্টন ডট কমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এটা যদি তাঁদের ক্যারিয়ারের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে তবে এটা বড় অন্তরায়।’ গবেষণায় বলা হয়, ‘মানসিক সমস্যার উপসর্গ ও রোগ নির্ণয়ের খবর প্রকাশ না হওয়ার কারণ সম্ভবত মানসিক রোগ নিয়ে লজ্জা ও পাইলটদের চাকরি হারানোর ভয়।’ যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারওয়েজের অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপটেন চেসলি সুলেনবার্গার সিবিএস নিউজকে বলেন, ‘যেসব পাইলটেরা বিমান চালানোর যোগ্য নয়, তাদের ককপিটের বাইরে রাখা উচিত। তবে আরোগ্য লাভের পর তাঁরা যাতে কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসতে পারেন আমাদের সে পথও তৈরি করা প্রয়োজন।’ গবেষকেরা বলেছেন, গবেষণায় এই ফল পাওয়া সত্ত্বেও এয়ারলাইনের পাইলটদের প্রতি জনগণের আস্থা হারানো উচিত হবে না। জ্যেষ্ঠ গবেষক জোসেফ জি অ্যালেন লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসকে বলেন, ‘উড়োজাহাজ নিরাপদ। এই গবেষণা সেটিকে পরিবর্তন করছে না।’


     এই বিভাগের আরো খবর