,

হবিগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে সেবার চেয়ে ভোগান্তি বেশি

জুয়েল চৌধুরী :: ভোগান্তির অপর নাম হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। অফিসটিতে সেবার চেয়ে ভোগান্তিই বেশি বলে অভিযোগ করেন সেবা নিতে আসা ভোক্তভ‚গীরা। আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে রয়েছে ঘুষ, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ। ফলে ভোগান্তির অপর নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। বর্তমানে অফিসটিতে দালাল ও অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারীদের দখলে। গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন, এখানে দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়া ভেতরে প্রবেশ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। আর ভেতরে ঢুুকলেও নানা অজুহাত শুনতে হয়। পুলিশ ভেরিফিকেশন, জন্মনিবন্ধন সনদ ও সত্যায়িত করার সিল সবই এখন আছে দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে। দরকার শুধু টাকা। পকেট টাকা ঢুকিয়ে দিলেই দ্রæত হয়ে যায় পাসপোর্ট। আর না দিলে ঘুরতে হয় মাসের পর মাস। দালাল ছাড়া সাধারণ গ্রাহকরা নিয়মানুসারে আবেদন করে মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও পাচ্ছেন না তাদের কাক্ষিত পাসপোর্ট সেবা। হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের প্রতিদিনকার খুবই পরিচিত চিত্র এটি। এদিকে, এনালগ পদ্ধতি থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তরিত হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে নিত্যনতুন স্টাইলে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ গ্রাহকদের। যেসব গ্রাহক নিজে আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দিতে যান তাদের ক্ষেত্রে শুরু হয় অজুহাতের নানা ঝুলি। হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মচারীরা যাচাই-বাছাইয়ের নামে তাদের পূরণকৃত ফরম সঠিক হলেও নানা ছুতোয় ভুল ধরে ফিরিয়ে দেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। অথচ একই ফরম কিছুক্ষণ পর কতিপয় দালালের মাধ্যমে পাঠানো হলে তাতে কোনো ভুল থাকে না বা ভুল ধরে না কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে অভিযোগ করেন একাধিক সেবাগ্রহীতা।
সূত্র জানায়, দালালদের মাধ্যমে জমাকৃত প্রতিটি পাসপোর্টের গায়ে বিভিন্ন সংকেত দেওয়া থাকে যা তারা সহজেই বুঝে নিচ্ছেন এটি কার জমা। জমার পর অফিস শেষে কোনো এক সময়ে পৌঁছে দেওয়া হয় অফিস খরচ নামে কর্মকর্তাদের ভাগের টাকা। গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্করা জাতীয় পরিচয়পত্র আর অপ্রাপ্তবয়স্করা জন্মনিবন্ধন দেবেন। এ রকম নানা অজুহাতে সেবা নিতে আসা লোকজনকে হয়রানি করা হচ্ছে দিনের পর দিন। আর দালালদের একটি চক্র ওই অফিসের সামনে এবং আশপাশে রীতিমতো স্থায়ী ঘাঁটি বানিয়ে বসেছে। একটি বিশ্বস্থ সূত্র জানায়, অতিরিক্ত টাকার মধ্যে পাসপোর্ট অফিস নিচ্ছে ১ হাজার টাকা, পুলিশ কিয়ারেন্সের জন্য তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে ১৫শ টাকা নেয়া হচ্ছে। ওই তিনের সমন্বয়ে পাসপোর্ট অফিসে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী কয়েকটি সিন্ডিকেট। সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, পুরাতন পাসপোর্ট অফিস স্থানান্তর করে হবিগঞ্জ সুলিশ সুপার কার্যালয়ের কম্পাউন্ডারের পাশে নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন অনিয়ম ও সাধারণ গ্রাহকদের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে অফিসটি স্থানান্তর করলেও খোদ পুলিশের চোখের সামনেই বাড়ছে গ্রাহকদের ভোগান্তি ও দালালদের উৎপাত। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একের পর এক অনিয়মের শিকার হলেও এসবের প্রতিবাদ করতে সাহস করতে পারছে না সাধারণ গ্রাহকরা। যদি কেউ ভুল করে প্রতিবাদ করেন, তবে তাকে নানা ধরনের হেনস্থা হতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক জানান, অফিসের ভেতরে কোন দালাল নেই। যদি অফিসের বাইরে থাকে তাহলে আমাদের কোন কিছু করার নেই। আর এখন মানুষ ১৫-২০ দিনের মধ্যেই পাসপোর্ট পেয়ে যায়।


     এই বিভাগের আরো খবর