,

বাহুবলে প্রধান বিচারপতি- বিচার বিভাগ স্বাধীন ছিল স্বাধীন থাকবে

বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবলের জয়পুরে শ্রী শ্রী শচী অঙ্গন ধামের ৩৬তম বার্ষিক উৎসবে এক সংবর্ধণা সভায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন ছিল স্বাধীন থাকবে। তিনি বলেন বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র এখানে ধর্ম কামার কুমার কোন কিছুর ভেদাভেদ নাই। তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে এদেশে গণতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা থাকবে। হয়রানিমূলক ভাবে পুলিশ যাদেরকে গ্রেফতার করেছে তাদের মধ্যে নিরপরাধ ব্যক্তিরা ঠিকই ছাড়া পাবে অপরাধীরা ছাড়া পাবে না, জামিনও পাবে না বিচারে যা হয় হবে। তিন ধর্মনিরপেক্ষ মানে এই নয় যা ইচ্ছা তাই করবেন। সনাতন ধর্মালম্বীদের অনুরোধ করে বলেন বাদ্য যন্ত্র ব্যবহারে যাতে অন্য ধর্মের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সে দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। তিনি হবিগঞ্জ জেলা বিচারক ও ম্যাজিষ্ট্রেটদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন আমি হবিগঞ্জে যাদের নিয়োগ দিয়েছি তারা কমপ্লেইটেট। অপরাধীদের জামিন দেওয়ার প্রবণতা কমায় হবিগঞ্জে অনেকটা অপরাধ প্রবণতা কমে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় শচী অঙ্গন ধামে সংবর্ধণা ও শ্রী শ্রী চৈতন্য পরিক্রমা গ্রন্থের মোড়ক উন্মেচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এ কথাগুলি বলেন। এর আগে শচী অঙ্গন ধামের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। তিনি কিছু সময় শচী অঙ্গন ধামের ভিতর অবস্থান করে পূজো অর্চনা শেষ করে ধামের পাশে একটি বকুল ফুলের চারা গাছ রোপন করেন। পরে তিনি কলকাতার প্রফেসর সমরেশ দাস রচিত শ্রী চৈতন্য পরিক্রমা গ্রন্থের মোড়ক উন্মেচন করেন। শচীঅঙ্গন ধামের সভাপতি নিখিল চন্দ্রের সভাপতিত্বে সাংবাদিক অভিজিৎ ভট্রাচার্যের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন এমপি মুনিম চৌধুরী বাবু, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম, জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির চৌধুরী। এ সময় আবেগঘন বক্তব্য প্রধান করেন প্রধান বিচারপতির শিক্ষক বিজিত কুমার দেব। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার বেগম হোসনে আরা আকতার, প্রধান বিচারপতি’র একান্ত সচিব মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ও হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার বেগম ফারজানা ইয়াসমিন। অনুষ্ঠানে মানপত্র পাঠ করেন শ্রী শ্রী শচীঅঙ্গন ধামের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ ভট্রাচার্য। গত বুধবার থেকে ৪ দিনব্যাপী এ উৎসব শুরু হয়েছে। এই উৎসবে পদাবলী কীর্তন, নামযজ্ঞসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ১৯৮৩ সালে পরম বৈষ্ণব ড. শ্রী মহানামব্রত ব্রহ্মচারী আবিষ্কার করেন পুণ্যতীর্থ শ্রীধাম জয়পুর-এ মহাপ্রভুর মামারবাড়ি। তারই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মহাপ্রভুর মাতৃদেবী শচীরাণীর নামে জয়পুরে ‘শ্রী শ্রী শচীঅঙ্গন ধাম’ গড়ে ওঠে। কালের আবর্তনে আধ্যাত্মিক ভাবমূর্তি হিসেবে গৌরভক্তদের কাছে মহাতীর্থভূমি রূপে ‘শচীঅঙ্গন’ পরিচিতি পেয়েছে। চিরাচরিত প্রথানুসারে এখানে বার মাসে তের পার্বণ অনুষ্ঠিত হয়। এবারও ৮ থেকে ১১ ফেব্র“য়ারি (২৫ থেকে ২৮ মাঘ) পর্যন্ত বার্ষিক উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের শেষ দিনে (১১ ফেব্র“য়ারি) রয়েছে ‘বসন্ত উৎসব’। বসন্ত উৎসবের মধ্যে দিয়েই চার দিন ব্যাপী বার্ষিক উৎসব অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর