,

নবীগঞ্জে আপন ভাই ও মামাকে ষড়যন্ত্র করে নিঃস্ব করার অভিযোগ

সাজানো মামলা থেকে রেহাই পায়নি কলেজ পড়ুয়া ছাত্র

শাহ সুলতান আহমেদ ॥ নবীগঞ্জ উপজেলায় একটি পরিবারের ভাই-বোন মিলে আপন ভাই ও ভাবিকে নিঃস্ব করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। আপন ভাই, মামা, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের একের পর এক সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানি করছে হাফেজ ইকবাল আহমেদ ও তার বোন কলেজ পড়–য়া নামধারী জোনাকি সুলতানা নামের যুবতী। আলোচিত এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের এনাতাবাদ গ্রামে। সুত্রে প্রকাশ, ওই গ্রামের মৃত রুনু মিয়ার ৫ সন্তান। তারা হলেন, সেলিম আহমেদ, শাহীন আহমেদ, হাফেজ ইকবাল আহমেদ এবং দ্ইুকন্যা মোছাঃ লিপি বেগম এবং জোনাকি সুলতানা। পুত্রদের মধ্যে সেলিম ও শাহীন আহমেদ দীর্ঘদিন যাবত কুয়েতে অবস্থান করছেন। দেশে রয়েছেন হাফেজ ইকবাল ও দুই বোন লিপি ও জোনাকি সুলতানা। এর মধ্যে লিপি আক্তারকে প্রায় ১০/১২ বছর পুর্বে একই উপজেলার দীঘলবাক ইউনিনের দীঘলবাক গ্রামের মোঃ রায়হান আহমেদ এর কাছে বিয়ে দেয়া হয়। নামে মাত্র প্রায় দুই বছর ঘর সংসার করার পর পরকিয়া প্রেমের কারণে স্বামী বাধ্য হয়ে তাকে তালাক প্রদান করে। এর পর থেকে লিপি পিত্রালয়ে অবস্থান করছে। এরই মধ্যে ভাই হাফেজ ইকবাল আহমেদ দুই বোনদের নিয়ে এলাকার নিরিহ লোকজনদের হয়রানি করতে শুরু করে। প্রথমেই সে অর্থাৎ বিগত ২০১৭ইং সালে জোনাকি সুলতানাকে দিয়ে নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুনাল আদালত হবিগঞ্জে একটি মামলা দায়ের করে। এতে আসামী করা হয় ৫ জনকে। তারা ছিলেন আপন মামা ফরিদ মিয়া, খালাতো ভাই কলেজ পড়–য়া সাইফুল খাঁন। ঐ মামলায় দুই প্রতিবেশী আব্দাল ও বাবুল নামের যুবক প্রায় ১২ দিন কারাভোগ করেন। এর পর ইকবাল আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করে। এতেও আসামী করা হয় এলাকার নিরিহ ৫ জনকে। সম্প্রতি সময়ে ইকবালের বড় ভাই সেলিম আহমেদ কুয়েত থেকে দেশে আসেন। বাড়িতে আসার পর তাকে বড় অংকের টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে হাফেজ ইকবাল ও দুই বোন। এতে সেলিম অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের মধ্যে বিরোধের সুত্রপাত হয়। এ নিয়ে সেলিম আহমেদ এর স্ত্রী মোছাঃ ফৌজিয়া আক্তার (রিতা) ও স্বামী সেলিম আহমেদকে পিঠিয়ে আহত করে ইকবাল এবং তার বোন লিপি ও জোনাকি। এ ঘটনায় ফৌজিয়া আক্তার বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনাকে অন্যভাবে প্রবাহিত করতে হাফেজ ইকবাল ও তার বোনেরা মিলে শুরু করেন নাটকীয় ঘটনা। তারা এলাকায় প্রচার করতে থাকে তাদের বড় ভাই সেলিম আহমেদ তাদেরকে মারপিঠ করে আহত করেছে। এ সংবাদ সাংবাদিকদের কাছে আসলে সংবাদিকরা গতকাল শনিবার বিকেলে ওই গ্রামে তাদের বাড়িতে যান। গিয়ে দেখেন ঘরে তালা ঝুলানো। তখন খুঁজতে থাকেন প্রতিবেশীদের। সাংবাদিকদের দেখে প্রতিবেশী লোকজন জড়ো হতে থাকেন। সত্তর বছর বয়স্ক থেকে শুরু করে দশ বছরের ছেলে মেয়েরা ইকবাল ও তার দু’বোনের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা জানান, হাফেজ ইকবাল তার বোন জোনাকি সুলতানা ও লিপি আক্তারের অত্যাচারে আপন ভাই, মামা ও বিভিন্ন আত্মীয় স্বজন যেভাবে অতিষ্ট তেমনিভাবে গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকজন তাদের নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন। অনেকের সাথে কথা বলতে গিয়ে বেড়িয়ে আসে থলের বিড়াল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রতিবেশী মহিলা জানান, হাফেজ ইকবাল তার বোনদের নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত সিন্ডিকেট করে অন্যায়ভাবে লোকজনদের ফাঁসাতে ব্যস্ত রয়েছে। তার বোন জোনাকি সুলতানার মামলা থেকে কলেজ পড়–য়া ছাত্রসহ কেহই রেহাই পায়নি। ১০ বছরের এক শিশু বাচ্চা জানায়, হাফেজ ইকবাল ও তার দুইবোন প্রায়ই প্রতিবেশীদের নির্যাতন করে আসছে। কারনে-অকারণে তারা প্রতিবেশীদের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের অত্যাচার ও নির্যাতনের কবল থেকে তারা রেহাই চাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সত্তর বছরের উর্ধ্বে এক প্রতিবেশী সাংবাদিকদের জানান, হাফেজ ইকবাল ও তার দুই বোন লিপি ও জোনাকি সুলতানাকে দিয়ে এমনভাবে অত্যাচার শুরু করছে, মনে হচ্ছে মান সম্মান নিয়ে এলাকায় থাকা যাবেনা। তাদের অত্যাচার ও নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর