,

ডাক্তারবিহীন ইনাতগজ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র \\ রোগীদের চরম দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই

আশাহীদ আলী আশা \ নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দীর্ঘদিন যাবত ডাক্তার নেই। ফলে এলাকার দুস্থ, অসহায়, গরীব রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত বছর ইনাতগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ জাহাঙ্গীর আলমের নানা অনিয়ম, কর্তব্য কাজে অবহেলা, গাফিলতির কারনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেন ইনাতগঞ্জের মানুষ। এরপর ভুক্তভোগী মানুষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ ডাঃ জাহাঙ্গীর আলমকে বদলি করার পর তিনি দিরাই চলে যান। কিছু দিন পর আবার দেখা যায় তাকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। এর দীর্ঘদিন পর ইনাগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নবীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ডাঃ চম্পক কিশোর সুমনকে সপ্তাহে ৬ দিন অফিস করার শর্তে নিয়োগ দেয়া হয়। ডাঃ চম্পক কিশোর প্রায় সময় অনুপস্থিত থাকার কারনে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপস্থিত শত শত গরীব অসহায় রোগীদের আর্তনাদ শোনা যায়। নিরুপায় হয়ে ইনাতগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহকারী চিকিৎসক ডাঃ গৌরাপদ দাস দায়শারভাবে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে আসছিলেন। গত মে মাসে দুই মাসের ছুটি নিয়ে ডাঃ চম্পক কিশোর সুমন ট্রেনিং-এ চলে যান। এর এক সপ্তাহ পর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ডাঃ গৌরাপদ দাসকেও সিলেট বদলী করা হয়েছে। ফলে ইনাতগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ডাক্তার শুন্য হয়ে পড়েছে। ডাঃ গৌরাপদ দাস এক নাগারে দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত ইনাতগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে তার দক্ষতা ও মেধা দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। ইনাগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রেটি ইনাতগঞ্জ ইউপিসহ পার্শ্ববর্তী, দিঘলবাক ইউপি, পুর্ব বড় ভাকৈর ইউপি ও ইনাতগঞ্জের পার্শবর্তী জগন্নাথ পুর উপজেলার পাইলগাও ইউপির জনসাধারণের একমাত্র ভরসাস্থল এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। এখানে কোন স্থায়ী ডাক্তার নিয়োগ না দিয়ে সাথে সাথে এ কেন্দ্রের সহকারী ডাঃ গৌরাপদ দাসকে বদলী করা হয় কার স্বার্থে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ডাঃ ইদ্রিস আলীকে ইনাতগঞ্জে সপ্তাহে দুইদিন অফিস করার শর্তে নিয়োগ দিলেও তিনিও প্রায় সময় অনুপস্থিত থাকেন। এলাকার গরীব, অসহায় রোগী সাধারণের দুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। এছাড়াও এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর যাবত ফার্মাসিস্ট পদটি শুন্য রয়েছে। ফার্মাসিস্ট পদে কোন লোক না থাকায় সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার মূল্যবান ঔষধ বিতরনের এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি একজন অদক্ষ লোক দিয়ে চালানো হচ্ছে। চিকিৎসা হচ্ছে সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সরকার চিকিৎসা খাতে বিশাল অংকের বাজেট এবং ডাক্তারদের মোটা অংকের বেতন দিলেও অধিকাংশ ডাক্তাররা শহরমুখী হওয়ার কারণে তৃনমূলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ইনাগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সার্বিক সমস্যা সমাধান করে হাজারো জনসাধারণের দুঃখ দুর্দশা নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধবতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছেন এলাকার সচেতন মহল।


     এই বিভাগের আরো খবর