,

টমটম ভাড়া নিয়ে চালককে হত্যা: হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় প্রধান আসামীর জবানবন্দি

জুয়েল চৌধুরী :: হবিগঞ্জ শহরে চাঞ্চল্যকর টমটম চালক হত্যা মামলার আটক প্রধান আসামী বিলাস মিয়া (২৫) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপরদিকে টমটম শ্রমিকরা ঘাতকদের শাস্তিতও দাবিতে হবিগঞ্জের প্রধান সড়ক কালীবাড়ি এলাকা অবরোধ করে রাখে। অন্যদিকে আটক আরও ২ জনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে লোকড়াগ্রামের বিলাস মিয়াকে হবিগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে প্রেরণ করলে ২ ঘন্টাব্যাপী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাত ১০টায় কোর্টস্টেশন থেকে পাইকপাড়া যাওয়ার জন্য আনেয়ারপুর গ্রামের মাহতাব আলীর পুত্র টমটম চালক সাবাজ মিয়া (২৫) কে ভাড়া নেয় ঘাতক বিলাস সহ আরও ২ যুবক। পথিমধ্যে তাকে মারপিট করে টমটমটি ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সাবাজ তাদেরকে চিনে ফেলে। এ কারণে ঘাতকরা তাকে গামছা দিয়ে পেছিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং লাশ গুম করার জন্য আরেকজনকে খবর দেয়। ওই ঘাতক মোটর সাইকেল দিয়ে এসে ধুলিয়াখাল বাইপাস এলাকায় একটি ঝোপের মধ্যে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ওই এলাকায় টহলরত পুলিশ বিষয়টি আচ করতে পারে। এ সময় ঘাতকরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে মোটরসাইকেল সহ বিলাসকে আটক করে এবং তার কথা মতো আরও ২ জনকে আটক করা হয়। পরে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিলাস এ হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। এ ঘটনায় সাবাজের পিতা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। কোর্ট সূত্রে জানা যায়, বিলাস খুব সন্দরভাবে লোমহর্ষক হত্যার ঘটনা বর্ণনা দেয় এবং তাদেরকে চিনে ফেলার কারণেই সাবাজকে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু পুলিশ তাদের চেষ্টা ব্যর্থ কওে দিল। এদিকে গতকাল দুপুরে হবিগঞ্জের প্রধান সড়ক কালীবাড়ি এলাকায় টমটম চালকরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে ঘাতকদের শাস্তিতও দাবিতে থানার সামনে অবরোধ করে রাখে। দুই ঘন্টা পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলামের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। নিহত সাবাজের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সাবাজই তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। হবিগঞ্জ সরকারী বৃন্দাবন কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে কোন চাকুরী না পেয়ে অভাবের তাড়নায় টমটম চালিয়ে পরিবারের হাল ধরে। বিবাহ যোগ্য তিন বোনকে নিজ খরচে বিয়ে দেয়। কিন্তু সে পরিবারের কথা চিন্তা করে বিয়ে করেনি। এমন একটি ছেলেকে হত্যা করায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকাবাসী ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিতর দাবি করছেন। তার লাশ দেখার জন্য থানায় শত শত লোক ভিড় জমায়। গতকাল সন্ধ্যায় সাবাজের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের জিম্মায় লাশ হস্ততান্তও করা হয়। এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মুহাম্মদ সহিদুর রহমান জানান, প্রধান আসামী আদালতে হত্যার ঘটনা স্বীকার করছে। বাকীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।


     এই বিভাগের আরো খবর