,

মাধবপুরে মা-ছেলের লাশ নির্যাতনের রেকর্ড ছিল মিলির মোবাইল ফোনে

মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ মাধবপুর উপজেলার বহরা ইউনিয়নের ঘিলাতলী গ্রামে মা ও শিশুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হওয়ার পর থেকে স্বামী ও শাশুড়ির দেখা মিলছে না। পুলিশ ময়না তদন্ত শেষে মিলি ও তার ছেলে পথিকের লাশ মিলির বাবার নিকট হস্তান্তর করেছে। গতকাল মৌলভীবাজার জেলার কাশিপুর গ্রামের তাদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল দুপুরে ঘিলাতলী গ্রামের পিন্টু দেবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সুনসান নীরবতা। পিন্টুর চাচাদের ঘরে মহিলারা বসে রয়েছে। পিন্টুর ঘরে তালা ঝুলছে। সাংবাদিক পরিচয় দিতেই এগিয়ে আসে কয়েকজন। পিন্টুর ভাইয়ের স্ত্রী রিক্তা দেব জানান, ঘটনার দিন তার দেবর পিন্টু ও তার মা বাড়িতে ছিল। কিন্তু দুপুরের পর থেকেই তারা নিখোঁজ। ঘরে তালা লাগিয়েছে কে জানতে চাইলে তিনি তালা লাগিয়েছেন বলে জানিয়েছে। পিন্টুর কাকাত ভাই পলাশ দেব জানান, তিনি মনতলা বাজারে ক্রোকারিজের ব্যবসা করেন। ঘটনার দিন তিনি বাড়ির পাশে জমিতে কৃষি কাজ করছিলেন। খবর পেয়ে বাড়িতে এসে দেখতে পান মিলি ও তার ছেলে পথিকের লাশ তীরের সঙ্গে ঝুলছে। খবর পেয়ে তার ভাই পিন্টু বাড়িতে এসে এ দৃশ্য দেখে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে তাকে পানি ঢেলে জ্ঞান ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু ওইদিন বিকালে থেকে পিন্টুকে আর তিনি বাড়িতে দেখেননি। মিলি ও তার ছেলে পথিকের মৃত্যু নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ পিন্টুর পুরো স্বজনরা। কিন্তু মুখ বন্ধ নেই মিলির বোন মাপ্পি দেব’র। তিনি জানান, পিন্টুর বিয়ের সময় তাদের বাড়ি থেকে ১ লাখ টাকা দেয়া হয়। এ টাকা দিয়ে ঘরের খাট, আলমারিসহ যাবতীয় জিনিস বানানোর কথা ছিল। কিন্তু ছোট একটি খাট বানিয়ে পুরো টাকা মিলির শাশুড়ি তার মেয়েকে দিয়ে দেয়। এ নিয়ে মিলি কথা বললেই তার শাশুড়ি তাকে মানুষিকভাবে নির্যাতন করত। অপরদিকে পিন্টু বিয়ের পর ভালো মানুষ সেজে ছিল। কিন্তু সে মাদক সেবন করত। তাকে মাদক সেবন বন্ধ করতে মিলি চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু পিন্টু মাদক সেবন বন্ধ করেনি। পিন্টুকে সে অনেক বুঝাত। মিলি তার বোন মাপ্পিকে জানান, পিন্টু প্রায় রাতেই তাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দিত। কিন্তু কি কারণে এমন করত তা মিলি বলেনি। হয়ত এসবই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া মিলির কাছে যে মোবাইল ফোনটি ছিল তাতে মিলিকে অত্যাচারের বিভিন্ন রেকর্ড ছিল। কিন্তু ঘটনার পর থেকে মিলির সেল ফোনটি পাওয়া যাচ্ছে না। মিলির ঝা রিক্তা বলেন পিন্টুকে কখনো তারা মাদক সেবন করতে দেখেন নি। ঘটনার পর থেকে পিন্টু আড়ালে কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন হয়ত পুলিশের ভয়ে বাড়ির বাইরে আছে। মিলির সেল ফোনটি কোথায় আছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ঘটনার পর তিনিও সেল ফোনটি অনেক খোঁজেছেন কিন্তু তা তিনি দেখতে পাননি। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম পলাশ জানান, মিলি ও তার সন্তান পথিকের লাশ মিলির বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করেনি। মিলির ব্যবহৃত সেল ফোনটির সন্ধান করছে পুলিশ।


     এই বিভাগের আরো খবর