,

নবীগঞ্জে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কিশোরীকে ২ মাস ব্যাপী ধর্ষণ ॥ ইজ্জতের মূল্য ২০ হাজার টাকা

ছনি চৌধুরী ॥ ২ মাস ব্যাপী ধর্র্ষণ অতঃপর তরিগড়ি করে একটি মহল কিশোরীর ইজ্জতের মূল্যে নির্র্ধারণ করেছে ২০ হাজার টাকা। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিয়ে ও কাজের প্রলোভন দিয়ে একটি বাসাতে ২ মাস রেখে অপ্রাপ্ত বয়সী বাবা-মা হারা এতিম মেয়েকে ধর্র্ষণ করেছে এক ব্যাটারি চালিত রিক্সা চালক রবিউল ইসলাম (রবি) নামের এক লম্পট। ধর্ষনকারী রবি সম্পর্র্কে ওই মেয়ের চাচা হয়। জানাযায়, গত দুই মাস পূর্বে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মুকিমপুর গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে রবিউল ইসলাম রবি (২০) মৌলভীবাজার শাহ বন্দর এলাকায় মালিকের বাসায় থেকে ব্যাটারি চালিত রিক্সা চালাতো। পরবর্তীতে রবিউল গ্রামের বাড়িতে আসলে মুকিমপুর গ্রামের মৃত সুহেল মিয়ার মেয়েকে (১৫) কাজের প্রলোভন দিয়ে কিশোরীকে মৌলভীবাজার নিয়ে যায়। সেখানে প্রায় ২ মাস বিয়ের প্রলোভন দিয়ে নিয়মিত ধর্ষণ করে আসছিল। পরে মেয়ের নানী খবর পেয়ে কয়েকজন লোক নিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় মেম্বার ইকবাল হোসেনের নিকট ধর্ষণের অভিযোগ এনে বিচার প্রার্থী হয় কিশোরী ও তার নানী। উভয় পক্ষ ঘটনার বিবরণ প্রদান করলে ধর্ষণের দায় স্বীকার করে লম্পট রবি। পরে স্থানীয় পঞ্চায়েত যে সিদ্ধান্ত হয় তা মেনে নেবে বলে স্ট্যাম্প এর উপর স্বাক্ষর দিয়ে উভয় পক্ষ অঙ্গিকারনামা করে। পরে পঞ্চায়েত পক্ষ থেকে ৪ দিন পর নির্যাতিত কিশোরী ও অভিযুক্ত রবিকে আসার জন্য বলা হয়। কিন্তু ৪ দিন পর গত ২৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বর্তমান মেম্বার ও পঞ্চায়েত এর নিকট উপস্থিত না হয়ে সাবেক মেম্বার নজরুল মিয়াসহ ৩/৪ জন মাতব্বর মিলে সালাউদ্দিনের বাড়িতে উভয় পক্ষকে ডেকে এনে মেয়ের ইজ্জতের মূল্য নির্ধারণ করেন ২০ হাজার টাকা। উক্ত বৈঠকে উপস্থিত এক মুরব্বী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মেয়েটি সবাইকে বলে সে আমাকে বিয়ে করতে হবে না হয় আমি আত্মহত্যা করবো। এরপর আমি চলে আসি। একটি অসহায় মেয়ের ইজ্জতের মূল্য কিভাবে সাবেক মেম্বার ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করলেন ? এমন প্রশ্ন জনমনে। লম্পট রবিউল ৪ বছর পূর্বে বিয়ে করে এবং তার একটি সন্তানও রয়েছে। এমন কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকার কারণে পূর্বের স্ত্রী হুসনা বেগম তার সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি মৌলভীবাজার চাঁদনিঘাট সাবিয়া এলাকা চলে যান এবং রবিউল ইসলাম রবি’কে প্রধান আসামী করে নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। ধর্ষণের শিকার কিশোরী জানায়, আমাকে বিয়ের কথা বলে রবিউল দিনের পর দিন নির্যাতন করেছে। এখন সে আমাকে বিয়ে করবেনা বলে জানায়। আমি নিরুপায় হয়ে গ্রামের মেম্বারসহ মুরুব্বিয়ান এর কাছে গেলে তারা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখেন এবং তারা যে সিদ্ধান্ত দিবেন আমরা মেনে নিব বলে অঙ্গিকার করলে গ্রামের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি আমাকে ২০ হাজার টাকা দিবেন বলে আশ্বাস দেন এবং এনিয়ে আর বাড়াবাড়ি যাতে না করি সে জন্য সতর্ক করে দেন। আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইকবাল হোসেন জানান, ৪ দিন পর আমাদের পঞ্চায়েত এর কাছে আসার কথা ছিল কিন্তু পঞ্চায়েতকে অমান্য করে একদল কুচক্রী মহল এটা অন্য রকমভাবে শেষ করেছে। এই রকম ঘটনা এলাকার জন্য ক্ষতি বয়ে আনে। সাবেক মেম্বার নজরুল ইসলাম জানান, মেয়েটি আমাদের কয়েকজনের কাছে আসলে তাকে রবিউল বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবে বললে আমি তখন চলে আসি। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি এস.এম আতাউর রহমান জানান, আমি এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর