,

বানিয়াচংয়ের একজন অজেয় চিরঞ্জীব বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎ জ্যোতি দাস

নিতান্তই সুভাগ্যের কারনে আমরা যারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ছাত্র-শিক্ষক, কৃষক-শ্রমিক, মুজুর, চাষী কিংবা শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ, কৌটনৈতিক ও ধর্মপ্রাণ মুসলমান একই সাথে যুদ্ধ করেছিলেন। যুদ্ধের সময় কে মুসলমান, কে কমিউনিষ্ট, কেবা পীর আউলিয়া নানা পথের নানা মতের মানুষ থাকলেও তাহারা একই বাংকারে যুদ্ধ করেছিলেন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা একই মাটিতে সবাই শায়িত আছেন। তাদেরকে স্বতন্ত্রভাবে সৎকারও করা যায়নি। যুদ্ধে সবার একই ভূমিকা ছিলনা। ৭১ এর যুদ্ধটি ছিল সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে, আমাদের শীর্ষস্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারাও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সদস্য ছিলেন এবং তাদের নেতৃত্বেই মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। কিন্তু সামরিক বাহিনীর সদস্য ছাড়াও অনেক সাধারণ মানুষও মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন। যেমন কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান কাদের ছিদ্দিকী। তিনি ভারতে না গিয়েও দেশের ভিতরে গণযুদ্ধাদের নিয়ে এক বিশাল বাহিনী গড়ে তুলে অনেক সম্মুখ যুদ্ধে পাকিস্তানিকে পরাস্ত করেছেন। তার অধীনে লক্ষাধিক নিয়মিত এবং অনিমিয়ত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কাদেরিয়া বাহিনীর নিয়ন্ত্রন কাদের ছিদ্দিকীর হাতে ছিল। তাকে ভারতীয় বাহিনী একজন জেনারেলের মর্যাদা দিত। জেনারেল ওসমানীর কাদেরিয়া বাহিনীর উপর নিয়ন্ত্রন ছিলনা। বরিশালের প্রখ্যাত বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজেই একটি বড় মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী গড়ে তুলে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। এই বাহিনীর নাম ছিল হেমায়েত বাহিনী এবং এই বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন হেমায়েত উদ্দিন। তিনি এখনও বেঁচে আছেন। এই বাহিনীর উপরও জেনারেল ওসমানীর নিয়ন্ত্রন ছিলনা। ছাত্র ইউনিয়নের তৎকালীন সাধারন সম্পাদক ছিলেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং তিনিও পাঁচ শতাধিক ছাত্র ইউনিয়নের হেড অব কমান্ড ছিলেন। কিন্তু তিনি জেনারেল ওসমানীর অধীনেই ছিলেন বলা যায়। নরসিংদীর বীর সন্তান ন্যাভাল সিরাজও নিজের উদ্দোগে একটি দুর্ধর্ষ বাহিনী গঠন করে ৭১ সালের যুদ্ধে যুদ্ধ করে ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন। তিনি দুঃখজনক ভাবে যুদ্ধের পরের বছর আওয়ামীলীগের একটি অংশের বিরাগভাজন হয়ে মারা যান। আমাদের সিলেটের অনেক মুক্তিযোদ্ধা জেনারেল ওসমানীর অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। এদের মধ্যে বেশ ক’জন সাবসেক্টর কমান্ডার ছিলেন এবং বিভিন্ন ধরনের খেতাবও পেয়েছেন। তাদের মধ্যে আমাদের হবিগঞ্জের বীর সন্তান দেওয়ান মাহবুবুর রহমান সাদী। তিনি ৪নং জালালপুর সাবসেক্টরের কমান্ডার ছিলেন। তিনি যুদ্ধের সময় বিভিন্ন কারনে আলোচিত ছিলেন। যেমন- তিনি তখন ছাত্র অবস্থায় সাবসেক্টরে যুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন যা একজন সামরিক অফিসারের চেয়ে কোন অংশে কম ছিলনা। একটি ঘটনা উল্লেখ করতে চাই, সাদী সাহেবের