,

বাহুবলে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন সহকারী শিক্ষা অফিসার

বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগে হযবরল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি, কেজি স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষা অফিসের কর্মচারীর সাথে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার পদে নিযুক্ত করা হয়েছে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে। এমন বিভ্রতকর অবস্থায় সহকারী শিক্ষা অফিসার নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। এছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত ও মাতৃত্ব ছুটিভোগরতদেরও ভোটগ্রহণ কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে। পক্ষান্তরে অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নির্বাচন কাজের দায়িত্ব থেকে বাদ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার এ নিয়ে দিনভর উপজেলা নির্বাচন অফিসে তদবির ও দেন-দরবার চলেছে। এ উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামী ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ-বিএনপিসহ ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাহুবল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন সাকিব প্রবাসে গমন করায় পদটি শূন্য হয়। যথারীতি শূন্যপদে নির্বাচন কমিশন গত ২৪ সেপ্টেম্বর উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। এ উপ-নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনিত মোঃ তারা মিয়া (নৌকা), বিএনপি মনোনিত মোঃ চান মিয়া (ধানের শীষ), এনপিপি মনোনিত ডা. রমিজ আলী (আম) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফিরোজ মিয়া (তালা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, এ উপনির্বাচনে ৬১টি কেন্দ্রের ২৮৮টি বুথে মোট ১ লক্ষ ২৪ হাজার ১ শত ২০ জন ভোটার ভোগ প্রদান করবেন। ভোট গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে ৬১ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ২ শত ৮৮ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ৫৭৬ জন পুলিং অফিসার পদায়ন করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ কাজে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের আগামী ৩১ অক্টোবর ও ১ নভেম্বর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। ভোটগ্রহণ কাজে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৃজনবিদ্যাপিঠ নামে একটি ব্যক্তি মালিকানাধিন কেজি স্কুলের শিক্ষক বিশ্বজিত চন্দ্র শীল ও আইডিয়াল কেজি স্কুলের শিক্ষক মখলিছুর রহমানকে যশমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, উপজেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী হিসাব রক্ষক নাছির উদ্দিনকে বাহুবল সদর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার রিংকু দাশকে পুটিজুরী হাই স্কুল কেন্দ্রে সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে একই পদে পদায়ন করায় বিভ্রতকর অবস্থায় পড়েছেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার রিংকু দাশ। এ অবস্থায় তিনি উক্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। এছাড়াও একই পদে নিযুক্ত করা হয়েছে শিমুলিয়াম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সদ্য অবসরে যাওয়া প্রধান শিক্ষক অভিময় দেবকে। তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বড়ইউড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদাল মিয়াকে নিযুক্ত করা হয়েছে পাটানটুলা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাতৃত্ব ছুটিতে থাকা সহকারী শিক্ষিকা তাহমিনা হক টুম্পাকে রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পুলিং অফিসার পদে নিযুক্ত করা হয়েছে। আরো অনেকের ক্ষেত্রেই ঘটেছে একই অবস্থা। পক্ষান্তরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত অনেক শিক্ষককেই নির্বাচন কাজে নিযুক্ত করা হয়নি। এসব বিষয়গুলো নিয়ে গতকাল শনিবার দিনভর উপজেলা নির্বাচন অফিসে সংশ্লিষ্টদের তদবির ও দেন-দরবার করতে দেখা গেছে। এছাড়াও অভিযোগ পাওয়া গেছে, যশমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিযুক্ত সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার মখলিছুর রহমান (আইডিয়াল কেজি স্কুল) সক্রিয় একজন রাজনৈতিক নেতা। তিনি উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সরবরাহ করা তালিকার ভিত্তিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নির্বাচনী কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের দেয়া তালিকায় নাম থাকায় মাতৃত্ব ছুটিরত ও অবসরপ্রাপ্তদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এগুলো সংশোধন করা হচ্ছে। সহকারী শিক্ষা অফিসারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দিয়েছি। কৃষকলীগের সভাপতি (যশমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার) বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি, পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর