,

নবীগঞ্জে যুবলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাংচুর ॥ আহত অর্ধশতাধিক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জে যুবলীগের নব গঠিত কমিটিকে কেন্দ্র করে পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীদের পূর্ব শক্রতার জের ও পরিকল্পিত হামলায় সংখ্যালগু পরিবারের বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি সংঘর্ষের ঘটনায় মহিলা, বৃদ্ধসহ অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০ জনকে আশংকাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে ওই উপজেলার বড় ভাকৈর (পূর্ব) ইউনিয়নের আমড়াখাইড় গ্রামে। সূত্রে প্রকাশ, গত রবিবার দুপুরে উপজেলার বড় ভাকৈর (পূর্ব)  ইউনিয়নের ৩ ও ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের কমিটি গঠন করা হয়। এতে ওই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে সুকলেস দাশকে সভাপতি ও মতলিব মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক এবং ৫নং ওয়ার্ডে অশেষ চৌধুরীকে সভাপতি ও রিন্টু দাশকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করে দেন নবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাব্বি আহমেদ চৌধুরীসহ উপজেলা কমিটির কয়েকজন নেতা। এ কমিটিতে বাদ পরেন ওই এলাকার অনেক দলীয় নেতাকর্মীগণ। নবীগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা জানান, যুবলীগের কমিটি ঘোষণার জের ধরে পদ বঞ্চিত নেতৃবৃন্দের মধ্যে দেখা দেয় বিরূপ প্রতিক্রিয়া। এতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে গত রবিবার সন্ধ্যায় নব গঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দ ও পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে, পদ বঞ্চিতদের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউপি আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন নামের লোক। এ ঘটনার জের ধরে গতকাল সোমবার সকালে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ফলে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হন। এ সময় প্রায় ১৫টি বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে বলে আহতরা জানান। এ ঘটনার খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে আহতদের উদ্ধার করে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশংকাজনক অবস্থায় রাখাল বৈষ্ণব (৫৫), নিখিল দাশ (৫৬), হলদর দাশ (৬০), খোকন মিয়া (১৮), সাইকুল ইসলাম (৩০), রঞ্জিত দাশ (৪৫), মুক্তিজিৎ দাশ (৪৫), নিউটন দাশ (২২) সহ ১০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।  এতে আহতরা হলেন, অতুল দাশ (৫৩), রিপন তালুকদার (৩৬), মিন্টু চৌধুরী (২৮), অধির দাশ (৪৫), নিখিল দাশ (৪৫), মিলন হক (২৫), শায়েদ মিয়া (২২), তৌফিক মিয়া (২৫), দেলোয়ার মিয়া (২০), শাহিনুর মিয়া (২৫), এরমান মিয়া (৩৫), অর্জুন দাশ (৪০), দুলু দাশ (৪০), দেবলাল দাশ (৩০), ইন্দ্রজিৎ দাশ (৪৫) প্রমূখ। এ ছাড়াও অন্যান্য আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গৌতম কুমার দাশ জানান, যুবলীগের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ও পূর্ব শক্রুতার জের ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আলহাজ্ব ফজলুল হক চৌধুরী সেলিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যুবলীগের বর্ধিত সভায় বড় ভাকৈর (পূর্ব) ইউনিয়নের ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা না করার সিদ্বান্ত গৃহিত হয়। এর চেয়ে বেশি কিছু তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাব্বি আহমেদ চৌধুরী মাক্কু জানান, দুই তিন দিন আগে ওই ইউনিয়নের দুটি ওয়ার্ডে যুবলীগের কমিটি শান্তিপূর্ণ ভাবে গঠন করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনার সাথে যুবলীগের নেতৃবৃন্দের কোন সম্পৃক্ততা নেই। মূলত জামাত, বিএনপি’র এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ইসলাম উদ্দিন এর নেতৃত্বে সংখ্যালগু পরিবারের বাড়ী-ঘরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি এসএম আতাউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর