,

উরুগুয়ে-ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে সেমিতে ফ্রান্স-বেলজিয়াম

সময় ডেস্ক ॥ টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট। কোয়ার্টার ফাইনালের মতো কঠিন লড়াইয়েও ফেবারিটের মতোই খেলল ফ্রান্স। নিঝনি নভগোরদ স্টেডিয়ামে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেছে দিদিয়ের দেশমের দল। গোল দুটি করেন রাফায়েল ভারানে আর অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যান। ম্যাচের ৫ মিনিটেই ভালো একটি সুযোগ তৈরি করেছিল উরুগুয়ে। লুইস সুয়ারেজের পাস থেকে বক্সের মধ্যে বল পেয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ান স্টুয়ানি। ব্যর্থ হন এডিনসন কাভানির বদলে আসা এই স্ট্রাইকার। সপ্তম মিনিটে ফ্রান্সের লুকাস হার্নান্দেজের বক্সের বাইরে থেকে নেয়া বাঁ পায়ের শটও পোস্টের বাম দিক দিয়ে বেরিয়ে যায়। ১৪ মিনিটে বক্সের একদম মাঝ প্রান্তে হোসে গিমেনেজের হেড সহজেই ধরে ফেলেন ফ্রান্স গোলরক্ষক হুগো লসির। পরের মিনিটেই বড় আরেকটি সুযোগ তৈরি করেছিল ফরাসিরা। বেনজামনি পাভার্দের ক্রস থেকে বক্সে অলিভার জিরুর মাথা হয়ে বল পেয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপে, নিয়েছিলেন হেডও। কিন্তু সেটা একটুর জন্য বারের উপর দিয়ে চলে যায়। ১৯ মিনিটে দূর থেকে নেয়া পল পগবার জোড়ালো শটও বারের উপর দিয়েই গেছে। ৩৯ মিনিটে সবচেয়ে বড় ভুলটি করে বসে উরুগুয়ে। কোরেন্তিন তোলিসোকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন রদ্রিগো বেন্তাঙ্কুর। ফ্রি-কিক পায় ফান্স। গ্রিজম্যানের দুর্দান্ত সেট পিস থেকে বল পেয়ে বক্সের মধ্যে মাথা ছুইয়ে দেন রাফায়েল ভারানে। পোস্টের বাঁ কোনা দিয়ে বল ঢুকে যায় জালে (১-০)। ৪৩ মিনিটে গোল শোধ করার খুব কাছেই চলে এসেছিল উরুগুয়ে। লুকাস তোরেইয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ একটি হেড করেছিলেন মার্টিন ক্যাসেরাস, ফ্রান্স গোলরক্ষক লসির সেটা ডানদিকে ঝাপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন অসাধারণ দক্ষতায়। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে ফ্রান্স। দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধে মরিয়া হয়ে লড়েছে উরুগুয়ে। এরই মধ্যে ম্যাচের ৬১ মিনিটে শিশুসুুলভ এক ভুল করে বসেন গোলরক্ষক ফার্নান্দো মুসলেরা। বক্সের অনেক বাইরে থেকে শট নিয়েছিলেন গ্রিজম্যান, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড নিজেও হয়তো বেশি কিছু ভাবেননি। সেই শটটি সরাসরি উরুগুয়ে গোলরক্ষকের হাতে পড়েছিল। অপ্রত্যাশিতাবে সেটা ফসকে গিয়ে পার হয়ে যায় গোললাইন (২-০)। ৭৩ মিনিটে তোলিসোর বক্সের বাইরে থেকে নেয়া আরেকটি শট একটুর জন্য পোস্ট পায়নি। তিন মিনিট পর অলিভার জিরুর বাঁ পায়ের শট গোলপোস্টের বাঁ দিক দিয়েই বেরিয়ে যায়। ৮৯ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেয়া গ্রিজম্যানের আরেকটি ফ্রি-কিক পোস্টের উপরের দিকের খুব কাছে ছিল। দুই গোলে পিছিয়ে থাকা উরুগুয়ে যেন হারার আগেই হেরে গিয়েছিল। শেষপর্যন্ত ২-০ গোলে সহজ জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে দিদিয়ের দেশমের ফ্রান্স। ব্রাজিল-বেলজিয়াম: বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠলো ইউরোপের পরাশক্তি বেলজিয়াম। যে দলটি ৩৯২ দিন আগেও সর্বশেষ কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে পিছিয়ে ছিল সেই দলটির বিপক্ষেই বেলজিয়াম এমন আক্রমণাত্মক খেলা উপহার দেবে কেউ কি কল্পনা করেছিল? কিন্তু কল্পনাকেও হার মানিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথমার্ধে ব্রাজিলের জালে দুই গোল দিয়ে ০-২ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ইউরোপের পরাশক্তি বেলজিয়াম। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা উপহার দিতে থাকে বেলজিয়াম। রেড ডেভিলদের নয়জন ফ্রটবলারেরই উচ্চতা ছয় ফ্রটের উপরে। যেখানে মাঠের খেলার পাশাপাশি উচ্চতার সঙ্গেও খেলতে হয় ব্রাজিলকে। ম্যাচের ৮ মিনিটেই গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু কর্নার থেকে নেয়া নেইমারের শট থিয়াগো সিলভা গোলমুখের একদম সামনে থেকে পা ছোয়ালেও তা গোলবারে লেগে প্রতিহত হয়। এমন গোল মিসের খেসারত দিতে হয় ব্রাজিলকে ১৩ মিনিটে। কর্নার থেকে ডি ব্রুয়েনের ক্রসে কাসেমিরোর বদলে ব্রাজিল একাদশে সুযোগ পাওয়া ফার্নান্দিনহো আত্মঘাতী গোল করে বসলে দীর্ঘ ৩৯২ দিন পর কোনো ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। ২১ মিনিটে আবারও গোলের সুযোগ পেয়েছিল বেলজিয়াম। কিন্তু হ্যাজার্ডের কাছ থেকে ফাঁকা জায়গায় বল পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট ক্রস করে মিউনিয়ার। ৩০ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে নেইমারের গোলমুখে শট বেলজিয়ামের রক্ষণভাগের ফ্রটবলারের পায়ে লেগে প্রতিহত হলে কর্নার পায় ব্রাজিল। কিন্তু কর্নার থেকে সুবিধা করতে না পেরে উল্টো বিপদে পড়ে সেলেসাওরা। কাউন্টার এটাক থেকে ফেলাইনি দুর্দান্তভাবে বল দেন লুকাকুকে। মাঝমাঠ থেকে একাই বল টেনে নিয়ে দুজনকে কাটিয়ে ডান পাশে ফাঁকায় থাকা ডি ব্রুয়েনের কাছ পাস করলে ডি বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার বুলেট শটে গোল করে বেলজিয়ামকে ০-২ ব্যবধানে এগিয়ে দেন এই ম্যানসিটি তারকা। দুই গোলে পিছিয়ে থেকে ব্রাজিলের অনুপ্রেরণা এই বেলজিয়ামই। কেননা, জাপানের বিপক্ষে ০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেও জিতেছিল বেলজিয়াম। ৩৭ মিনিটে মার্সেলো ও নেইমারের জোড়া শট রুখে দিয়ে ব্রাজিলকে গোলশূন্য অবস্থায় রাখেন করতোয়া। প্রথমার্ধের বাকি সময় আর কোনো সুযোগ তৈরি করতে না পারলে ০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ব্রাজিল।


     এই বিভাগের আরো খবর