,

নবীগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃক ৩ দিনব্যাপী বইমেলার সমাপ্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃক ৩ দিনব্যাপী বইমেলার সমাপ্তি হয়েছে। গতকাল সমাপনীদিনে নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব। সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ভাষা সৈনিক এডভোকেট সৈয়দ আফরোজ বখত্। মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মদন মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবুল ফতেহ্ ফাত্তাহ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এডিসি জেনারেল ফারুক আহমদ, কবি আবুল কালাম ছোটন প্রমুখ। নবীগঞ্জ আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আমজাদ মিলন এবং মঞ্চ ও আলোকসজ্জা উপ-কমিটির সদস্য সচিব অলিউর রহমান অলির যৌথ সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শিরিন আক্তার, প্যানেল মেয়র-২ বাবুল চন্দ্র দাশ, প্যানেল মেয়র-৩ ফারজানা আক্তার পারুল, সংরক্ষিত কাউন্সিলর মোছা. রোকেয়া বেগম, সৈয়দা নাসিমা বেগম, ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. কবির মিয়া, ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সুন্দর আলী, ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাকির হোসেন, ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রাণেশ চন্দ্র দেব, ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জায়েদ চৌধুরী, নবীগঞ্জ জে. কে মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সালাম, সিনিয়র সাংবাদিক এস. আর চৌধুরী সেলিম, নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শিহাব আহমদ চৌধুরী, ইংল্যান্ড প্রবাসী শাহীন আহমদ, সমাজসেবক মোস্তফা আল হাদী, নবীগঞ্জ পলী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালক শফিকুর রহমান, নারী নেত্রী ছইফা রহমান কাকলী, সাংস্কৃতিক উপ-কমিটির সদস্য-সচিব প্রণব চন্দ্র দেব, মঞ্চ ও আলোকসজ্জা উপ-কমিটির আহ্বায়ক নীলকণ্ঠ দাশ সামন্ত দাশ নন্টি প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, নবীগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং পৌরসভার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। বিশিষ্ট ভাষা সৈনিক এডভোকেট সৈয়দ আফরোজ বখত তাঁর বক্তব্যে নবীগঞ্জ পৌরসভার মতো জায়গায় এতো মনোরম ও বৃহৎ পরিসরে বইমেলা করায় এবং এই ভাষার মাসে একজন ভাষা সৈনিক হিসেবে সংবর্ধনা প্রদান করায় তিনি পৌর মেয়র সহ পৌরবাসীর নিকট চিরকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রধান অতিথি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব তাঁর বক্তব্যে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নবীগঞ্জ পৌরসভা প্রথম বারের মতো অমর একুশে বইমেলার আয়োজন এবং উক্ত মেলায় একজন ভাষা সৈনিককে সংবর্ধণা প্রদানের মতো মহৎ কাজটি করায় তিনি নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরীর প্রশংসা করেন। তিনি নবীগঞ্জ পৌরসভায় শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য একটি শিশুপার্ক করার জন্য মেয়রের প্রতি আহ্বান জানান। মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে সিলেট মদন মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবুল ফতেহ্ ফাত্তাহ তাঁর বক্তব্যে অমর একুশের ইতিহাস ও তাৎপর্য বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না।’ এই কথাটি প্রাচীন ও বহুল প্রচলিত হলেও এটাই সঠিক যে, বই জ্ঞানের ভাণ্ডার এবং মেধা বিকাশের উৎস। তিনি প্রতি বছর বই মেলা অব্যাহত রাখার জন্য মেয়রের প্রতি অনুরোধ জানান। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পৌরসভা কর্তৃক অমর একুশে বই মেলা ও শিশু-কিশোরদের প্রতিভা বিকাশের জন্য চিত্রাংকন, রচনা ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজনকে তিনি স্বাগত জানান। তিনি বলেন- ‘একজন ভাষা সৈনিকের কাছ থেকে নবীগঞ্জ পৌরবাসী ভাষা আন্দোলনের বীরত্বগাঁথা বক্তব্য শুনলেন যা সত্যিই সৌভাগ্যের ব্যাপার । তিনি ভবিষ্যতে বই মেলা সময় সীমা বৃদ্ধির আহবান জানান এবং শিশু পার্ক করার পস্তাবকে যুক্তিক দাবী বলে মনে করেন। নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরী সভাপতির বক্তব্যে বলেন- আজ ফেইসবুক ও ইন্টারনেটের যুগে শিশু-কিশোরদের অবসর সময়ে বইয়ের প্রতি চোখ রাখার যেন সময় নেই। তাই এই বই মেলা যদি শিশু-কিশোরদের বইয়ের প্রতি কিছু হলেও আকৃষ্ট করে তবেই আমাদের আয়োজনের স্বার্থকথা। তিনি প্রধান অতিথি এনামুল হাবিব এবং বিশেষ অতিথি ফারুক আহমদ এর শিশু পার্ক করার প্রস্তাবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, সার্বিক সহযোগিতা পেলে ইনশাল্লাহ খুব শিঘ্রই নবীগঞ্জবাসীকে একটি শিশু পার্ক উপহার দিতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করেন। তিনি বলেন, আপনাদের সকলের সহযোগিতা নিয়ে অমর একুশে বই মেলা অব্যাহত রাখতে চাই এবং আগামীতে বই মেলা ৩দিনের অধিক করার চেষ্টা করব। পরিশেষে তিনি তিনদিন ব্যাপী অমর একুশে বই মেলা-২০১৭’র দেশ বরেণ্য অতিথিগণসহ মেলায় অংশগ্রহনকারী সকল প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও মেলা উদযাপন কমিটি, উপ-কমিটির সকল সদস্যবৃন্দদের পৌর পরিষদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানান। সমাপনী দিনে নবীগঞ্জের ১৬ জন কবি-সাহিত্যিকদের অমর একুশে বই মেলা-২০১৭ উপলে তাদের নতুন বই প্রকাশের জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। বইমেলা উদযাপন কমিটি ও বিভিন্ন উপ-কমিটির আহবায়ক ও সদস্য সচিবদেরর ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রণকারী শিশু-কিশোরদের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের বই ও কলম দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। মেলায় ২টি স্টলকে প্রথম ও দ্বিতীয় সেরা ঘোষণা করে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সবশেষে ঢাকার ও স্থানীয় শিল্পীদের দ্বারা মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।


     এই বিভাগের আরো খবর