,

নবীগঞ্জে ২য় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ॥ বিচার দাবিতে সহপাঠীদের মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জে এক শিশু ধর্ষণের বিচার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে তার সহপাঠী শিশুরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে নবীগঞ্জ উপজেলার শংকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখস্থ রাস্তায় বিদ্যালয় ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে তারা জানায়, গত ২০ মার্চ ওই বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্রী নবীগঞ্জ উপজেলার আলীপুর গ্রামের জনৈক এক কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে একই গ্রামের এক যুবক। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ২৬ মার্চ ধর্ষিতা শিশুর মা বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এলাকাবাসী ও সহপাঠীরা জানায়, শংকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির মেধাবী ওই ছাত্রীর পিতা একজন কৃষক। তিনি কৃষিকাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তার পিতা বাড়িতে না থাকলে ওই ছাত্রীই নিকটবর্তী হাওরে চড়ানো গরু-বাছুর বাড়িতে নিয়ে আসেন। গত ২০ মার্চ বিকেলে পিতা বাড়িতে না থাকায় মা তাকে গরু আনতে বাড়ির পশ্চিমে মাঝের কান্দি হাওরে ওই ছাত্রীকে পাঠান। সেখানে তাকে একা পেয়ে জাকারিয়া নামের এক জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। জনৈক ব্যক্তি দূর থেকে ঘটনা দেখে এগিয়ে এলে ধর্ষক পালিয়ে যায়। সাথে সাথে ওই ব্যাক্তি ছাত্রীকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে এলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। শিশুর মা বলেন, পৃথিবীকে চেনার আগেই আমার মেয়ের উপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গেছে, সে তান্ডব কাটিয়ে আমার মেয়ে জীবনে কোন দিন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে কি না জানি না। তবে এখন আমার মেয়ে স্কুলে আসা তো দূরের কথা ঘর থেকে বের হতেও চায় না। লোকজন দেখলেই সে ঘরের কোণে লোকিয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ে এক ঘরেও থাকতে চায় না। সর্বদা সে ভয় পায়। ধর্ষিতার মা অভিযোগ করে বলেন, আসামী প মামলা তোলে নেয়ার জন্য নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমাকেসহ আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে তোলে নেবে বলেও প্রচার করছে। তিনি আরো বলেন, আমার মেয়েকে যে লম্পট এমন পরিস্থিতিতে ফেলেছে আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। মানববন্ধনে অংশগ্রহকারীরাও মানববন্ধনে ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে শ্লোগান দেয়। শংকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শ্যামল দাশ মল্লিক বলেন, আমাদের আশপাশে অনেক অপকর্মই ঘটে কিন্তু এ ছাত্রী সাথে ঘটনাটি শুনার সাথে সাথে শরীরের লোমগুলো দাঁড়িয়ে যায়। আমরা ঘৃণ্য এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। প্রধান শিক্ষক মনোহর রায় বলেন, ২য় শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী ধর্ষণের স্বীকার হয়ে আজ বিদ্যালয় ছাড়া। একাধিক বার তাকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসার জন্য পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করে তাকে বিদ্যালয়মূখী করা যায়নি। আমরা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রীরা ধর্ষককে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম দস্তগীর বলেন, মামলাটি তদন্ত করছেন গোপলারবাজার তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর কাউসার আলম। আসামী গ্রেফতারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।


     এই বিভাগের আরো খবর