এলাকা ছিল ৪ নম্বর সাবসেক্টর এর অধিনায়ক হবিগঞ্জের বীর সন্তান জেনারেল চিত্তরঞ্জন দত্ত বীর উত্তম। জনাব সাদী সাহেবের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধা বাবুলের নেতৃত্বে একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছিল। পাকিস্তানী পাঠান এলএমজি নিয়ে একটি টিলার উপর এমনভাবে ব্রাশ ফায়ার করছিল যা সামনে দিক থেকে আক্রমন করা তো দুরের কথা মাথা তুলে দাড়াতে পারছিলেন না। জনাব সাদী সাহেবে মুক্তিযোদ্ধাদের এই পাকিস্তানী পাঠানকে ধরে আনার নির্দেশ দিলেন। মুক্তিযোদ্ধারা পিছন দিকে আক্রমন করে পাঠানের হাত থেকে এলএমজি কেড়ে নিয়ে ঠিলার নিচে ফেলে দিয়ে বেঁধে ফেললেন। পাকিস্তানী পাঠান বন্দী অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা বাবুলকে বলল, “আমাকে সামন থেকে গুলি কর, আমি পাঠান, আমি ভাগবনা”। যাই হোক সাদী সাহেব এই পাঠানকে হত্যা না করে প্রিজনারস অব ওয়ার হিসেবে ভারতীয় যৌথ বাহিনীর হাতে তুলে দিলেন। যুক্তরাজ্যের আই টিন টিভিতে এই পাঠানের বন্দী অবস্থার বর্ণনা দেখালে হাজার হাজার প্রবাসীরা উজ্জিবিত হয়ে যুদ্ধে অনেক অবদান রেখেছেন। যে বাঙ্গালীদের অবহেলা অবজ্ঞা করা হতো সেই বাঙ্গালীরাই পাঠানদের জীবিত ধরতে পারে এটি হচ্ছে একটি জলন্ত প্রমান। জনাব সাদী ভাইয়ের অধীনে হবিগঞ্জের অনেক মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন। যুদ্ধের পর জনাব সাদী ভাইকে বীর বিক্রম খেতাব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখান করেন বিনীতভাবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন সাদী ভাইকে ঢাকায় ডেকে এনে খেতাবটি গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেন। তখন জনাব সাদী ভাই বললেন, “আমরা আপনার আদেশে যুদ্ধ করে দেশকে শক্রমুক্ত করেছি, এর জন্য খেতাবের প্রয়োজন নেই, এই দেশের সন্তান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করে যুদ্ধ করে বেঁচে ফিরে আসতে পেরেছি এটাই আমার পরম পাওয়া”। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, সেই যে জনাব সাদী ভাই গণভবন থেকে চলে আসলেন কোন গোয়েন্দারাই তিনিকে শেখ সাহেবের সামনে নিতে সমর্থ হলনা। অর্থাৎ খেতাবের বিষয়ে কোন আপোষ হলনা। বাংলার এই বীর সন্তান যে কারনে বীর হিসেবে সম্মান নিতে রাজি হলেন না সে কারনটি লিখতে হয়। জনাব সাদী ভাই লন্ডনে আসলে আমি জিজ্ঞেসা করেছিলাম কেন আপনি খেতাবটি নিলেন না? উত্তরে তিনি বললেন, “মুক্তিযুদ্ধটি ছিল একটি গণযুদ্ধ, যুদ্ধে সব শ্রেণীর মানুষ অংশ গ্রহণ করেছিল, যুদ্ধ শেষে শুধু সামরিক বাহিনীর লোকদের খেতাব প্রাপ্য ছিল কি? সাধারন ঘর থেকে আসা যুদ্ধারা কি ইতিহাসে স্থান পাবেনা, যারা অকাতরে জীবন দিয়ে গেল? কেন এই অবিচার, আমি মনে করি অবিচার হয়েছে তাই খেতাবটি প্রত্যাখান করেছি”। নবীগঞ্জের প্রখ্যাত মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক বাবু বিধুভুষন রায় এবং ছাত্রলীগ নেতা স্বপন কুমার চৌধুরী এরা কি খেতাব পাওয়ার লোক ছিলনা? এখানে একটি প্রসঙ্গ উল্লেখ করতে চাই যে, ১৯৭১ সালে নভেম্বর মাসে শহীদ হন বানিয়াচুংয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎ জ্যোতি দাস। তিনি ৫ নম্বর সেক্টরের অধীনে একজন গ্র“ফ কমান্ডার ছিলেন এবং দাস পার্টির অধিনায়ক ছিলেন। এই দাস পার্টির অধীনে নবীগঞ্জ, আজমেরীগঞ্জ, শাল্লা, দিরাই ও বাহুবলসহ ভাটি অঞ্চল মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে রাখতে সমর্থ হন। এই অজেয় মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হওয়ার পর তাহার বীর কাহিনী প্রকাশ পায়। তিনি তীর বেগে দলবল নিয়ে আজমেরীগঞ্জের বদলপুর এসে উপস্থিত হন। এখানে এসে পুরো মুক্তিযোদ্ধা দল নিয়ে বিশ্বাস ঘাতক রাজাকার ও পাক বাহিনীর কবলে পড়েন। বীর যোদ্ধা জগৎ জ্যোতি দাস মুহুর্তের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেন যে, সকল মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্তানীদের হাতের মৃত্যুর চেয়ে আমি একাই মোকাবিলা করে মরে যাব। আর তাই সহযোদ্ধাদের আদেশ দিলেন কোন রকম বিল পেরিয়ে নিরাপদে চলে যেতে। এসময় তার সহযোদ্ধা ইলিয়াছ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে নিজে একটি এলএমজি হাতে শক্রদের উপর গুলি বর্ষণ শুরু করেন। বীর যোদ্ধা ইলিয়াছ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এদিকে জগৎ জ্যোতি দাস একাই এলএমজি হাতে গুলি চালাতে থাকেন। বিলের মধ্যে যুদ্ধ চলাকালীন সূর্য্য উদয় হলে বীর যোদ্ধা জগৎ জ্যোতি দাস শত্রুর অবস্থান দেখার জন্য মাথা তুলতেই পাকিদের একটি গুলি তার বুকে লাগে। সাথে সাথে বিলের পানিতে লুঠিয়ে পড়েন এবং এই অবস্থায় মারা যান। হারামী পাকিরা তার ম”ত দেহকে নানা ভাবে অত্যাচার করে আজমেরীগঞ্জের ভেড়ামহনার পাড়ে একটি গাছের সাথে পেরেগ মেরে গেঁথে রাখে। আর জলসূখা থেকে তার মা বাবাকে ধরে এনে তাদের চোখের সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎ জ্যোতি দাসের মৃত দেহের উপর অত্যাচার চালাতে থাকে, যাহাতে তার মা বাবা আরও বেশী কষ্ট পায়। সেই দিন ছিল বাজার বার, আর সেজন্য হাজার হাজার মানুষ জগৎ জ্যোতির দাসের মৃত দেহের উপর পাকিদের অত্যাচার দেখে ছিল। পরবর্তীতে ভেড়ামহনা নদীতে তার লাশ ভাসিয়ে দেয় পাক হানাদার ও রাজাকাররা। তখন ইতিহাসবিদরা এই জাতীয় বীরকে সম্মান দেখানোর জন্য ভেড়ামহনার জলকে পবিত্র জল হিসেবে আখ্যায়িত করেন। আমি নিজের কানে শুনেছি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এক ঘোষনার মাধ্যমে জগৎ জ্যোতি দাসতে সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। এই জাতীয় বীর মেঘনা নদীতে পাক বাহিনীর গানবোট সুকৌশলে ধ্বংস করে দেন। এই জাতীয় বীরকে যুদ্ধের পর বীরশ্রেষ্ঠ থেকে বীর বিক্রম উপাধিতে নামিয়ে আনা হয়। কেন তা করা হলো তা আজও অজানা। তবে পূর্বে উল্লেখিত জনাব মাহবুবুর রহমান সাদী ভাই বলেছিলেন অবিচার করা হয়েছে আর তাই জগৎ জ্যোতির সাথে করা এই ঘটনাই তার জলজ্যান্ত প্রমান। আমার জানা মতে জগৎ জ্যোতি দাস সুনামগঞ্জের একটি কলেজে অধ্যায়নরত অস্থায় ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। ছাত্রলীগ না করে ছাত্র ইউনিয়ন করার কারনে কি জগৎ জ্যোতি দাসকে বীর শ্রেষ্ঠ উপাধি থেকে বঞ্চিত করা হল? সেটা প্রশ্ন থেকে যায়। তবে এই বিষয়ে ভাল বলতে পারবেন তার অধীনে থাকা বানিয়াচংয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোবিন। তিনি কেন যে এই অবিচার মেনে নিলেন তা আমার জানা নাই। স্বাধীন দেশে যেখানে হবিগঞ্জে সবচেয়ে বেশী ছাত্র ইউনিয়নের লোক ছিল (আমিও তখন ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী ছিলাম) সেখানে কেন এর প্রতিবাদ এবং সুরাহা করা হলনা তা আজও অজানা থেকে গেল। কাউকে বড় বা কাউকে ছোট করার অভিপ্রায়ে নয় একজন নবীগঞ্জের শিক্ষক যিনি আমার লেখার একজন সুপাঠক তিনির অনুরোধে আক্ষেপভাবে লিখলাম। মুক্তিযুদ্ধে সে সমন্ত মুক্তিযোদ্ধারা সেক্টর কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন তাদের মধ্যে অজেয় হলেন কর্ণেল আবু তাহের। তার অধীনে ১১নং সেক্টরের পাটগ্রামে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল নুরনবী। সেক্টর কমান্ডার হিসেবে সম্মুখ যুদ্ধে ছিলেন অদ্বিতীয়। মেজর খালেদ মোশারফ, মেজর ডালিম এবং মেজর মুঞ্জুর ছিলেন সবচেয়ে মেধাবী। কিন্তু কিছু বিষয়ে বিতর্কিত ছিলেন জেনারেল ওসমানী, মেজর জিয়াউর রহমান এবং জেনারেল শওকত। এর কিছু কারন আমি লিখতে চাই। লন্ডনে জনাব জেনারেল ওসমানী সাহেবকে আমি উনার ম”ত্যুর আগে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “স্যার আপনি বলুন পকিস্তানীদের আত্মসমর্থন অনুষ্ঠানে কেন আপনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না? আপনার জুনিয়র অফিসাররা উপস্থিত থাকতে পারল, আপনি কেন নয়? কে আপনাকে বাধা দিয়েছিল? হেলিকপ্টারে করে সিলেটে যাওয়ার সময় কে আপনাকে গুলি করেছিল, কি ষড়যন্ত্র ছিল?” সর্বজন শ্রদ্ধেয় সারা জীবনের সত্যের সৈনিক উত্তরে বললেন, “সব কথা বললে গৃহযুদ্ধ হতে পারে আর তাই ঐসব কথা বলার সময় আসেনি”। সুপ্রিয় পাঠক, এই ঘটনার সপ্তাহ না যেতেই লন্ডনের একটি হাসপাতালে জেনারেল ওসমানী চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আর আলোচ্য ইতিহাসও চলে গেল উনার সাথে মাটির নিচে। কি এমন হতো আসল কথা বলে গেলে? যে গৃহ যুদ্ধের কথা বলে জনাব ওসমানী মুখ খুলেননি সেই গৃহ যুদ্ধ কি হয়নি? উনি বেঁচে থাকতেও হয়েছে, উনার ইন্তেকালের পরও হয়েছে এবং আরও হতে পারে। জেনারেল শওকত নামের লোকটি ছিলেন দু’মুখো সাপ। তিনি চোরকে বলতেন চুরি কর আর গৃহস্থকে বলতেন সজাগ থাক। লোকটি ভীষণ চালাক এবং অসহনীয়ভাবে অভিশ্বাসী। যত অভুত্থান বা ব্যর্থ অভুত্থান হয়েছে এর পিছনে কলকাটি নেড়েছেন জেনারেল শওকত। জেনারেল শওকত লন্ডনে রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত অবস্থায় আমি একদিন প্রশ্ন করেছিলাম, “দু’নৌকায় পা রাখাটা কি সঠিক?” তিনি উত্তরে বললেন, তুমি এসব রাজনীতি বুঝবেনা। আমি বললাম, স্যার আপনাকে ধন্যবাদ। তিনি বললেন, ধন্যবাদ কেন? আমি বললাম, রাজনীতির নাম যদি হয় দিনকে রাত আর রাতকে দিন বলা তা হলে এসব মুনাফিকী মার্কা রাজনীতিতে আমি নেই। পাশেই বসা ছিলেন “দৈনিক নতুন দিন” পত্রিকার সম্পাদক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী, তিনি আমাকে বললেন, এই লোকটির সঙ্গে কথা না বলাই সব চেয়ে ভাল। কারন এই লোকটির লজ্জা শরম নাই, থাকলে আমার বিরুদ্ধে কথা বলে পাশে বসে চা খেতনা। প্রিয় পাঠক, বঝুন একজন জেনারেল এর কি গুণ। যাই হোক এরশাদ সাহেব রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর এই ঘটনার সপ্তাহ খানেক পর উক্ত জেনারেল রাষ্ট্রদূত হিসেবে চাকুরী হারান। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে বিএনপির সময়ে খাদ্যমন্ত্রী হন। কিন্তু বড় ধরনের দুর্নীতি করার কারনে ২০০১ সালে খালেদা জিয়া এই জেনারেলকে আর কোন পদে অধিষ্টিত করেননি। প্রিয় পাঠক, আমি যা লিখেছি বুঝে শুনে লিখেছি। এর জন্য আমি ভীত নই, কেননা সত্য একদিন প্রকাশ হবেই। আমি কাহারও শত্রু নই, শুধু যাহা ঘটেছে তাহাই লিখার চেষ্টা করেছি মাত্র। ভুল-ত্রুটি মার্জনীয়।
আমার এই লেখাটি একজন সুপ্রিয় পাঠক আব্দুল বাছিত আজাদকে উৎসর্গ করলাম। আপনী দীর্ঘজীবি হউন।

দেওয়ান কাইউম
লেখক, গবেষক, যুক্তরাজ্য।


     এই বিভাগের আরো খবর