,

যত দ্রুত সম্ভব রেকর্ড সংশোধন করে শ্বশ্মানের জমি হিন্দুদেরকে বুঝিয়ে দেয়া হবে -বাহুবলের দ্বিগাম্বরে শ্বশ্মান পরিদর্শন শেষে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নির্দেশ

বাহুবল প্রতিনিধি ॥ যত দ্রুত সম্ভব রেকর্ড সংশোধন করে হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্বশ্মান ভূমি বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ। রেকর্ড সংশোধনের জন্য সেটেলমেন্ট অফিসের সঙ্গে আজ রোববার থেকে কাজ শুরু করবে বাহুবল উপজেলা প্রশাসন। গতকাল শনিবার সকালে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক বাহুবলের দ্বিগাম্বর বাজারের পাশে অবস্থিত শ্বশ্মান ভূমি পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের এমন নির্দেশনা দেন। জেলা প্রশাসক দখলকারী মুহিত মিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, শ্বশ্মান ভূমি একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এই জমি কেউ নিজের নামে নিতে পারে না। কাজেই আপনাকেও এই জমি ছেড়ে দিতে হবে। আপসে ছেড়ে দিলে ভালো। আইনী প্রক্রিয়ায় গেলে আপনার (দখলকার মুহিত মিয়া) সমস্যা হবে। তিনি স্থানীয় হিন্দুদের উদ্দেশ্যে বলেন, রেকর্ড সংশোধন হওয়ার পরপরই আমরা শ্বশ্মানভূমি হিন্দু সম্প্রদায়কে বুঝিয়ে দেব। হিন্দু সম্প্রদায় যেন শ্বশ্মানভূমিকে ঠিকঠাকভাবে রণাবেণ করে। বাহুবলের দ্বিগাম্বর বাজারের পাশে অবস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্বশ্মান ভূমি ১৯৫৬ সালের এস এ খতিয়ানে রেকর্ডভূক্ত হয়। কিন্তু সম্প্রতি ভূমি জরিপে মুহিত মিয়া নামের এক ব্যক্তি শ্বশ্মানভূমি নিজের নামে রেকর্ড করায়। এমন অপকর্মে হিন্দু সম্প্রদায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে। আন্দোলনে নামে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রচার হয়। এরপরই টনক নড়ে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে দখল হওয়া শ্বশান ভূমি পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক মাহুমুদল কবীর। এ সময় বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারি কমিশনার ভূমি এবং সার্ভেয়ারের মাধ্যমে দখল হওয়া শ্বশ্মানভূমির আকৃতি দেখেন। এরপর স্থানীয় দ্বিগাম্বর বাজারে সুধীজনদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসক। এ সময় সাংবাদিক অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য বলেন, হিন্দুরা আজ খুশি। কারণ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে হিন্দুদের পবিত্র শ্বশ্মানভূমি উদ্ধার হতে যাচ্ছে। পুটিজুরি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মুদ্দত আলী বলেন, এখানে শ্বশ্মান ছিল, থাকবে। শ্বশ্মানের ভূমি কেউ দখলে নিয়ে রাখতে পারে না। বর্তমান চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন তারা মিয়া বলেন, এই শ্বশ্মান ভূমি উদ্ধারে উপজেলা প্রশাসন বরাবরে চিঠি দিয়েছিলাম। আজ এর একটি পরিণতি হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জসীম উদ্দিন বলেন, এই দাগের জমিটি শ্বশ্মানের হলেও নতুন জরিপে ব্যক্তির নামে লিপিবদ্ধ হয়। নতুনভাবে হওয়া জরিপের চূড়ান্ত তালিকা না হওয়ায় সেটেলমন্টে অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে খুব দ্রুত রেকর্ডটি সংশোধন করা যাবে বলে তিনি জানান। রেকর্ড সংশোধনের জন্য উপজেলা প্রশাসনই যথেষ্ট বলে তিনি মন্তব্য করেন। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব রায়, পায়েল আচার্য্য, সংগঠনের বাহুবল উপজেলা শাখার সভাপতি নীহার রঞ্জন দেব, সহ-সভাপতি মিহির বনিক, নৃপেন্দ্র দেবনাথ, পুটিজুরি এস সি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক দুলন দেব, সাবেক শিক্ষক করুনা পাল প্রমুখ।


     এই বিভাগের আরো খবর