,

১০০ প্রধান শিক্ষককে শোকজ নোটিশ

সময় ডেস্ক :: ঝিনাইদহ জেলায় ১০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। যথাসময়ে স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (স্লিপ) টাকার হিসাব না দেওয়ায় জেলা প্রথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোঃ আক্তারুজ্জামান এই কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন।

তিনি এ খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানান, ৬ উপজেলার মধ্যে শুধুমাত্র হরিণাকুন্ডু উপজেলা থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব পাওয়া গিয়েছে এবং এর সঙ্গে দেওয়া হয়েছে ৪০ হাজার টাকার বিল ভাউচার।
তবে সারা জেলায় স্লিপ গ্রান্ডের টাকা কিছু না কিছু নয় ছয় হয়েছে বলেও ওই কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ জেলায় স্লিপ প্রকল্পের আওতায় ৯০৭টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২১৪টি, কালীগঞ্জে ১৫১টি, কোটচাঁদপুরে ৭৪টি, মহেশপুরে ১৫৩টি, শৈলকুপায় ১৮০টি ও হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ২৩৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ সব বিদ্যালয়ে গত জুনের আগে ৩ কোটি ৬২ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। প্রতিটি বিদ্যালয়ে দেওয়া হয় ৪০ হাজার টাকা। বিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন কর্মসুচি বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির যৌথ অ্যাকাউন্টে এই টাকা দেওয়া হলেও অধিকাংশ স্কুলে ভুয়া বিল ভাউচার জমা দিয়ে টাকা আত্মসাত করার গুরুতর অভিযোগ ওঠে।
স্লিপ প্রকল্পের বরাদ্দ ও খরচ করানো সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘অগ্রিম হিসেবে উত্তোলিত স্লিপ গ্রান্ডের অর্থ কোনোরূপ বিলম্ব না করে দ্রুততার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাব নম্বরে স্থানান্তর করতে হবে এবং ৩০শে জুনের মধ্যে স্লিপ প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে।’

কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভুয়া ভাউচার ও প্রত্যায়নপত্র জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। কোন কাজ করা হয়নি। মহেশপুরের ১৫ নং কুশাডাঙ্গা সরকারী প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোর্শেদা খাতুনকে স্কুল পরিচালনা কমিটির এক সদস্য টাকার হিসাব চাইলে তিনি মানহানি মামালা করার হুমকী দেন।
স্লিপ কমিটির সভাপতি মকছেদ আলী নিজেই এই টাকার খবর জানেন না বলে অভিযোগ করেন।

তারা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ মহেশপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে জমা দিয়েছেন।

তথ্য নিয়ে জানা যায়, শোকজ নোটিশ পাওয়ার পর স্কুলের প্রধান শিক্ষকগণ যে জবাব দিচ্ছেন তার সঙ্গে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরী করে সংযুক্ত করছেন। ফলে ঐ টাকায় তারা কি কাজ করেছেন তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে না।
কোন জবাবদিহিতা না থাকায় প্রতি বছরই স্লিপ প্রকল্পের লাখ লাখ টাকা নয় ছয় করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঝিনাইদহ জেলা প্রথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোঃ আক্তারুজ্জামান বলেন, আগে তো জবাবদিহিতা ছিল না। এখন হিসাব নেওয়া হচ্ছে। এটা একটা নজীর বলা যায়।

তিনি আরও বলেন, কোন প্রধান শিক্ষক বা কমিটি প্রধান এই স্লিপের টাকার দালিলিক প্রমান দিতে ব্যর্থ হলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করে ডিডি খুলনাকে চিঠি দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। বর্তমানে কোন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা স্কুল সভাপতির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার সুযোগ রয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর