,

হবিগঞ্জে পালিয়ে বিয়ে করেও ঘর বাধা হলনা নব-মুসলিম কলেজ ছাত্রীর

জুয়েল চৌধুরী ॥ হবিগঞ্জ শহরে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান এক শিকের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ঘর বাধতে পারলনা নব-মুসলিম কলেজ ছাত্রী। পুলিশের হাতে আটক হয়ে কথিত প্রেমিকের ঠিকানা হলো শ্রীঘরে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি নিয়ে হবিগঞ্জ ও সিলেটে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়েছে। সূত্র জানায়, মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর চারাপাড়া গ্রামের সজিব কুমার দেবের কন্যা হবিগঞ্জ সরকারী বৃন্দাবন কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্রী লাবন্য দেব (২০) শহরের রাজনগর কবরস্থান রোড আশরাফ উদ্দিনের ম্যাচে থেকে লেখাপড়া করে আসছে। সম্প্রতি রং নাম্বারে পরিচয় হয় সিলেট শহরের কাজীটুলা এলাকার মনিরুজ্জামানের পুত্র একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক ও নবাগত মডেল তানজিন আহমেদ ফাহিম (২২) এর। এক পর্যায়ে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিভিন্ন সময় প্রেমিক যুগল বাণিজ্য মেলাসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। তাদের প্রেম এক পর্যায়ে গভীর থেকে আরও গভীর হয়ে যায়। বিষয়টি জানতে পারে লাবন্যের পরিবার। কিন্তু ভিন্ন ধর্ম হওয়ায় তারা এ সম্পর্কটি মেনে না নিয়ে ফাহিমের সাথে লাবন্যকে মেলামেশা করতে বারণ করা হয়। কিন্তু প্রেম বাধা বিঘœ পেরিয়ে তাদের নিষেধ উপেক্ষা করে সম্পর্ক চালিয়ে যায়। গত ১০ মে লাবন্য হবিগঞ্জ শহরের তার ম্যাচ থেকে কাপড়চোপড় নিয়ে ফাহিমের হাত ধরে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। সিলেট কোর্টে গিয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে লাবন্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে লাবন্য দেব থেকে হয়ে যায় সিদ্দিকা আক্তার মৌ। ওই দিনই তারা এফিডেভিটের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং সিলেটের একটি আবাসিক হোটেলে তাদের ফুলশয্যার আয়োজন করা হয়। এদিকে এ খবর লাবন্য পরিবারের কাছে পৌছলে গত ১২ এপ্রিল তার বড় ভাই খোকন চন্দ্র দেব বাদী হয়ে সদর থানায় ফাহিম সহ আরও ৩ জনকে আসামী করে একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে সদর থানার নবাগত এসআই অভিজিত ভৌমিক অভিযান চালিয়ে ১২ এপ্রিল রাত ১০টায় ফুলশয্যা ঘর প্রেমিক প্রেমিক-যোগলকে আটক করে সদর থানায় নিয়ে আসেন। কিন্তু তারা পুলিশকে বিয়ের কোন প্রমান দেখাতে পারেনি। গতকাল শনিবার সকালে দুই পরিবারের মধ্যে সদর থানায় বাক-বিতন্ডা হয়। পরে সমাধান না হওয়ায় মামলাটি রুজু করে লাবন্য দেবের ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে লাবন্য ও ফাহিমকে হবিগঞ্জ কোর্টে প্রেরণ করা হয়। পরে লাবন্য ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়ে তার মায়ের জিম্মায় জামিনে যায়। অন্যদিকে কথিত প্রেমিক ফাহিমকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। ফাহিম জানায়, সে তাকে বিয়ে করেছে এবং তাদের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। সে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক এবং বিভিন্ন গানে মডেলিং করে থাকে। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কোঠালীপাড়া থানার মাইজগাও গ্রামে। এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মুহাম্মদ সহিদুর রহমান জানান, মামলা রুজু করে তাদেরকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। কোর্ট এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিবেন।


     এই বিভাগের আরো খবর