,

জাতীয় যুব দিবসে… ‘তারুণ্যের জয়ধ্বনি’ সমাজকর্মী ও সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী

আজ যুব দিবস। সারা দেশ জুড়ে যুব বয়সী’রা প্রত্যাশিত ভবিষ্যৎ’কে অভিবাদন জানিয়ে উদযাপন করবেন আজকের এই দিনটি। যুবকরা, দেশের মূলবান সর্ম্পদ। পৃথিবীতে বাংলাদেশ অন্যতম এক দেশ যেখানে মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ’ই যুব। এরা হচ্ছে তারুণ্যে আছে প্রাণশক্তি। বাংলাদেশের জাতীয় যুব নীতিমালা অনুর্যাযী যাদের বয়স ১৮-৩৫ বছর। তারাই তরুণ, তারাই যুব। যে বয়স নতুন বিপ্লবে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াবার কথা বলে। তারুণ্যের রক্ত টগবগ করে নতুন উচ্ছাসে-সৃষ্টির উল্লাসে। যে কারণে, যুব বান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার দ্রুত পরির্বতনসীল বিশ^ায়নের এই সময়ে যুবকদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা, জ্ঞান কর্মউপযোগী পরিবেশ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আজকের বাংলাদেশে নির্ভশীল জনসংখ্যার চেয়ে কর্মক্ষম জনসংখ্যা’ই বেশি। কোন দেশের জন্য এটা একটা বড় সুযোগ। আর এই সুযোগ’কে কাজে লাগাতে বর্তমান সরকার শিক্ষা কৌশলে প্রযুক্তিগত ও কারিগরি শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। যুব সমাজের কর্মসংস্থানের জন্য ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের যুগান্তকারী উদ্দ্যোগ ‘রূপকল্প ২০২১’। যা সকলের কাছে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নামে পরিচিত। বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ নতুন প্রজন্মের কাছে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ একটি বিপ্লবের নাম। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় এই বিপ্লবের স্বপ্নদষ্টা। সমৃদ্ধ নাগরিক হিসাবে যুব সমাজকে গড়বার প্রত্যয়ে বহু কাজ হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। যুব শক্তির মেধাকে কাজে লাগিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চান আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই বার্তা কোটি প্রাণ যুব সমাজকে, কর্ম চাঞ্চল্যে জাগিয়ে তুলেছে। যেন নতুন সূর্য উঠার এখনই সময়। ‘জাতীয় যুব দিবস’ উপলক্ষ্য করে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একজন সংসদ সদস্য ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের একজন সদস্য হিসেবে, বাংলাদেশের সকল যুবদের আমি অভিনন্দন জানাই।  বিপুল সম্ভবনা নিয়ে বাংলাদেশের যুব সমাজকে দক্ষ আধুনিক বিজ্ঞান মনস্ক নাগরিক হিসাবে গড়বার লক্ষ্যে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর যুব সমাজকে আতœকর্মসংস্থানের লক্ষে কাজ করেছে। ৩৪টি ট্রেড ও অগ্রাধিকার ৬টি প্রকল্পের মাধ্যমে। চলমান এই প্রকল্পগুলো হলঃ-  (১) প্রতিটি জেলায় যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন;- বর্তমানে দেশের ৩৫টি জেলার আবাসিক যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। অবশিষ্ট ১১টি জেলার বেকার  যুবক ও যুব মহিলাদের গবাদিপশু, হাঁস-মুরগী পালন, মৎস্যচাষ ও কৃষি বিষয়ে আধুিনক প্রযুক্তি ব্যবহারের কলাকৌশল সম্পর্কিত আবাসিক প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন ও প্রশিক্ষণ প্রদান এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। ১৪৬ কোটি ৩৬ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প গত ১৯-১০-২০১০ তারিখে একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়। পরবর্তীতে সংশোধনীর মাধ্যমে মোট প্রকল্প ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২১৪ কোটি ৫০ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা। (২) কর্মসংস্থান ও আতœকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্প;- যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আওতায় প্রশিক্ষণ সুবিধা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সম্প্রসারণ করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে এ প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা ভিত্তিক স্বল্প মেয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মসূচী যুবর্দে আত্মকর্মসস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক ভূমিকা পালন করায় বেকার যুবদের জন্য অধিক হারে প্রশিক্ষণ ও আত্মকর্মস্থানের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়ে অধিক গুরুত্বদিয়ে প্রতি বছর প্রতিটি উপজেলায় ৪৪০ জন বেকার যুবক ও যুবমহিলাকে দক্ষতাবৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। (৩) পরিবেশ বান্ধব সমাজ গড়তে ইনটিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট অব রিসোর্সেস  ফর পোভারটি এলিভিয়েশন থ্র কম্প্রিহেনসিভ টেকনোলজি (ইমপ্যাক্ট) ২য় পর্ব;- গবাদিপশু ও মুরগী পালন বিষয়ে আত্মকর্মসংস্থানমূলক প্রকল্প গ্রহণকারীদের প্রকল্পের উচ্ছ্বিষ্ট ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে বায়োগ্যাস উৎপাদন করে জ¦ালানী চাহিদা পূরণ করা ও আর্থিক সহায়তা এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য। প্রকল্পটি গত ২৬-০২-২০১৪ তারিখে ৩৭৯৪.৮৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়। (৪) শেখ হাসিনার জাতীয় যুব কেন্দ্র জোরদারকরণ ও আধুনিকীকরণ প্রকল্প;- ১৯৯৮ সালে “শেখ হাসিান জাতীয় যুব কেন্দ্র স্থাপন” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সাভারের স্থাপন করা হয় এই প্রতিষ্ঠানটি। বিশ^বিদ্যালয়ের মানে স্বতন্ত্র যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট হেসাবে গড়ে তুলা হচ্ছে ‘শেখ হাসিনার জাতীয় যুব উন্নয়ন কেন্দ্রকে’। ইতিমধ্যেই ‘শেখ হাসিনা জাতীয় ইনস্টিটিউট  আইন-২০১৭ নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন মন্ত্রীসভা। যার ফলে, ইনস্টিটিউটের পাঠ্যক্রম প্রশিক্ষন এবং কারিকুলাম নিধারণ করার জন্য আলাদা কমিটি গঠনের পাশা-পাশি এই প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা, ব্যাচেলার ও মাষ্টার সাটিফিকেট দেওয়া হবে। যা বেকার সমস্যা সমাধানে সবচাইতে কার্যক্ররী ভূমিকা পালন করবে। (৫) ৬৪টি জেলায় তথ্য প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও সক্ষমতা বৃদ্ধি;- দেশে-বিদেশে দক্ষ যুবদের কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান বৈদেশিক মুদ্রা আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা এবং শিক্ষিত বেকার যুবকদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণে সম্পৃক্ত করার লক্ষে এই প্রকল্পটি চলমান রয়েছে। (৬) টেকনোলজি এমপাওয়ারমেন্ট সেন্টার অন হুইলস ফর আগুারপ্রিভিলেজড রুরাল ইয়াং পিপুল অব বাংলাদেশ;- জেন্ডার সমতা অথাৎ নারীদের দক্ষতাবৃদ্ধি ও ক্ষুদ্র ঋন ব্যবস্থা ও এ প্রকল্পে অত্যাধুনিক কম্পিউটার সিস্টেম, ভ্রম্যমান ইন্টারনেট সুবিধা, মালটিমিডিয়া প্রজেক্টর, অডিও সিস্টেম ইত্যাদি দ্বারা সুসজ্জিত ভ্রাম্যমান আইসিটি ট্রেনিং ভ্যানের মাধ্যমে দেশের ০৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলার উপজেলা পর্যায়ে ঘুরে ঘুরে বেকার যুবদের কম্পিউটার ও ইন্টারনেট বিষয়ে এক মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। গ্রামে গ্রামে সুসজ্জিত ভ্রাম্যমান আইসিটি ট্রেনিং ভ্যানটি যুব সামাজে’র দক্ষতা অর্জনের কর্মপরিবেশকে উসাহ্যিত করে। দক্ষতা অর্জনের পাশা-পাশি তৃণমূল থেকে মেধাবী খেলোয়ার তৈরিতে ‘শেখ রাসেল মিনি স্টিডিয়াম’ প্রকল্পটি সুস্থ্য যুব সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। উপরের সবকিছুই একটি মানবিক বাংলাদেশ ও তার আদর্শীক নাগরিক গঠনের লক্ষ্যে চলমান কর্মসূচী। ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদান কারী ঐতিহ্যবাহী গণ-মানুষের রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম সত্য ইতিহাসের সামনে দাড়িঁয়েছে। এমন কর্মপরিবেশ এর আগে কখন সৃষ্টি হয়নি। আমাদের তারুণ্যের ইতিহাস বিশে^ সেরা। বীরের জাতি বাঙ্গালী জাতি। তিতুমীর, ইসা খাঁ, সিরাজ, সূর্য সেন, ক্ষদিরাম আমাদের সন্তান। তারা তাদের যৌবনকালকে বিরত্বেও মাধ্যমে রাঙ্গিয়েছেন। জীবনকে নিবেদন করেছেন, দেশেরে তরে। টুঙ্গিপাড়ার ‘খোকা মুজিব’ সমাজসেবার ব্রত নিয়ে করা রাজনীতি’তে ‘ভাষা আন্দোলন’ থেকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মহান নায়কে নিজেকে পরিনত করেছেন।
এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম।
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার, সংগ্রাম।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের এই ভাষণ; সকল যুগের সকল সময়ের, তরুণদেরকে ‘অন্যায়ে মাথা না করবার’ শিক্ষা দেয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের নতুন বিপ্লবে, অটুঠ চিত্তে মুক্তির দ্বীপ হয়ে, তারুণ্যে জয়ধ্বনি জয় বাংলা’র জয় জয়কার। আজকের তারুণ্য সৃষ্টির উল্লাসে রঙ্গিন। বর্তমান সরকার পরিবর্তনের সামনে যুবদের দাঁড় করিয়েছেন। সময় এখন তৈরি হবার। ‘দুদুল্যমান’ ‘হতাশা’ ‘নাজুক ইন্দীয়’কে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে হবে বহুদূর। গন্তব্যের চূড়ায় ফুঠে আছে, রঙ্গিন ও সুভাষিত ‘অর্জনের প্রত্যাশিত ফুল’। সেই ফুটন্ত ফুল তার হাতেই মানায়, যার প্রাণজুড়ে রয়েছে দেশপ্রেম। ‘বিশ^ জঙ্গীবাদ’ আমাদের তরুণদের ‘কালো নিশানা’র ছায়াতলে হাত ছানি দেয়। কিন্তু এই পথ বিপদগামীর পথ। যার শেষ প্রান্তে আছে দুসহ্য পরাজয়। জঙ্গীবাদ-সাম্প্রাদায়িকতা-সন্ত্রাস; মা-মাটি আর মাতৃভূমিকে ধ্ব্সং করে। একটি কর্ম লজ্জিত করে গোটা জাতিকে।  আজকের তরুণ, আজকের যুবক বায়ান্ন আর একাত্তরের গর্বিত ইতিহাসের সামনে। দেশপ্রেমী সাহসী পূর্ব পুরুষের উত্তরাধিকারী আজকের তরুণেরা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নতুন বিপ্লবের মূখোমুখী। এই বিপ্লবের চালিকা শক্তি হিসাবে তুরুণরাই এগিয়ে নিয়ে যাবে, আজকের বাংলাদশকে সমৃদ্ধির পথে। তুরুণরাই গড়বে দেশে, সোনার বাংলাদেশ। কাউকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাাওয়া যাবেনা। যারা প্রতিবন্ধী তারাও সমাজের অংশ। প্রতিবন্ধী’রা এখন সুযোগ পাচ্ছে, পাখা মেলে উনমুক্ত আকাশেঁ উড়বার। প্রতিবন্ধীদের সুস্থ্যভাবে বাচঁবার ও কর্মের অধিকার পাবার। এ বিষয়টি’কে বিশ^জুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছেন, তারুণ্যের এক প্রতীক, অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল। ‘যুবদের জাগরণ’ বাংলাদেশের উন্নয়ন’ এ শ্লোগানকে বাস্তবায়ন করতে গেলে সমাজের নড়বরে পিছুটানগুলোকে প্যারেক মারতে হবে যুব সমাজকেই। সমাজব্যধি ‘বাল্য বিবাহ’ ‘নারী নিযার্তন’ ‘ইভটিজিং’ ‘মাদক’ ‘সন্ত্রাস’ ‘জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা’কে আমরা ‘না’ বলবো। যুবকরাই ‘উন্নত মম শির’ । নতুন স্বপ্নবুনে, বিশ^ জয়ে’র দক্ষতা অর্জন করতে হবে আমাদের। আর এভাবেই বাংলাদেশের তারুণ্যের ‘সৃষ্টির উল্লাস’ একদিন ছড়িয়ে পড়বে, পৃথিবীর দিকে-দিকে।


     এই বিভাগের আরো খবর