,

নবীগঞ্জে যুদ্ধাপরাধ মামলার স্বাক্ষীর উপর হামলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জে যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামী সাবেক চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপ-কে গ্রেফতারের পর থেকে এলাকার চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তার পক্ষের লোকজন এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। তারা স্বাক্ষীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নানারকম হুমকি দিচ্ছে। গতকাল শুক্রবার সকালে গোলাপের লোকজন স্বাক্ষীদের বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে এক স্বাক্ষীর উপর হামলার ঘটনা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এব্যাপারে মামলার স্বাক্ষী কদর আলী বাদী হয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারন ডায়েরী করেছেন। গত ১০ এপ্রিল যুদ্ধাপরাধ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বহিস্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা আবুল খায়ের গোলাপকে আটক করে পুলিশ। নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ও হবিগঞ্জের ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার (আবুল খায়ের গোলাপের নিজ বাড়ি) লোগাও গ্রাম থেকে তাকে আটক কর হয়। স্থানীয় সূত্রে জানান যায়, পুলিশের যৌথ বাহিনীর অভিযানে তাকে আটক করে সরাসরি ঢাকা আর্ন্তজাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিয়ে যাওয়া হয়। মামলার স্বাক্ষী কদর আলী জানান গোলাপের ছেলে কাওসার আলী, লোগাও গ্রামের আলা মিয়া, ইয়ারুপ মিয়া, আইয়ূব আলী, জলিল মিয়া, আনছর আলীগংরা তার উপর হামলা করেছে। সকালে স্থানীয় বিয়ানীবাজারের একটি দোকানে মামলার স্বাক্ষী কদর আলী ও আব্দুর রউফকে পেয়ে আক্রমন করে। এসময় স্থানীয় লোকজন এদের উদ্ধার করলে হামলাকারীরা চরাও হয়। এনিয়ে দুপক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আলী আশরাফ একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। এব্যাপারে গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের ইনর্চাজ আলী আশরাফ জানান, দুপক্ষের মধ্যে বিরোধের জের ধরেই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। বিরোধীয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধাপরাধ মামলার স্বাক্ষী রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের এএসপি রাসেলুর রহমান জানান, আবুল খায়ের গোলাপকে যুদ্ধাপরাধি হিসাবে আটক করেছি। এমামলার কোন স্বাক্ষীকে হুমকি দেয়া হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। নবীগঞ্জ থানার ওসি এস এম আতাউর রহমান বলেন,আমাদের বিষয়টি ফোনে জানানো হয়েছে। আমি অফিসার পাঠিয়েছি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে সেটা তদন্ত করে দেখা হবে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৭ জুলাই গজনাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে একই উপজেলার নিশাকুড়ি গ্রামের আছকির উল্লাহর ছেলে মো. মানিক মিয়া বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন বিচারক। এ প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের তৎকালীন ওসি মো. মোক্তাদির হোসেন দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর