,

অতিথিদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করায় চাপা ক্ষোভ, সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা ছাড়া প্রকৃত মানুষ হওয়া যায়না -নবীগঞ্জে আনন্দ নিকেতনের অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি

শাহ সুলতান আহমেদ/মোঃ সুমন আলী খান ॥ বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি বলেছেন, সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা ছাড়া প্রকৃত মানুষ হওয়া যায়না। ভবিষ্যত প্রজন্মকে শুধু নিজেদের জন্য তৈরী না করে দেশ ও জাতির কল্যাণে তৈরী করতে হলে লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চা ও বেশি করে বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বহারা মানুষ তাঁর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। তাই তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে দেশের উন্নতির জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর আমলে দেশের উন্নয়ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমরা প্রত্যেকেই মানুষ হয়ে জন্মগ্রহন করি কিন্তু সবাই মনুষত্ব অর্জন করতে পারিনা। তাই মনুষত্ব অর্জনে সুস্থ্য সংস্কৃতি চর্চার কোন বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন, প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শাহ এস.এম কিবরিয়া ও প্রয়াত মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজী তারা দুজন শুধু সিলেটেরই নয় তারা দেশের সম্পদ ছিলেন। বর্তমান সরকার দেশের প্রতিটি উপজেলায় শিল্পকলা একাডেমী ভবন নির্মাণের প্রদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক উপজেলায় নির্মাণের কার্যক্রম চলছে। এক্ষেত্রে নবীগঞ্জকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

 

IMG_06555

 

তিনি গতকাল রবিবার দুপুরে নবীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন আনন্দ নিকেতনের ১৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। এর আগে তিনি আনন্দ নিকেতন নিজস্ব ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মজিদ খাঁন এমপি, হবিগঞ্জ-১, আসনের এমপি এম.এ মুনিম চৌধুরী বাবু, সিলেট-হবিগঞ্জ জেলার সংরক্ষিত আসনের এমপি এড. আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডাঃ মুশফিক হোসেন চৌধুরী, নবাগত হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির মুরাদ, এডিশনাল এসপি আ.স.ম শামছুল হক ভূঁইয়া, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড. আলমগীর চৌধুরী, কবি ফরহাদ হোসেন পরাগ, নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুল, সাধারন সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী ও ডাঃ তাপস আচার্য্য প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, আনন্দ নিকেতনের সাবেক সভাপতি ও দিনারপুর কলেজের অধ্যক্ষ তনুজ রায়।

 

এর আগে মন্ত্রী নবীগঞ্জ গনপাঠাগার পরিদর্শন করেন। মন্ত্রীর বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর অর্থমন্ত্রী মরহুম শাহ এস.এম কিবরিয়া ও সাবেক মন্ত্রী মরহুম দেওয়ান ফরিদ গাজীর স্মৃতি স্মরণ করলেও অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থাকা ফরিদ গাজীর তনয় শাহ নেওয়াজ মিলাদ গাজীকে অনুষ্ঠানে অতিথি সারিতে এবং তাকে বক্তব্য না দেওয়ায় ও অন্যান্য নেতাকর্মীদের যথাযত মুল্যায়ন না করায় আগত দলীয় নেতকর্মীসহ অনুষ্ঠানস্থলের লোকজনের মধ্যে চাপাক্ষোভ ও আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এছাড়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম, সাবেক এমপি এডভোকেট আব্দুল মোছাব্বির এর সুযোগ্য পুত্র জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. সুলতান মাহমুদ, সাবেক এমপি মরহুম ইছমত চৌধুরীর সুযোগ্য কন্যা ডাঃ নাজরা চৌধুরীকেও বক্তব্যের সুযোগ না দেওয়ায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এমনকি দুইদিন ব্যাপী আনন্দ নিকেতন উৎসব অনুষ্ঠানে আশানুরুপ লোকজন না থাকায় ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠনের বিগত ১৮ বছরের কার্যক্রমের গতির কোন দৃষ্টান্ত না হওয়ায় জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি অনুষ্ঠান শেষে উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলা ও জেলার দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা করেন।

 

উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ নুরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদ বিন-হাসান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাউল গনি ওসমানী, নবীগঞ্জ থানার ইনচার্জ এস.এম আতাউর রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. গতিগবিন্দ্র দাশ, এড. মুজিবুর রহমান কাজল, কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ মিলু, শাহ রেজভী আহমেদ খালেদ, রবিন্দ্র পাল, ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুন, আবু সিদ্দিক, বজলুর রশিদ, নজরুল ইসলাম, লন্ডন প্রবাসী ময়নুল আমীন বুলবুল, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এমদাদুর রহমান চৌধুরী, পৌর কাউন্সিলর জাকির হোসেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শামীম আহমেদ চৌধুরী, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আমিনুর রহমান চৌধুরী সুমন প্রমুখ। পরে মন্ত্রী বিকাল সাড়ে ৪টা হেলিকপ্টার যোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পরে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আনন্দ নিকেতন শিক্ষার্থীরা, সিলেটের নগরনাট, বাংলা গানেরদল বাউলা ও জলের গান পরিবেশন করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর