,

নবীগঞ্জের দিনারপুরে পাহাড়ের পাদদেশে শতাধিক পরিবারের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

মুষলধারে টানা বৃষ্টি হলেই ঘটে পাহাড় ধসের ঘটনা

মতিউর রহমান মুন্না ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুর পাহাড়ি অঞ্চলে কয়েক শতাধিক পরিবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছে। সম্প্রতি বৃষ্টিতে কয়েকটি পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটলেও কোন প্রানহানি হয়নি। তবে গত ৬ বছরে নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুর পরগনায় ও পাশ্ববর্তী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের পাহাড়ি এলাকায় মাটি চাপা পড়ে দুটি পরিবারের ১২জন সহ অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। লাগাতার মুষলধারে বৃষ্টি হলেই পাহাড় ধসের ঘটনা শুরু হয়। সিলেট বিভাগের মধ্যে নবীগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পাহাড় ধ্বসের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশী হয়। নবীগঞ্জের দিনারপুর এলাকার পানিউমদাতে একই পরিবারের ৬ জন ও শ্রীমঙ্গলের পাহাড়ে একই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যু এখনো এলাকার মানুষের কাছে আংকিত ঘটনা। এমনকি ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুরের শংকরসেনা গ্রামে পাহাড় কাটতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে ২ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর থেকে কিছুটা সর্তক আছেন ওই এলাকার মানুষ। এছাড়া বিছিন্ন ভাবে পাহাড় ধসে দুই উপজেলায় ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবুও ছিন্নমুল মানুষরা জীবন মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছেন। এদের পূর্ণবাসনে সরকারী উদ্দ্যেগ গ্রহন অতীব জরুরী বলে মনে করেন সচেতন মহল । সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারী আইনকে বৃদ্ধাগুলী দেখিয়ে পাহাড় ও টিলা কেটে উজার করছে প্রাভবশালীরা। গত এক যুগে দুটি উপজেলার হাজারের বেশী সরকারী ও ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় টিলা সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কেটে সমান করা হয়েছে। ফলে এসব পাহারটিলা ধ্বসে মৃত্যুর ঝুঁকি দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । দিনারপুর এলাকায় সরজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, পাহারটিলা বেশীর ভাগই কাটা হয়েছে আবাসিক প্রকল্প, বানিজ্যিক মার্কেট কিংবা ব্যক্তিগত ঘরবাড়ি তৈরী-মাটি ভরাটের জন্য। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক নির্মান কাজ শুরু হলে নবীগঞ্জের দিনারপুর অঞ্চলের পাহাড় কেটে উজার করে মাটি নেয়া হয়। এসব পাহাড় টিলা কাটার ফলে দ্রুত প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটছে। বিলীন হচ্ছে জীব-বৈচিত্র ও পরিবর্তন হচ্ছে ভূমি মাপের। এছাড়া পাহাড় টিলা কেটে পাদদেশে নির্মান করা হচ্ছে ঝুকিপূর্ণ বাড়ি-ঘর। ফলে বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে ঘটছে প্রাণহানি। পাহাড় টিলা নিধনের প্রতিবাদে এখন পর্যন্ত নবীগঞ্জে কোনো বড় ধরনের আন্দোলন হয়নি। আইনশৃংখলা রা বাহিনী মাঝে মধ্যে ট্রাক ও শ্রমিকদের আটক করলেও পাহাড় কাটা বন্ধ হচ্ছে না। কিন্তু আসল অপরাধিরা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। এর ফলে নবীগঞ্জ উপজেলার পরিবেশ পরিস্থিতি এখন হুমকির মূখে। পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে নবীগঞ্জের দিনারপুর এলাকার শত শত পাহাড় টিলা রক্ষায় প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করছেন সচেতন সমাজের লোকজন। এদিকে প্রশাসন বলছে, পাহাড় কাটার খবর পেয়ে একাধীকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। বর্তমানে পাহাড় কাটা বন্ধ আছে, পরবর্তিতে যদি কেউ কাটে তাহলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর