,

নবীগঞ্জে কাল বৈশাখীর তান্ডব ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, ফসলের ক্ষতি ॥ বজ্রপাতে প্রাণ ঝড়লো কৃষকের

মতিউর রহমান মুন্না ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে গতকাল শুক্রবার সকালে বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড় ও শীলা বৃষ্টিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুতের খুঁটি, শতাধিক কাঁচা-ঘরবাড়ি বিধ্বস্তসহ পাকা ও অর্ধ পাকা বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। অপরদিকে অঝোর ধারায় বৃষ্টির সাথে বজ্রপাতে এক কৃষকের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে। সূত্রে প্রকাশ, ওই দিন সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে নবীগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে কাল বৈশাখী ঝড় তুফান ও শীলা বৃষ্টি হয়। এতে ওই উপজেলার বড় ভাকৈর (পশ্চিম), বড় ভাকৈর (পুর্ব), কুর্শি, আউশকান্দি, ইনাতগঞ্জ, করগাঁও ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি,
বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, ফলন্ত বোরো ধানসহ নানাবিধ ফসলের ক্ষেত ও গাছপালা লন্ডভন্ড হয়ে যায়। গতকাল শুক্রাবারে বজ্রপাতে উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের রসরাজ সরকারের ছেলে রঙ্গরাজ সরকার ওরপে মেঘা সরকার (৫০) নামের এক কৃষকের প্রাণহাণী ঘটেছে। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, প্রায় ২৫/৩০টি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। এ বছর ঝড় তুফানের সাথে সাথে বজ্রপাতের ঘটনায় গত এক সপ্তাহে বজ্রপাতে কৃষক-যুবকসহ ৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে এবং আহত হয়েছেন আরো বেশ কয়েকজন। এ কারণে হাওড়ে কৃষককূল বোরো ধান কাটতে বজ্রপাতের আতঙ্কে রয়েছেন। একদিকে বজ্রপাতের আতঙ্কে হাওড়ে যাওয়া জীবনের ঝুকি অন্য দিকে পাকা ধান ঘরে তুলে আনতে বিলম্ব হওয়ায় শীলা বৃষ্টি নষ্ট করছে তাদের ফসল। এ ক্ষতি কৃষকরা মনে করছেন তাদের উপর মরার উপর খড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে। এ ব্যাপারে করগাঁও ইউনিয়নের কয়েক যুগের পুরনো কৃষক আব্দুর রউফ আবেগপূর্নভাবে বলেন, ভেবেছিলাম এ বছর আশানরূপ ফসল ঘরে তুলবো, কিন্তু বিভিন্ন প্রতিকূল ও বৈরী আবহাওয়ায় আশার মধ্যে ভাটা হয়েছে। বজ্রপাতে নিহত রঙ্গরাজের পরিবারের লোকজন জানান, ওই সময় রঙ্গরাজ পাশের বাড়ীর আত্মীয়ের ঘরের উপড়ে যাওয়া টিনের ছালা আনতে গেলে হঠাৎ বজ্রপাতের শিকার হন। জ্ঞানশুন্য অবস্থায় তাকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে ডাক্তার মৃত বলে ঘোষনা করেন। সবদিক মিলিয়ে ফসল, ঘরবাড়ি, গাছপালা ও বিদ্যুৎ খুঁটির ব্যাপক ক্ষতি সাধিত ও জন সাধারনের চলাচলের রাস্তায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে নবীগঞ্জ পৌর শহরতলীর বেশ কিছু রাস্তা পানিতে তলিয়ে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়েছে এবং বিভিন্ন এলাকার বাড়ি ঘরের আঙ্গিনায় পানি জমাট হয়ে রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট প্রখর হয়ে দাড়িয়েছে। শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ আসা যাওয়া করলেও গ্রামাঞ্চলে রয়েছে অন্ধাকার ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। কালবৈশাখীর এই তান্ডবে নবীগঞ্জ উপজেলার মানুষ শুধু আতঙ্ক নয় তারা জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছেন বলেও অনেকেই জানিয়েছেন। কারণ বৈরী আবহাওয়া অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে।


     এই বিভাগের আরো খবর