,

চুনারুঘাটে ৫শতক জমির জন্য ভাতিজাকে অপহরণ করে হত্যা

জুয়েল চৌধুরী ॥ চুনারুঘাটে ভাড়াটে কিলার দ্বারা দুলা মিয়াকে অপহরণ করে খুন করিয়েছে বিজিবি সদস্য সাদেক মিয়া। হত্যাকান্ডের প্রায় ১ মাস পর ৬ আসামীগণকে আটক করে রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয় পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে এক প্রেস কনফারেন্সে এই তথ্য নিশ্চিত করেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা। এদিকে, সাংবাদিক সম্মেলনের পরপরই হত্যাকান্ডের মূল নায়ক ও নিহতের চাচা বিজিবি সদস্য সাদেক মিয়াকে গ্রেফতার করেছে চুনারুঘাট থানা পুলিশ। সে ৫১ বিজিবি‘র সদস্য। পুলিশ সুপার জানান, সাদেকের পরিকল্পনা অনুযায়ী চুনারুঘাট উপজেলার পাট্টাশরীফ গ্রামের মৃত মকসুদ আলীর ছেলে দুলা মিয়া (৪০)কে অপহরণ করে খুনীরা। পরে ঢাকার হাজারীবাগে সিকদার মেডিকেলের পেছনে গলায় দঁড়ি পেছিয়ে হত্যার পর মরদেহে বস্তাবন্দি করে ফেলে দেয়া হয় বুড়িগঙ্গা নদীতে। সেখান থেকে ১৮ জুন মরদেহ উদ্ধার করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে জুরাইন কবরস্থানে দাফন করে হাজারীবাগ থানা পুলিশ। সেখানে দায়ের করা হয় একটি হত্যা মামলাও। এদিকে গত ৩০ জুন ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে বিজিবি সদস্য সাদেকের ভাগ্নে আফরোজ মিয়া (২৭)কে শ্রীমঙ্গল থেকে গ্রেফতার করা হয়। স্থানীয় এক যুবকের মোবাইল ফোনে ধারণ করা ছবির সূত্র ধরে গত ১৪ জুলাই ঢাকা থেকে অপহরণ কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস জব্দ করে পুলিশ। এরপর আফরোজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভোলা জেলার লালমোহন থানার মৃত আজিজ মিয়ার ছেলে মাইক্রোবাস চালক ইউসুফ সরদার (৩২) ও কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার টামনিকোনা পাড়ার লাল মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া (৩৫) ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। ইতোমধ্যে ইউসুফ ও মামুন হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। এক পর্যায়ে গত সোমবার চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের শেখেন্দর আলীর ছেলে জসিম উদ্দিন (৩১) ও বরিশাল জেলার গৌরনদী এলাকার তাজেম সরদারের ছেলে শামীম সরদারকে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন। আসামীদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, দুলা মিয়ার ৫ শতাংশ জমি দখলের পায়াতারায় লিপ্ত ছিল তার চাচা বিজিবি সদস্য সাদেক। এ নিয়ে অনেক মামলা মোকদ্দমা হলেও সেখানে কোন প্রতিকার পায়নি সাদেক। পরে এক পর্যায়ে উল্লেখিত আসামীদেরকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে দুলা মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করে সাদেক। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ জুন শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রীজ এলাকা থেকে সাদা পোশাকদারী এক দল লোক মাইক্রোবাসে তুলে অপহরন করে নিয়ে যায়। অপহরণ কাজে সাদেকের ভাগ্নে আফরোজ সার্বিক সহযোগিতা করে। এদিকে গতকাল বুধবার বিকেলে ঢাকার জুরাইন কবরস্থান থেকে ম্যাজিস্ট্্েরট এর উপস্থিতিতে দুলা মিয়ার মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। রাতেই লাশ চুনারুঘাট আসার কথা রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুলার লাশ তার গ্রামের বাড়ীতে দাফন করা হবে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাদেক বিজিবির কর্পোরাল হিসেবে কর্মরত ছিল।


     এই বিভাগের আরো খবর