,

ঐক্যফ্রন্টে রেজা কিবরিয়া!, কে হচ্ছেন মহাজোটের প্রার্থী?

ঐক্যফ্রন্টে রেজা কিবরিয়া!, কে হচ্ছেন মহাজোটের প্রার্থী?

মতিউর রহমান মুন্না :: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তাদের প্রচার প্রচারণা জোরেসুরে চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে অর্থনীতিবিদ রেজা কিবরিয়া ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ক্রয় এবং জমা দেয়ার খবরে পাল্টে যাচ্ছে ভোটের সব হিসাব-নিকাশ। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে আলোচনার শীর্ষে চলে আসেন তিনি। হবিগঞ্জ জেলার সবার মুখে মুখে এখন তার নাম। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে হাটবাজারেও একই আলোচনা রেজা কিবরিয়া। অনেকেই মনে করছেন, তিনি ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন এটা প্রাথমিকভাবে প্রায় অনেকটাই নিশ্চিত। তবে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক এমপি যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলহাজ শেখ সুজাত মিয়াও ধানের শীষ প্রতীক পেতে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এ আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোটের প্রার্থী কে হচ্ছেন, এই প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। মহাজোটের প্রার্থী নিয়ে এ আসন ভাগাভাগি জটিল সমীকরণে আটকে আছে। মহাজোটের অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন, আওয়ামীলীগ থেকে: সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজীর তনয় জেলা আওয়ামীলীগ নেতা দেওয়ান শাহ নেওয়াজ ফরিদ গাজী, হবিগঞ্জ-সিলেট সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া ও জাতীয় পার্টি থেকে: কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমান সংসদ সদস্য যুক্তরাজ্য প্রবাসী এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জেলা সভাপতি আলহাজ আতিকুর রহমান আতিক। তারা মহাজোটের একক প্রার্থী হতে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচেষ্টা। আসন ভাগাভাগির সমীকরণে এসব প্রার্থীর মধ্যে কে হবেন মহাজোটের প্রার্থী এমন সরব জল্পনা-কল্পনা এখন নবীগঞ্জ-বাহুবলের সর্বত্র। মহাজোটের মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি প্রার্থীরা কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। মহাজোটের মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, যদি ঐক্যফ্রন্টে প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ নিয়ে ড. রেজা কিবরিয়া নির্বাচন করেন তার বিপরীতে মহাজোটের হেভিওয়েট প্রার্থী ছাড়া প্রতিদ্ব›িদ্বতা করা অনেকটা কষ্টকর হবে। তাই হয়তো অঙ্ক মিলিয়ে প্রার্থী চূড়ান্ত করার দাবী তৃণমূল নেতাকর্মীর। রেজা কিবরিয়া ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী আলোচনায় আসায় অনেকেই মন্তব্য করেছেন কপাল পুড়ছে সাবেক এমপি বিএনপি নেতা শেখ সুজাত মিয়ার। কারণ তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে এলাকায় জনসংযোগ করে মাঠ চষে বেড়াচ্ছিলেন।
তথ্যানুসন্ধান বলছে, এ আসনে ১৯৭০ সনে স্বতন্ত্র, ১৯৭৩ সনে আওয়ামীলীগ, ১৯৭৯ সনে জাসদ, ১৯৮৬ সনে আওয়ামীলীগ, ১৯৮৮ সনে জাসদ, ১৯৯১ সনে জাতীয় পার্টি, ১৯৯৬ সনের বিতর্কিত ১৫ ফেব্রæয়ারীর নির্বাচনে বিএনপি, ১৯৯৬ সনের ২৩ জুনে আওয়ামীলীগ, ২০০১ সনে আওয়ামীলীগ, ২০০৮ সনেও আওয়ামীলীগ নির্বাচিত হয়। বিগত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য দেওয়ান ফরিদ গাজীর মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী শেখ সুজাত মিয়া। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনের স্বার্থে এ আসন আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিয়েছিল জাতীয় পার্টিকে। বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় তখন নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক যুক্তরাজ্য প্রবাসী এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯ শ ৪৫ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮০ হাজার ৮ শ ২৬ জন। মহিলা ভোটার সংখ্যা হলো ১ লাখ ৮৪ হাজার ১ শ ১৯ জন।
এ ছাড়াও এ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পত্র ক্রয় করেছেন, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডাঃ মুশফিক হুসেন চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী, সাবেক কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা আব্দুল মুকিত চৌধুরী। বিএনপি থেকে মনোনয়ন কিনেছেন যুক্তরাস্ট্র বিএনপির সভাপতি শাহ মোজাম্মেল নান্টু, প্রবাসী কমিউনিটি লিডার শেখ মহিউদ্দিন জাহেদ, জেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট খালিকুজ্জামান চৌধুরীর সহ-ধর্মীনি অ্যাডভোকেট রুখসানা জামান চৌধুরী।


     এই বিভাগের আরো খবর