,

বাহুবলে যুবকের ছুরিকাঘাতে নিহত ১ ॥ আহত ২

মনিরুল ইসলাম শামিম ॥ বাহুবলে শাহনেওয়াজ আলম নামে এক যুবকের ছুরিকাঘাতে ওয়াহিদ মিয়া (৪০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তার সহহোদর সহ ২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার রাত ৮টায় উপজেলার পুটিজুরী বাজারে। নিহত ওয়াহিদ মিয়া পুটিজুরী ইউনিয়নের মীরেরপাড়া গ্রামের আব্দুল্লাহ’র পুত্র। প্রত্যদর্শীরা জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার পুটিজুরী বাজারের ফুটপাতের স্টলে শেওড়াতুলী গ্রামের মৃত আব্দুল মনাফের পুত্র শাহ নেওয়াজ হোসেন উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে মীরেরপাড়া গ্রামের আব্দুল্লাহর পুত্র ওয়াহিদ মিয়া (৪০) ও তার সহোদর কাওসার মিয়া (২৫) কে। এ সময় চা স্টল মালিক একই গ্রামের আব্দুল আলীও (৩৭) ছুরিকাহত হন। তাৎক্ষণিক স্থানীয় লোকজন তাদের বাহুবল হাসপাতালে নিয়ে এলে ওয়াহিদ মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন এবং কাওসার ও আব্দুল আলীকে সিলেট প্রেরণ করেন। প্রত্যদর্শী ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়নের শেওড়াতুলি গ্রামের গরু ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন (৪৫)-এর সাথে স্বস্তিপুর গ্রামে গরু কেনাকে কেন্দ্র করে নিকটবর্তী স্নানঘাট ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলমের কাছে নাজেহাল হন। বিষয়টি জানার পর নিজাম উদ্দিনের স্বজন একই গ্রামের মৃত আব্দুল মনাফের পুত্র শাহনেওয়াজ হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলমের উপর। এ বিরোধের জের ধরে ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলমকে মারধোর করতে শাহনেওয়াজ হোসেন ছুরি নিয়ে পুটিজুরী বাজারে অবস্থান নেয়। গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে শাহনেওয়াজ হোসেন পুটিজুরী বাজারের ফুটপাতে স্থাপিত আব্দুল আলীর চা স্টলে বসে চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলমকে গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে অতিউৎসাহে মীরেরপাড়া গ্রামের আব্দুল্লাহর পুত্র দুবাই প্রবাস ফেরত ওয়াহিদ মিয়া (৩৫) প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ শাহনেওয়াজ হোসেন ছুরিকাঘাত করে ওয়াহিদ মিয়াকে। সাথে সাথে এগিয়ে আসেন স্টল মালিক আব্দুল আলী (৩৭) ও ওয়াহিদ মিয়ার ভাই কাওসার মিয়া (২৫)। এ সময় আব্দুল আলী এবং কাওসার মিয়াও ছুরিকাহত হন। অপর একটি সূত্র জানায়, একটি রাস্তা সংষ্কারের ঠিকাদারী করছিলেন মীরেরপাড়া গ্রামের ওয়াহিদ মিয়া। এ ঠিকাদারীর ভাগ চাইছিলেন শেওড়াতলী গ্রামের শাহনেওয়াজ হোসেন। এ নিয়ে উভয়ের মাঝে বিরোধ চলছিল। গতকাল শনিবার রাত ৮টায় এ নিয়ে আব্দুল আলীর স্টলে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে শানেওয়াজ হোসেন একে একে ছুরিকাঘাত করে ওয়াহিদ মিয়া, তার সহোদর কাওসার মিয়া ও স্টল মালিক আব্দুল আলীকে। ঘটনার পর ওহাহিদের মৃত্যুর খবরে মীরেরপাড়া গ্রামের লোকজনের মাঝে শোক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ লোকজন কয়েক দফা পুটিজুরী বাজারে উঠে প্রতিপক্ষের লোকজনকে খোজাখুজি করে। এ সময় আরো দু’ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। রাত ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাহুবল সার্কেলের সিনিয়র এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরী, বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলী ও ইন্সপেক্টর (তদন্ত) গোলাম দস্তগীরসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়েছেন। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে স্নানঘাট ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলম বলেন, শাহনাজ মিয়া পুটিজুরী ইউপি চেয়ারম্যান শামছুদ্দিন তারা মিয়ার ভাগিনা। তার সাথে আমার কোন বিরোধ নেই। শুনেছি রাস্তা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রাত ১টার দিকে বাহুবল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী ওয়াহিদ মিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, একটি রাস্তার ঠিকাদারী নিয়ে শাহনেওয়াজ ও নিহত ওয়াহিদ মিয়ার মাঝে বিরোধ চলছি। এ বিষয়টি নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতের ঘটনাটি ঘটে।


     এই বিভাগের আরো খবর