,

ক্রিম কি আসলেই ত্বকের রং ফর্সা করে?

জানা-অজানা ডেস্ক :: বিশ্বের অনেক দেশের মতো ত্বকের সুরক্ষা এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নানা রকমের প্রসাধনী ব্যবহার করা হয়ে থাকে বাংলাদেশেও। এসব পণ্যে নানা ধরনের রাসায়নিক মিশ্রিত থাকার কারণে বিশ্বজুড়েই প্রসাধনী ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

কারণ এসব রাসায়নিক অনেকের ত্বকের জন্য কোন সুরক্ষা বা সৌন্দর্য বৃদ্ধি তো করতে পারেই না, বরং সেটি ক্ষতিকরও হয়ে ওঠতে পারে। বিশেষ করে রং ফর্সাকারী ক্রিমগুলো নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে।

ক্রিম কি আসলেই ফর্সা করে?

চিকিৎসকরা বলছেন, আসলে কোন ক্রিমই শরীরের রংকে ফর্সা করতে পারে না। কারণ ত্বকের রঙের সাথে শরীরের ভেতরের অনেক উপাদান জড়িত রয়েছে।

তারা বলেন, আমরা কখনোই গায়ের রংকে সাদা করতে পারি না, উজ্জ্বল করতে পারি। আমাদের ত্বকের স্বাভাবিক যে মেলানোসাইড সেলগুলো আছে, যা রঞ্জক তৈরি করে, সেটাই আমাদের গায়ের রংটা ধারণ করে। এটা ত্বক রক্ষায় অনেকভাবে কাজ করে।

এখন বাজারে অনেক সস্তা ক্রিম এসেছে, যেগুলোয় অনেক ভারী রাসায়নিক এবং ক্ষতিকারক পদার্থ রয়েছে। এগুলো খুব তাড়াতাড়ি হয়তো ফর্সা বা সাদা ইফেক্ট দিয়ে দেয়, কিন্তু কিছুদিন পরেই সেটা বরং ত্বকের জন্য নানা ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে।

যেমন ত্বকটা হয়তো খুব লাল হয়ে ওঠে, জ্বলছে বা রোদে যেতে পারছে না। বাংলাদেশের বাজারে যেগুলো পাওয়া যায়, তার বেশিরভাগ ক্রিমই আসলে এরকম।

আমাদের উচিত, নিজেদের যে স্বাভাবিক সৌন্দর্য রয়েছে, সেটাকেই ঠিকভাবে রাখা এবং যত্ন করা। মনে রাখতে হবে, সাদা হয়ে যাওয়া সম্ভব না। তবে কিছু মেডিকেশন আছে যেগুলোয় ত্বক হয়তো উজ্জ্বল হয়।

কিন্তু যেভাবে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে অহরহ শরীরের ত্বক ফর্সা করার বিজ্ঞাপন বা ঘোষণা দেয়া হয়, তাহলে সেগুলো কতটা বিশ্বাসযোগ্য?

চিকিৎসকরা এক্ষেত্রে বলছেন, মেডিকেল পণ্যের ওপর নানা নজরদারি আছে, আইন আছে। কিন্তু কসমেটিকস পণ্যের ক্ষেত্রে সেটা নেই। সে কারণে ওরা যা খুশি তাই, অনেক আজেবাজে জিনিসও কনজ্যুমার পণ্য হিসাবে বাজারে ছাড়া হয়। যেমন ফর্সা করার সস্তা ক্রিম তো অবশ্যই ত্বকের ক্ষতি করবে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া একজনের কথা শুনে আরেকজন পণ্য ব্যবহার করেন। কিন্তু একেকজনের ত্বক একেক রকম হওয়ায় কারো কারো জন্য সেটা চরম ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।

বাংলাদেশের বাজারে প্রসাধনীর কি অবস্থা?

বাংলাদেশের যেসব প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর বেশিরভাগেই ক্ষতিকর বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যা স্বাস্থ্য ও পরিবেশর জন্য ক্ষতিকর বলে জানিয়েছে এনভায়রনমেন্ট এন্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) নামের একটি বেসরকারি সংস্থা।

তারা বাংলাদেশের নামীদামী ৩৩টি প্রসাধনী পণ্য পরীক্ষা করে সবগুলোয় ক্ষতিকর উপাদানের অস্তিত্ব পেয়েছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশের হেয়ার জেল, বেবি লোশন, বিউটি ক্রিমসহ বিভিন্ন প্রসাধনীতে আর্সেনিকসহ বিভিন্ন রাসায়নিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এমনকি শিশুদের জন্য ব্যবহৃত হয়, এমন প্রসাধনীতেও বিষাক্ত উপাদানের অস্তিত্ব রয়েছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।

তারা বলছে, নামীদামী পণ্যগুলোর মধ্যেই তারা এসব উপাদান পেয়েছে, তাহলে কমদামী অন্য পণ্যের কি অবস্থা, তা সহজেই অনুমান করা যায়।


     এই বিভাগের আরো খবর