,

নবীগঞ্জে সাংবাদিক জুবেলের বাড়ীতে পুলিশের অভিযান, বাড়ি ঘর ভাংচুর, ছোট ভাই জাকারিয়া গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জ উপজেলায় বিসু মিয়া হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলা ছাড়াও অন্যান্য মামলার আসামী সাংবাদিক জুবেলকে না পেয়ে তার ছোট ভাই জাকারিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের বাবা-মাকে নির্যাতন ও  বাড়িতে ভাংচুর- লুটপাট চালানোর অভিযোগ উঠেছে। ওই এলাকায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন বাড়িতে তান্ডব চালায় পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ২৮ মে ২০১৬ সালে নবীগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সাথে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে বিসু মিয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহার নামীয় আসামি সাংবাদিক জুবেল আহমদ (২৪)কে খুঁজতে গত ২৯ মার্চ ২০১৮ তারিখ সকালে তার বাড়ীতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় জুবেলের কোন খোঁজ না পেয়ে তার বাবা আবদুল সহিদ (৫৯), মা মাহমুদা বেগম (৪৩) ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মারপিট করে। এ সময় তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে নগদ ৭০ হাজার টাকা নিয়ে নেয় এবং জাকারিয়াকে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে গাড়িতে তোলে নিয়ে যায়। এর পরপরই ওই এলাকার আরো বেশ কয়েকটি বাড়িতে অভিযানের নামে তান্ডব চালায় পুলিশ। এ সময় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা জমশেদ আলী ও নুরুজ্জামানসহ অন্তত ১০ আওয়ামীলীগ কর্মী পুলিশের সাথে অংশ নেয়। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করা হলে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন নবীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলাটির বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আসামিদের ধরতে গেলে তাদের পরিবারের সদস্যর পুলিশের কর্তব্যকাজের বাঁধা দিলে পুলিশ তাদের প্রতিরোধ করে। পরে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যস্থতায় বিষয়টি তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তি হয়েছে। এছাড়া তার ছোট ভাই মোহাম্মদ আলীও কয়েকটি মামলার পালাতক আসামী। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৮ মে নবীগঞ্জ শহরে নির্বাচনের পরের দিন পরাজিত ও ক্ষুদ্ধ জমশেদ আলীর নির্দেশে তার সন্ত্রাসী বাহিনী অপর দুই মেম্বার প্রার্থী এনাম উদ্দিন ও বিল্লাল মিয়ার সমর্থকদের সাথে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে বিসু মিয়া নামক এক আওয়ামী নেতা গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে নিহত হন। ঘটনার পরপর মামলার আসামী জয়নালসহ তিন নেতাকে আটক করলেও পরে অস্বীকার করে পুলিশ। জুবেলের খালাতো ভাই খালেদ আহমদ (২৭) জানান, বিসু মিয়া নিহত হওয়ার পর তার উপর মামলার খবর শুনার পর থেকেই সে পলাতক। ঐদিন রাতে অভিযানে পুলিশের হাতে জয়নাল, রাসেল এবং জাহিদুল আটক হওয়ার পর থেকে জুবেলকে অদ্যাবধি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার অনেক সাংবাদিক সহকর্মীরাও জানেন না সে এখন কোথায় আতœগোপনে আছে। তাদের পরিবার দীর্ঘদিন থেকে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বসবাস করছিলেন। দীর্ঘদিন পর গত সপ্তাহে বাড়িতে আসার পর আবারো পুলিশ ও আওয়ামীলীগের স্থানীয় সন্ত্রাসীরা হুমকি দিয়ে আসছে। জাকারিয়ার উপর পুর্বের কোন মামলা না থাকলেও গতকাল সোমবার আদালতে হাজির করার আগে তাকে ৩টি ভিন্ন ভিন্ন মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।


     এই বিভাগের আরো খবর