জুয়েল চৌধুরী ॥ কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের লেদা ক্যাম্প ছেড়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশী ছদ্মবেশে এবং বাংলাদেশীদের মতো আচার আচরণের কৌশল নিচ্ছে তারা। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ধরপাকড় না থাকায় অনুপ্রবেশ কমছেনা। বরং তা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে আইন-শৃংখলা অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয় ক্যাম্প ছেড়ে গিয়ে রোহিঙ্গাদের অনেকেই বাংলাদেশী পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টা করছে। এজন্য তারা বিভিন্ন জেলায় পাসপোর্ট অফিস ঘিরে থাকা দালালদের শরণাপন্ন হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করতে এসে আটক হয় তিন নারী রোহিঙ্গা শরণার্থী। তারা এখানে আসে পাসপোর্টের ফরম জমা দিতে। কিন্তু তাদের ভাষা শুনে বিষয়টি ধরা পড়ে। পরে যাচাই করে দেখা যায়, তিন নারী রোহিঙ্গা হবিগঞ্জ সদর উপজেলার গোপায়া ইউনিয়নের ভূয়া জন্ম নিববন্ধনসহ অন্যান্য কাগজপত্রে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে কাগজপত্র জমা দিয়েছে। এ সময় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক তাদের কাগজপত্র জমা না নিয়ে তাদের আটক করে রাখেন। দিনভর আটক থাকার পর পাসপোর্ট অফিসের কতিপয় দালাল সন্ধ্যার দিকে তাদের নিয়ে কৌশলে সটকে পড়ে। উল্লেখ্য মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের অজুহাত তুলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়। তখন জাতীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে সেই সব রোহিঙ্গাদের, উখিয়া ও টেকনাফে ৮/১০টি শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় দেয়া হয়। শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে তাদের কঠোর নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সেখান থেকে কক্সবাজার জেলায় ছড়িয়ে পড়ে রোহিঙ্গাদের একটি বড় অংশ। তাছাড়াও প্রতিদিন সীমান্তের বিভিন্ন পথে দিয়ে এদেশে আসতে তাকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা। স্থানীয়দের মতে, এখানে স্থানীয়দের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে এবং নানা কৌশলে এদেশে স্থায়ী বসবাসের চেষ্ঠা পাকাপোক্ত করেছে রোহিঙ্গারা। অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের নিরাপদ বসবাস কক্সবাজার জেলার ভিতরে এখন আর সীমাবদ্ধ নেই। তারা এখন চট্টগ্রাম ফেনী, মিরসরাইসহ আশপাশ জেলা গুলোতে বসবাসের নিরাপদ মনে করছে। অনেক রোহিঙ্গা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকা, সিলেটসহ বিভাগীয় শহরে আলিশান বাড়ি ভাড়া ও ফ্যাট নিয়ে বসবাস করছে। সরকারের হিসাব মতে বর্তমানে দেশে রয়েছে ৫ লাখ রোহিঙ্গা। স্থানীয়দের মতে এ সংখ্যা আরো ছাড়িয়ে যাবে। রোহিঙ্গারা এদেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বের চরম হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে।