,

অরবিটের চিকিৎসক খায়রুল বাশারের প্রতারণার ঘটনায় তদন্ত কমটি গঠন

হাসতে হাসতে চিকিৎসক বলছিলেন- ‘মার ইনজেকশন-টিনজেকশন মার’

৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ

মতিউর রহমান মুন্না \ নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজারে অবস্থিত অরবিট প্রাইভেট হসপিটালের শিশু-কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চিকিৎসক খায়রুল বাশার কর্তৃক সুস্থ শিশুকে অসুস্থ্য বানিয়ে উন্নত চিকিৎসার নামের আরেক প্রাইভেট হসপিটালের চিকিৎসকের কাছে পাঠানোর নামে প্রতারণার খবর দৈনিক হবিগঞ্জ সময়সহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচারিত হলে সংবাদটি হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি এড. আবু জাহিরের নজরে আসে। তিনি বিষয়টি গত রোববার হবিগঞ্জ জেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভায় উত্তাপন করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হবিগঞ্জের সিভিল সার্জনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। এ নিয়ে সিভিল সার্জন ডাঃ সুচিন্ত চৌধুরী ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করার জন্য নবীগঞ্জ উপজেলা পঃ পঃ কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে নবীগঞ্জ উপজেলা পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম মোস্তফা গতকাল সোমবার সকালে নবীগঞ্জ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্দুস সামাদকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ইফতেখার আলম চৌধুরী ও মেডিকেল অফিসার ডাঃ জান্নাত আরা চৌধুরী। ওই কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিশু জিবার মা শিরিনা আক্তার অরবিট হসপিটালের চিকিৎসক খায়রুল বাশারের প্রতারণার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠন করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমি চাই সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি দেয়া হোক। যাতে ভবিষ্যতে আর কোন শিশু এরকম প্রতারণার শিকার না হয়। তিনি আরো জানান, এ ঘটনার পর থেকে শিরিন ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাকে বিষয়টি নিয়ে প্রতিনিয়ত মীমাংসা করার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে একটি কুচক্রি মহল।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশে ডাঃ আব্দুস সামাদকে সভাপতি করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দিয়েছি এবং আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
তদন্ত কমিটির প্রধান ডাঃ আব্দুস সামাদ বলেন, আউশকান্দি অরবিট হসপিটালের চিকিৎসক ডাঃ খায়রুল বাশারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে আমাদের স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা আমাকে প্রধান ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। আমরা সরেজমিনে তদন্ত করে সময় মতো প্রতিবেদন দাখিল করবো। তদন্ত সম্পন্নের আগে কাউকে দোষী বলা যাবে না। তবে তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই তাকে শাস্তি পেতে হবে।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন মিঠু বলেন, অরবিট হসপিটালের চিকিৎসকের প্রতারণার বিষয়টি নবীগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এছাড়াও তিনি আরো বলেন- উপজেলায় আরো কয়েকটি হাসপাতালের চিকিৎসার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তিনি আরও বলেন যে বা জারাই এ চিকিৎসকের প্রতারনার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে তাদেরকে চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবী জানাচ্ছি। ইতিপূর্বেও নবীগঞ্জের স্বাস্থ্য বিভাগের অনেক ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও পরবর্তীতে সংশ্লিষ্টদের সঠিক বিচার না হওয়ায় অসাধু চিকিৎসকরা নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আশা করেন এই ঘটনায় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. সুচিন্ত চৌধুরী বলেন, বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট পেশ করবেন। তিনি আরো বলেন, তদন্তে কোন চিকিৎসক দোষী হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর