,

২৮ বছর পর কোমা থেকে জেগে ছেলেকে ডাকলেন মা

সময় ডেস্ক ॥ অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও গাড়িতে করে ছেলেকে স্কুল নিয়ে যাচ্ছিলেন ৩২ বছরের মুনিরা আবদুল্লাহ। মায়ের কোলে বসে ছিল ৪ বছরের ছেলে ওমর ওবায়ের। হঠাৎ করেই বাসের সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয় মুনিরাকে বহনকারী গাড়িটির। মুনিরা শক্ত করে ধরে থাকায় ওই ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে যান শিশু ওমর। কিন্তু মুনিরা মারাত্মক আঘাত পান মাথা। ঘটনাটি ঘটে সংযুক্ত আরবের আমিরশাহীতে ১৯৯১ সালে। দুর্ঘটনার পর মুনিরাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার জ্ঞান আর ফিরে আসেনি। কোমায় থাকা মনিরার চিকিৎসা হয় দেশ-বিদেশের বহু হাসপাতালে। কিছু দিন আগে জার্মান এক হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি জ্ঞান ফিরে পান ২৮ বছর পরে। মনিরার ছেলে ওমর গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষৎকারে বলেন, ‘আমি কখনও আশা ছাড়িনি। আমার সবসময়ই মনে হয়েছে মা একদিন জেগে উঠবেন’। ওমর আরও বলেন, ‘সবাইকে আমি বলতে চাই যাদের প্রিয়জন এভাবে কোমায় আছেন তাদের মৃত ভেবে আশা ছেড়ে দেবেন না’। দুর্ঘটনার সময় ওমরের বয়স ৪ বছর থাকলেও আজও সেইদিন ভুলতে পারেননি তিনি। ওমর জানান, তার মা তাকে নিয়ে গাড়ির পেছনের সিটে বসেছিলেন। যখনই তার মা দুর্ঘটনার ইঙ্গিত পেয়েছিলেন তখনই তাকে বাঁচাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছিলেন। জানা গেছে, গাড়ি দুর্ঘটনায় মুনিরা গুরুতর আহত হওয়ার পর হাসপাতালে নিয়ে যেতে কিছুটা দেরি হয়েছিল। প্রথমে দেশে তারপর লন্ডনে তার চিকিৎসা করা হয়। কয়েক বছর পর সংযুক্ত আরব আমিরাতে আবারও ফিরিয়ে আনা হয় তাকে। সেই সঙ্গে চলে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি।২০১৭ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের পক্ষ থেকে মুনিরার চিকিৎসা খরচ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় । এরপরই মুনিরার পরিবার তাকে জার্মানিতে নিয়ে যায়। সেখানেই তার চিকিৎসা চলে। এভাবে চলতে চলতে প্রায় ১ বছর পর অনেকটাই চেতনা ফিরে পেতে শুরু করেন মুনিরা। ধীরে ধীরে আওয়াজ ফিরে পেতে শুরু করেন তিনি। এমনকি একদিন ছেলেকে নাম ধরে ডেকেও ওঠেন। সেই সময়ের কথা স্মরণ করে ওমর বলেন, ‘হাসপাতালে থাকা অবস্থায় একদিন শুনতে পেলাম কেউ একজন আমার নাম ধরে ডাকছে। পরে দেখলাম মা আমার নাম ধরে ডাকছেন’। ওমর আরও বলেন, ‘জ্ঞান ফেরার পর মা প্রথম আমার নাম ধরেই ডেকেছেন। মায়ের ডাক শুনে আমি আনন্দে উড়ছিলাম। কত বছর ধরে যে আমি এই মুহূর্তটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম’। জানা গেছে, বর্তমানে অনেকটাই সচেতন মুনিরা আবদুল্লাহ। কথা বলতে পারেন। আপাতত আবুধাবীতে পরিবারের সঙ্গে সুস্থ ভাবেই রয়েছেন। সেখানে নিয়মিত চিকিৎসা চলছে তার। সূত্র : বিবিসি, টাইমস অব ইন্ডিয়া


     এই বিভাগের আরো খবর